চেন্নাই: চিপক টেস্টে ভারতকে ২২৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি বেন স্টোকসের এমন একটা বলে আউট হলেন, যা নিচু হয়ে গিয়েছিল এবং প্রত্যাশিত বাউন্সও ছিল না। কোহলি প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর ভারতের ম্যাচে টিকে থাকার সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে যায়। প্রয়োজনের সময় জ্বলে উঠতে না পারায় এই হারের দায় অনেকটাই দলের ব্যাটসম্যানদের। অন্যদিকে, প্রথম ইনিংসে ৫০০-র বেশি রান ও টেস্টের শেষ ইনিংসে ভারতের ব্যাটিং অর্ডারকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য ইংল্যান্ডকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। 
সমর্থকদের আশা ছিল, পঞ্চম দিন জয়ের লক্ষ্যের দিকে এগোবে ভারত। সকালের সেই আশা কিছুক্ষণ পরেই বদলে গেল। লড়াইটা দাঁড়াল ম্যাচ বাঁচানোর। কিন্তু  যেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ভারতের ব্যাটিং অর্ডার।  শুভমান গিল হাফসেঞ্চুরি করে আউট হয়ে যাওয়ার পর কাজটা খুবই কঠিন হয়ে যায় ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে। পূজারা ফিরলেন ১৫ রান করে। রাহানেও খাতা না খুলেই আউট। ঋষভ পন্থ ১১ ও প্রথম ইনিংসের নায়ক ওয়াশিংটন সুন্দরও কোনও রান না করেই আউট হন। যাঁদের ব্যাটের দিকে তাকিয়েছিলেন সমর্থকরা, সেই ব্যাটসম্যানরা মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই সাজঘরে ফিরে যান।
ঘরের মাঠে ২০১৭-র পর এই প্রথম কোনও টেস্টে হারল ভারত। 
দ্বিতীয় ইনিংসের ভারতের সামনে জয়ের জন্য ৪২০ রানের লক্ষ্য রেখেছিল ইংল্যান্ড। জবাবে ভারত মাত্র ১৯২ রানে অল আউট হয়ে যায়। ইংল্যান্ডের হয়ে জ্যাক লিড সর্বাধিক চার উইকেট নিয়েছেন। সেইসঙ্গে পেসার জেমস আন্ডারসন তিন উইকেট নেন। 
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ৫৭৮ রানের জবাবে ভারত ৩৩৭ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। প্রথম ইনিংসে ২৪১ রানের লিড পাওয়ার পর ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৭৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। 
৪২০ রানের লক্ষ্য সামনে রেখে খেলতে নেমে চতুর্থ দিনের শেষে ভারতের রান ছিল ১ উইকেটে ৩৯। এদিন জ্যাক লিচ ও জেমস আন্ডারসনের বোলিং অ্যাটাকের সামনে কার্যত অসহায় আত্মসমর্পণ করলেন টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের হয়ে সর্বাধিক রান এল বিরাটের ব্যাট থেকে। তিনি করলেন ৭২ রান। কিন্তু উইকেটের অন্য প্রান্ত থেকে যথাযথ সাহায্য পেলেন না তিনি। তরুণ শুভমান অবশ্য ৫০ রানের ইনিংস খেলেছেন। 
চেন্নাইয়ে টিম ইন্ডিয়ার গত ২২ বছরে এই প্রথম হার। এর আগে ভারত ১৯৯৯-এ পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল। তারপর থেকে এই মাঠে ভারত আর কোনও ম্যাচ হারেনি। 
পঞ্চম দিনের ভারতের ইনিংসের শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি। টেস্টের শেষদিন জয়ের জন্য ভারতকে করতে হত ৩৮১ রান। কিন্তু ৫৮ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে ভারতের।  পূজারা ১৫ রান করে স্লিপে ক্যাচ তুলে আউট হন। 


এরপর তৃতীয় উইকেটে গিলের সঙ্গে কোহলির ৩৪ রানের পার্টনারশিপ হয়। কিন্তু গিল আন্ডারসনের বলে আউট হয়ে যান। গিল আউট হওয়ার পর ভরসা ছিল সহ অধিনায়ক রাহানের ওপর। কিন্তু খাতা না খুলেই আউট হন তিনি। 



ইংল্যান্ডের বোলাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ক্রিজে থিতু হতে দেননি। তাঁরা নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট নিতে থাকেন। 



প্রথম সেশনেই ভারত ১১৭ রানে ছয় উইকেট হারায়। তখনই ইংল্যান্ডের জয় কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায়।