ভুবনেশ্বর: রবিবার মরশুমের দ্বিতীয় ফাইনাল খেলতে নামার আগে সতর্ক ইস্টবেঙ্গল এফসি। এই মুহূর্তে দেশের প্রথম শ্রেণির ক্লাব ফুটবলে সবচেয়ে ধারাবাহিক দল ওডিশা এফসি-র সাফল্যের রথ থামাতে গেলে তাদের বাজিমাত করতে গেলে যতটা না দক্ষতার প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন কৌশলের।



ফুটবল-কৌশলে যেমন বিশেষজ্ঞ ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত, তেমনই চৌখস ওডিশার কোচ সের্খিও লোবেরাও। সুতরাং, রবিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে সুপার কাপের লড়াইটা হয়ে উঠবে দুই স্প্যানিশ ফুটবল মস্তিষ্কপ্রসূত কৌশলের লড়াই। কার মাথা থেকে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার ক্ষুরধার কৌশল বেরোবে এবং কোন দলের ফুটবলাররা তাঁদের কোচের কৌশলের ধার মাঠে কতটা সফল ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন, তারই পরীক্ষা হবে এই ম্যাচে।

গত ৪ নভেম্বর ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে হারের পর থেকে টানা ন’টি ম্যাচে হারেনি কলকাতার লাল-হলুদ বাহিনী। এর মধ্যে চারটিতে ড্র ও পাঁচটিতে জয় পেয়েছে তারা। দাপুটে জয় পেয়েছে কলকাতা ডার্বিতে। আইএসএলে চেন্নাইন এফসি, পাঞ্জাব এফসি, মুম্বই সিটি এফসি ও ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে তারা। সেই লিগেই নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে ৫-০-য় হারানোর পাশাপাশি চলতি সুপার কাপেও চারটি ম্যাচে জিতেছে। এমন ধারাবাহিকতা বহুদিন দেখা যায়নি ইস্টবেঙ্গলের খেলায়।

অন্য দিকে, ওডিশা এফসি টানা ১৫টি ম্যাচে অপরাজিত। ২৭ অক্টোবর ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে ১-২-এ হারার পর থেকে আর কোনও ম্যাচে হারেনি তারা। এই ১৫টি ম্যাচের মধ্যে তারা জিতেছে ১৩ বার। দু’টি ড্র করে। গত দশটি ম্যাচের মধ্যেই তারা এই ড্র দু’টি করে এবং দু’টিই কলকাতার দুই প্রধানের বিরুদ্ধে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ২-২ ও ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোলশূন্য।

হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তাদের ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়। মাস খানেক আগে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সেই ম্যাচে দুর্দান্ত কৌশলী ফুটবল খেলে লোবেরার দলকে আটকে দেয় কুয়াদ্রাত বাহিনী। সারা ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে অনেক এগিয়ে থেকেও ইস্টবেঙ্গলকে বশে আনতে পারেননি সের্খিও লোবেরার দল। সারা ম্যাচে অনেক বেশি পাসও (৪৭৬-২৩১) খেলে তারা। কিন্তু তার পরেও ইস্টবেঙ্গলের দূর্গে হানা দিতে পারেনি। পুরো ৯০ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল যেখানে তিনটি শট গোলে রাখে, সেখানে ওডিশা একটির বেশি শট গোলে রাখতে পারেনি।

রবিবার কলিঙ্গ সুপার কাপের ফাইনালেও সে রকমই খেলতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। মাত্র এক মাস ছ’দিনের ব্যবধানে যে নিজেদের পারফরম্যান্সের ধার যে এতুটুকু কমেনি, সেটাই বোঝাতে হবে তাদের। অন্য দিকে, দেশের ক্লাব ফুটবলে নিজেদের দাপট বজায় রাখা ওডিশার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। ঘরের মাঠে নিজেদের সমর্থকদের সামনে এই লড়াই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিনও বটে।

২০২৩-এর এপ্রিলে কোঝিকোড়ের ইএমএস কর্পোরেশন স্টেডিয়ামে ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড দিয়েগো মরিসিও জোড়া গোল করে দলকে সুপার কাপ চ্যাম্পিয়নশিপের পথে নিয়ে যান। প্রথমার্ধে ১৫ মিনিটের মধ্যেই এই দুই গোল করেন তিনি। লড়াইয়ে ফেরার জন্য প্রয়োজনীয় পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেনি বেঙ্গালুরু এফসি। এ বার ঘরের মাঠে সেই খেতাব নিজেদের কাছে রাখার সুযোগ ওডিশার সামনে।                                                                 -- তথ্য় সংগ্রহ: আইএসএল