ইম্ফল: অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মণিপুরে (Manipur Violence)। বৃহস্পতিবার সাহায্য়ের আর্তি জানালেন বক্সিং কিংবদন্তি মেরি কম। যিনি নিজে মণিপুরের বাসিন্দা। কেন্দ্রের কাছে আর্তি জানিয়েছেন তিনি।
পরিস্থিতি সামলানোর জন্য সেনা নামানো হয়েছে। অসম রাইফেলসের বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। তার মাঝেই মেরি বলেছেন, 'আমার রাজ্য মণিপুর জ্বলছে। দয়া করে সাহায্য় করন।' পাশাপাশি হিংসার ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন মেরি। সেই ট্যুইটে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে ট্যাগ করেছেন তিনি। মেরি আরও বলেছেন, 'মণিপুরের অবস্থা দেখে ভাল লাগছে না। গত রাত থেকে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অনেকে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন।'
পার হয়ে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময়। এখনও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মণিপুরে। অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, হিংসার ঘটনা সামনে আসছে। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্কটজনক জায়গায় পৌঁছেছে যে নামাতে হয়েছে সেনাবাহিনী। অসম রাইফেলস-কেও মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্যপাল টি রঞ্জিত সিংহ আইন অমান্যকারীদের দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন। ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে চূড়াচাঁদপুর সহ একাধিক জায়গায় (Manipur Violence)।
আরও পড়ুন: গরমের মরসুমে চুলের পাশাপাশি কীভাবে যত্ন নেবেন স্ক্যাল্পের? রইল কিছু সহজ টিপস
মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত করার দাবিকে ঘিরেই অশান্তির সূত্রপাত। ছাত্র সংগঠন All Tribal Students' Union of Manipur (ATSUM)-এর 'উপজাতি সংহতি মিছিল' ছিল বুধবার। মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতেই মিছিল বার করা হয়। গত মাসে এই মর্মে রায় শোনায় মণিপুর হাইকোর্টও। তাকে ঘিরে ক্রমশ তেতে উঠছিল পরিস্থিতি। সংঘাত পরিস্থিত তৈরি হয় উপত্যকার ভবঘুরে মেইতেই সম্প্রদায় এবং রাজ্যের পাহাড়ি এলাকার উপজাতিদের মধ্যে। বুধবার এই সংহতি মিছিলকে ঘিরেই অশান্তি বাধে।
মেইতেইদের দাবি, ১৯৪৯ সালে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মণিপুর সংযুক্ত হওয়ার আগে তাঁরা উপজাতি হিসেবেই গন্য় হতেন। কিন্তু সংযুক্তিকরণের পর উপজাতি পরিচয় হারান তাঁরা। পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ভাষাও আজ হারাতে বসেছেন তাঁরা। সাংবিধানিক কোনও রক্ষাকবচও নেই। যে কারণে আজ নিজভূমেই কোণঠাসা তাঁরা। ১৯৫২ সালে মণিপুরের মোট জনসংখ্যার ৫১ শতাং যেখানে মেইতেই ছিল, ২০১১ সালের আদমসুমারিতে তা ৪৪ শতাংশে গিয়ে ঠেকে। তাই অবিলম্বে মেইতেইদের সংরক্ষণের আওতায় আনার দাবি জানানো হয় আদালতে। মেইতেইদের এই আবেদনে সাড়া দেয় হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয় সরকারকে।