কলকাতা: মুখোমুখি ফুটবলের ‘মহামানব’ এবং বলিউডের ‘বাদশা’। শহর কলকাতার বুকে ইতিহাস চাক্ষুষ কারর অপেক্ষায় ছিলেন সকলেই। লিওনেল মেসির সঙ্গে দেখাও হল শাহরুখ খানের। কিন্তু মেসিকে একঝলক দেখতে, তাঁকে ছুঁয়ে দেখতে চারিদিকে যখন উপচে পড়া ভিড়, শাহরুখ সাবধানী দূরত্বেই রইলেন। সৌজন্য আলাপ ও করমর্দন সেরে সরে এলেন নিজে। তবে মেসির পরম ভক্ত, ছোট ছেলে আব্রামকে এগিয়ে দিলেন। হাসিমুখে আব্রামের সঙ্গে ছবি তুললেন মেসি। (Lionel Messi-Shah Rukh Khan Meeting)
গভীর রাতে কলকাতায় পদার্পণ করেন মেসি। ভোররাত ২টো বেজে ৩০ মিনিটে নামেন বিমানবন্দরে। সেখান থেকে সটান হায়াত রিজেন্সি হোটেলে গিয়ে ওঠেন। তার কিছু ক্ষণ আগেই শহরে পৌঁছে গিয়েছিলেন শাহরুখ। সঙ্গে ছিলেন ম্যানেজার পূজা দাদলানি এবং ছোট ছেলে আব্রাম। শুধুমাত্র মেসির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্যই কলকাতা এসেছিলেন শাহরুখ। তাই দুই তারকার সাক্ষাতের দিকে নজর ছিল সকলের। তবে শেষ পর্যন্ত সাক্ষাৎ হলেও, মেসিই মধ্যমণি হয়ে রইলেন। (Lionel Messi in Kolkata)
হোটেল থেকে মেসি ও শাহরুখের সাক্ষাতের যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, ভার্চুয়ালি মূর্তি উদ্বোধনের পর মেসির অটোগ্রাফ নিতে, তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে। সেই সময়ই উপস্থিত হন শাহরুখ। আব্রামকে নিয়ে এগোতে থাকেন পূজা। শাহরুখ পিছনে থাকেন। বাকিদের অটোগ্রাফ, ছবি তোলা মিটে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন শাহরুখ। এক পা এক পা করে এগোতে থাকেন। প্রথমে লুইস সুয়ারেজ় এবং রদ্রিগো দে পলের সঙ্গে প্রথমে করমর্দন করেন তিনি। মেসির কাছে পৌঁছতে অপেক্ষা করেন।
সেই সময় রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু মেসির সঙ্গে শাহরুখের আলাপ করিয়ে দেন। হাসিমুখে পরস্পরকে অভিবাদন জানান মেসি ও শাহরুখ। করমর্দন করেন। এর পর ছেলে আব্রামকে এগিয়ে দেন শাহরুখ। কাঁধে হাত রেখে আব্রামের সঙ্গে ছবি তোলেন মেসি। মেসি ও শাহরুখকে এক ফ্রেমেও বন্দি করা হয়। তবে মেসির সঙ্গে আলাদা ভাবে আলাপচারিতার পরিবর্তে, ছেলেকেই এগিয়ে দেন শাহরুখ। এদিন যুবভারতীতেও দেখা যায়নি শাহরুখকে।
ছোট ছেলে আব্রাম যে মেসির ভক্ত, সেকথা বার বার তুলে ধরেন শাহরুখ। মেসির জার্সি গায়েও এর আগে দেখা গিয়েছে আব্রামকে। শুধু তাই নয়, শাহরুখ নিজেও মেসির অনুরাগী। ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের সময় কাকে সমর্থন করছেন, জানতে চাওয়া হয়েছিল। শাহরুখের জবাব ছিল, ‘আরে, মন তো মেসিকেই চায়, তাই না?? তবে এমবাপেও দেখতে দারুণ লাগে’।
রাজ্যের মন্ত্রী এবং শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের প্রেসিডেন্ট সুজিত জানিয়েছেন, ৭০ ফুটের মূর্তিটি দেখে খুশি মেসি এবং তাঁর টিম। লাগাতার মেসির টিমের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন তাঁরা। এর আগে, ২০১১ সালেও ভারত সফরে এসেছিলেন মেসি। সেই সময়ও কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলেছিলেন তিনি। বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচে ১-০ গোলে আর্জেন্টিনা পরাজিত করে ভেনিজুয়ালেকে। ১৪ বছর পর ফের মেসির আগমনে মুখর হয়ে ওঠে তিলোত্তমা। তবে চড়া দামে টিকিট কেটেও যুবভারতীতে কেন কাছ থেকে মেসিকে দেখতে পেলেন না, মাঠে গিয়েও কেন জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখতে হল মেসিকে, সেই নিয়ে উষ্মা প্রকাশও করেন অনেকে। ভাঙচুরও চলে স্টেডিয়ামে।