আর এই অপূর্ণতা নিয়ে আফসোস এখনও যায়নি ব্র্যাডম্যানের দলের একমাত্র জীবিত সদস্য নীল হার্ভে। আজ তাঁর জন্মদিন। তার আগে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে হার্ভে সেই আক্ষেপের কথাই ফের উল্লেখ করেছেন। ব্র্যাডম্যানের ওই বিরল কৃতিত্ব অর্জন না করতে পারার পিছনে নিজেকে দায়ী মনে করেন তিনি।
আসলে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে নিজের কেরিয়ারের ইনিংসে লেগ স্পিনার এরিক হোলিজ। আর চার রান করলেই যেখানে গড় ১০০ হত, সেখানে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরত যেতে হয় ব্র্যাডম্যানকে।
কেন নিজেকে দায়ী করেন হার্ভে?
শেষ ম্যাচের আগের টেস্টে ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে ক্রিজে নেমেছিলেন হার্ভে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওই টেস্টের প্রথম ইনিংসে হার্ভে ১১২ রানের ইনিংস খেলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে এক ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর ব্যাট করতে নামেন হার্ভে। জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল চার রান।
হার্ভে ক্রিজে নেমেই বাউন্ডারি মেরে দলকে জেতান। ব্র্যাডম্যান রয়ে যান নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে। ওই সময় ব্র্যাডম্যান ১৭৩ রানে ব্যাটিং করছিলেন। হার্ভে বলছেন, যদিও ওই ম্যাচে ব্র্যাডম্যানকে ওই চার রান করতে দিতেন, তাহলেই তাঁর গড় ১০০ তে পৌঁছে যেত। কিন্তু এমনটা হয়নি।
এজন্য ব্র্যাডম্যানের গড় ১০০ না হওয়ার জন্য নিজেকেই দায়ী করেন হার্ভে। সেই আফসোস এখনও যায়নি তাঁর।
সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হার্ভে বলেছেন, লিডস টেস্টের ওই চার রানের জন্য এখনও অপরাধবোধে ভুগি। সম্পূর্ণ আমার ভুলেই ব্র্যাডম্যানের টেস্ট ক্রিকেটে রানের গড় ১০০ হয়নি। ওই চার রান আমার বদলে যদি উনি করতেন, তাহলে ওই কৃতিত্ব অর্জন করতেন ব্র্যাডম্যান।
সেই দিনটা যেন এখনও চোখের সামনে ভাসে হার্ভের। তিনি বলেছেন, আমি ক্রিজে এলাম। লাঙ্কাশায়ারের বোলার কেন ক্রেন্সটন লেগ স্ট্যাম্পে বল করল। আমি মিড উইকেটের ওপর দিয়ে খেললাম। বল বাউন্ডারির বাইরে চলে গেল। দর্শকরা খুশিতে মেতে উঠল। মাঠের মধ্যেও ছুটে চলে আসে তারা। তারপর আমার মনে আছে, ব্র্যাড চেঁচিয়ে বলল, চলো, এখান থেকে বেরিয়ে যাই।
হার্ভে বলেছেন, ঘুণাক্ষরেও অনুমান করতে পারেননি যে, ব্র্যাডম্যান শেষ টেস্টে শূন্য রানে আউট হয়ে যাবেন।
হার্ভে আরও বলেছেন,তখন পরিসংখ্যান নিয়ে এত চর্চা হত না। টিভিও ছিল না। প্রেসেরও কারও এটা জানা ছিল না।তিনি আউট হওয়ার পরই বিষয়টি জানা যায়। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডকে আমরা ৫২ রানে আউট করেছিলাম। তাই তাঁর আর ব্যাট করার সুযোগ আসেনি।