কলকাতা: দুই প্রধানে না খেলেও হিরো আইএসএলের দরজা খুলে ফেলাটা বাংলার যে কোনও ফুটবলারের কাছেই কঠিনতম হার্ডল। সেই হার্ডল পেরিয়ে এখন জামশেদপুর এফসি-র অন্যতম নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় ঋত্বিক দাস। গত মরসুমে তাঁর দেওয়া গোলেই এটিকে মোহনবাগানের (ATk Mohun Bagan) লিগ শিল্ড জেতার স্বপ্ন ভেঙে যায়। আসানসোলে ছোটবেলা থেকে ফুটবলজীবন শুরু করার পরে এই জায়গায় আসতে ঋত্বিককে যে কঠিন লড়াই করতে হয়েছে, সেই কাহিনী এ দেশের যে কোনও উঠতি ফুটবলারের কাছেই অনুসরণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে।


তাঁর এই পারফরম্যান্স দেখে ভারতীয় কোচ ইগর স্টিমাচও ঋত্বিককে ভারতীয় শিবিরে ডেকে নেন এবং জাতীয় দলের সঙ্গে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে নিয়ে যান কাতারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় দেশে ফিরে আসতে হয় ঋত্বিককে। তবে স্টিমাচের নজর তাঁর ওপরে রয়েছে। আসন্ন মরসুমে ভাল খেললে ফের ডাক পেতে পারেন এই প্রতিভাবান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। আইএসএল মিডিয়াকে কী বললেন ঋত্বিক?


ওয়ার্কলোড বাড়ছে ফুটবলারদের?


এটা আমাদের, অর্থাৎ ফুটবলারদের জন্য খুব ভাল খবর। একটা লম্বা মরসুম পাওয়া সবসময়ই ভাল, যেমন বিদেশে হয়। সারা বছর নিজেদের ফিট রাখার তাগিদ থাকে। এত দিন ধরে প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকা মানে ছন্দেও থাকা, যেটা খুব ভাল প্রভাব ফেলবে এবং ভারতীয় ফুটবলে ও জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ওপরও এর যথেষ্ট ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বছরের বেশির ভাগ সময়ই যদি আমরা ফুটবলের মধ্যে থাকতে পারি, তা হলে প্রত্যেক ফুটবলারই ব্যক্তিগত ভাবে উন্নতি করতে পারবে। মরশুম বড় হওয়া মানে আমাদের ফুটবল সংস্কৃতিতেও উন্নতি আসা, যেটা এখন খুবই দরকার। পরিশ্রম, ওয়ার্কলোড যে রকম বাড়বে, সে রকম ম্যাচের মাঝের সময়ও নিশ্চয়ই বাড়বে। তাতে রিকভারির যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে। ভারতীয় দলের ফুটবলাররাও এর ফলে যথেষ্ট উপকৃত হবে।  


ভারতীয় দল থেকে ডাক পাওয়ার আশায় ছিলেডাক পাওয়ার পর ঠিক কী রকম লেগেছিল?


সত্যি বলতে, আমার কাছে এটা খুব প্রত্যাশিত ছিল না। আইএসএলে ভাল পারফরম্যান্স করেছিলাম ঠিকই। সে জন্য মনের মধ্যে একটা আশা ছিল যে হয়তো এ বার ভারতীয় দলের কোচ আমাকে শিবিরে ডাকবেন। কিন্তু এত তাড়াতাড়িই যে সেটা আসবে ভাবিনি। তাই এটা আমার কাছে একটা সারপ্রাইজের মতোই ছিল বলতে পারেন। যখন শুনলাম যে আমাকে ভারতীয় দলের শিবিরে যোগ দিতে বলা হয়েছে, যে দল এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে খেলবে, তখন প্রথমে একটু অবাকই লেগেছিল। কারণটা তো বললামই। পরে যখন বুঝতে পারি, সত্যিই এমনটা হয়েছে, তখন নিজেকে প্রস্তুত করা শুরু করি। শারীরিক ও মানসিক সব দিক থেকেই প্রস্তুতি শুরু করি।     


চিকেনপক্সের জন্য আপনাকে ভারতীয় শিবির ছেড়ে চলে আসতে হল যখন, সেই সময়ে নিশ্চয়ই খুব হতাশ হয়েছিলেন


খুবই হতাশ হয়েছিলাম। কারণ, অনেক আশা নিয়ে দলের সঙ্গে গিয়েছিলাম। কিন্তু যখন বুঝতে পারি যে, আমাকে দু-তিন সপ্তাহ ঘরবন্দী থাকতে হবে, দলের সঙ্গে প্র্যাকটিস করতে পারব না, ম্যাচ খেলা তো দূরের কথা, তখন তো খারাপ লেগেছিলই। তাই ফিরে আসারই সিদ্ধান্ত নিই। এখন আমার লক্ষ্য, সামনে টুর্নামেন্টগুলোতে (ডুরান্ড কাপ, হিরো আইএসএল) প্রচুর পরিশ্রম করে, নিজের সেরাটা দিতে পারি এবং আবার ভারতীয় দলে ডাক পাই।


                                                                                                                                                                                 ------ তথ্য সংগ্রহ আইএসএল মিডিয়া