নয়াদিল্লি: ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শুরু করেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তাঁকে ভারতীয় দলে সুযোগ দেওয়ার পিছনে সৌরভের ভূমিকা ছিল। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ধোনিকে। পরবর্তীকালে সৌরভকে ছাপিয়ে গিয়ে তিনি ভারতের সফলতম অধিনায়ক হয়ে উঠেছেন।


প্রায় এক বছর জাতীয় দলের বাইরে ধোনি। তাঁকে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যাবে কি না, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভও কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তিনি ধোনির প্রশংসা করেছেন।

আজ ধোনির জন্মদিন। আগামীকাল আবার সৌরভের জন্মদিন। এ বিষয়েও ভারতের সফলতম দুই অধিনায়কের মিল রয়েছে। আজ ট্যুইটারে বিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ময়ঙ্ক অগ্রবালের সঙ্গে কথোপকথনের সময় সৌরভ বলেন, ‘সেরা খেলোয়াড়দের বেছে নিয়ে যথাসম্ভব ভাল দল গঠন করাই সব অধিনায়কের কাজ। আমার কাজও সেটাই ছিল। আমি সহজাত প্রবৃত্তি অনুযায়ী কাজ করেছি। খেলোয়াড়দের উপর আমার আস্থা ছিল। আমি জানতাম, ওদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটা পালন করবে। ভারতীয় ক্রিকেট মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো একজনকে পাওয়ায় আমি খুশি। কারণ, ও অবিশ্বাস্য ক্রিকেটার। ও শুধু সেরা ফিনিশারই না, ক্রিকেট দুনিয়ার অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।’

২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজে প্রথম সুযোগ পান ধোনি। তাঁকে ব্যাটিং অর্ডারে উপরের দিকে তুলে আনেন সৌরভ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের পঞ্চম ইনিংসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৪৮ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন ধোনি। এই ইনিংসই তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠা দেয়। তবে পরবর্তীকালে তিনি লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং শুরু করেন এবং ফিনিশার হিসেবে পরিচিত হয়ে যান।

একদিনের আন্তর্জাতিকে তিন নম্বরে ১৬টি ইনিংসে ৮২.৭৫ গড়ে ৯৯৩ রান করেন ধোনি। চার নম্বরে ৩০ ইনিংসে ৫৬.৫৮ গড়ে তাঁর রান ১,৩৫৮। পাঁচ নম্বরে ৫০.৩০ গড়ে তাঁর মোট রান ৩,১৬৯। ৬ নম্বরেই তিনি সবচেয়ে বেশি ব্যাটিং করেছেন। ১২৯ ইনিংসে তাঁর মোট রান ৪,১৬৪।

এ বিষয়ে সৌরভ বলেছেন, ‘লোয়ার অর্ডারে ধোনির ফিনিশিং নিয়ে সবাই কথা বলে। কিন্তু আমার মনে হয়, ওর ব্যাটিং অর্ডারে উপরের দিকে আসা উচিত। কারণ, ও একজন বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান। আমি যখন অধিনায়ক ছিলাম, তখন ওকে তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিলাম। বিশাখাপত্তনমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ও ১৪৮ রান করে। সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটে সেরা খেলোয়াড়দের ইচ্ছামতো বাউন্ডারি মারার দক্ষতা থাকে। একদিনের ক্রিকেটের ইতিহাসে দেখা যাবে, সেরা খেলোয়াড়রা চাপের মুখে ধারাবাহিকভাবে সীমানার বাইরে বল পাঠিয়ে দিয়েছে। ধোনি তাদেরই একজন ছিল। সেই কারণেই ওকে দলে নেওয়া হয়েছিল।’

গত বছর ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপে শেষবার ভারতের হয়ে খেলেন ধোনি। এরপর থেকে আর তিনি প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলেননি। ভবিষ্যতের বিষয়ে গত এক বছরে মুখ খোলেননি এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। ফলে তাঁর কেরিয়ার নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত।