রিও দি জেনেইরো: দামাস্কাসের যে সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতেন তার ছাদ উড়ে গিয়েছিল নাগাড়ে বম্বিংয়ে। প্রাণে বাঁচতে অশান্ত মাতৃভূমি থেকে কোনওক্রমে বেরিয়ে লেবানন, তুরস্ক হয়ে গ্রিস। আর এখন জার্মানি। তারপরেও সাঁতার ছাড়েনি য়ুসরা মর্দিনিকে। ১৮ বছরের এই সিরীয় সুইমার রিও-য় রিফিউজি অলিম্পিক অ্যাথলিটদের ১০জনের দলে অন্যতম পরিচিত মুখ। জীবন এই বয়সেই কত না পাঠ পড়িয়েছে তাঁকে!
২০জনের দলে গাদাগাদি করে নৌকায় চড়ে তুরস্ক থেকে গ্রিস পাড়ি দেন য়ুসরা ও তাঁর বোন সারা। সামনে অথৈ ভূমধ্যসাগর। নৌকার ধারণ ক্ষমতা খুব বেশি হলে ৭, লোক উঠেছে তার ৩গুণ। এ ধরনের কত শরণার্থী বোঝাই নৌকা সাম্প্রতিককালে ভূমধ্যসাগরে ডুবেছে, তার ইয়ত্তা নেই। সকলে বলেছিল, য়ুসরাও জানতেন, প্রাণ নিয়ে আর গ্রিস পৌঁছতে পারবেন না তাঁরা। উত্তাল মাঝ সমুদ্রে নৌকাডুবি হচ্ছিল তাঁদেরও। টালমাটাল নৌকায় ভয়ার্ত সব মুখের মধ্যে কোনওক্রমে বসে থাকা দামাস্কাসের সদ্য তরুণী ঠিক করেন, জীবনের সঙ্গে আরও একহাত বাজি লড়বেন তিনি। বোন সারাও তুখোড় সাঁতাড়ু। জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই বোন শক্ত করে আঁকড়ে ধরেন নৌকাকে। এক হাতে নৌকার সঙ্গে আটকানো দড়ি ধরে থাকা আর অন্য হাত ও দুই পায়ের সাহায্যে বরফ ঠান্ডা থই থই জলে ৩ ঘণ্টার সাঁতার। ২০জনের প্রাণ বাঁচিয়ে এভাবেই পৌঁছে যাওয়া গ্রিসের উপকূলে। সেখান থেকে ম্যাসিডোনিয়া, সার্বিয়া, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া হয়ে জার্মানি পৌঁছেছেন ২ বোন। এখন তিনি থাকেন বার্লিনে।
রিফিউজি টিমের হয়ে ১০০ মিটার বাটারফ্লাই ও ফ্রিস্টাইলে যোগ দিচ্ছেন য়ুসরা। জানিয়েছেন, তাঁর স্বপ্নের কথা- অলিম্পিক মেডেল, শরণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া সকল সীমান্ত ও দামাস্কাসে শান্তি। তাঁর কথায়, জীবন সম্ভবত তিনি জার্মানিতেই কাটাবেন কিন্তু বুড়ো হয়ে যাওয়ার পর ফিরতে চান ফেলে আসা সিরিয়াতে। দেশের মানুষের কাছে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে চান য়ুসরা মর্দিনি।
শরণার্থী বোঝাই ডুবন্ত নৌকাকে ধরে রেখেছিলেন ৩ ঘণ্টা: রিওয় জল তোলপাড় করছেন সিরীয় সাঁতারু য়ুসরা মর্দিনি
ABP Ananda, web desk
Updated at:
08 Aug 2016 06:20 AM (IST)
NEXT
PREV
খেলা (sports) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -