রংপুর: পচেস্টর্মে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে যখন ব্যাট করতে নামেন বাংলাদেশের অধিনায়ক আকবর আলি, তখন মাঠের পরিস্থিতি যথেষ্ট কঠিন ছিল। মাঠের বাইরেও পরিস্থিতি অনুকূল ছিল না ১৮ বছরের এই উঠতি ক্রিকেটারের। কয়েকদিন আগেই মৃত্যু হয় তাঁর দিদির। স্বজন হারানোর সেই মানসিক যন্ত্রণা নিয়েই ব্যাট হাতে নেমেছিলেন বাংলাদেশের বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক। গত ২২ জানুয়ারি যমজ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান আকবরের বড় দিদি খাদিজা খাতুন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।
আকবরদের চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় খাদিজা। টুর্নামেন্টে গ্রুপ সি-তে গত ১৮ জানুয়ারি ভাই আকবরের নেতৃত্বে জিম্বাবোয়েকে হারিয়ে বাংলাদেশের জয় দেখেছিলেন খাদিজা। কিন্তু ফাইনালে আকবর যখন কঠিন পরিস্থিতিতে অপরাজিত ৪৩ রানের জীবনের সেরা ইনিংস খেলে দলকে জেতালেন, তখন তিনি আর বেঁচে নেই। আদরের ভাইয়ের হাতে যে কোনও বয়স ভিত্তিক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের ট্রফি ওঠার দৃশ্য দেখা হল না খাদিজার।
প্রথমে অবশ্য আকবরকে তাঁর দিদির আকস্মিক মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। কারণ, পরিবারের সদস্যরা চাননি, কোনওভাবে মনোযোগ নষ্ট হোক আকবরের। কিন্তু এরমধ্যেও কোনভাবে সেই খবর পৌঁছে যায় আকবরের কানে। গত ২৪ জানুয়ারি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ম্যাচ বৃষ্টির জন্য ভেস্তে গিয়েছিল। এই ম্যাচের পর বাড়ির লোকেদের কাছে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, কেন তাঁকে জানানো হয়নি দিদির মৃত্যুসংবাদ।
শোকবিহ্বল আকবর মাঠে তাঁর পারফরম্যান্সে এর প্রভাব পড়তে দেননি। কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। শেষপর্যন্ত ডাকওয়ার্থ লুইস সিস্টেমে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।
ম্যাচের পর দুই দলের খেলোয়াড়দের বাকযুদ্ধ ও ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
আকবরের বাবা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আকবর ওর দিদির খুব কাছের ছিল। ভাইকে খুব ভালোবাসত ওর দিদি। আমরা প্রথমে ওকে কিছু জানাইনি। পাকিস্তান ম্যাচের পর ও ওর ভাইকে জিজ্ঞাসা করে, কেন এই খবর তাকে জানানো হয়নি। ওর সঙ্গে তখন কথা বলতে পারিনি। বুঝতে পারছিলাম না, কী বলব।