কলকাতা: ফের ধাক্কা খেল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। শনিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ওড়িশা এফসি তাদের ৩-১ গোলে হারাল। দশ মিনিটের মধ্যে ক্লেটনের গোলে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে গেলেও ২২ মিনিটের মাথায় তা শোধ করে দেন জোড়া গোলের নায়ক, আর এক ব্রাজিলীয় দিয়েগো মরিসিও। তাদের দ্বিতীয় গোলটি পান নন্দকুমার শেখর।


মাস দুয়েক আগে লিগের প্রথম ম্যাচেও দু’গোলে এগিয়ে থেকে ২-৪-এ হেরেছিল লাল-হলুদ বাহিনী। এ বারও সেই একই ভাবে হারল তারা। শুরুর দিকে গোছানো ফুটবল খেললেও গোল খাওয়ার পর থেকে ছন্দ হারিয়ে ফেলে ম্যাচও হেরে বসে কলকাতার দল। এই হারের ফলে লিগ টেবলে নয় নম্বরে নেমে গেল তারা। এবং টানা চারটি ম্যাচে জয়হীন থাকা ওড়িশা এফসি জয়ে ফিরে পয়েন্ট টেবিলে এক ধাপ উঠে চলে গেল পাঁচ নম্বরে। 


শুরু থেকে দুই দলই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেললেও প্রথমেই এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল এফসি। দশ মিনিটের মাথায় সেই ‘গোলমেশিন’ ক্লেটনের পা থেকেই আসে গোল। মাঝমাঠ থেকে অ্যালেক্স লিমার বাড়ানো পাস থেকে বল নিয়ে ডানদিকে দিয়ে বক্সে ঢুকে বক্সের কোণ থেকে ছোট্ট চিপে এগিয়ে আসা গোলকিপার অমরিন্দর সিংহের মাথার ওপর দিয়ে বল দ্বিতীয় পোস্ট দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন (১-০)।


ঘরের মাঠে পিছিয়ে পড়ায় পর গোলশোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ওড়িশার আক্রমণভাগ। তাদের ব্রাজিলীয় ফরওয়ার্ড দিয়েগো মরিসিও ও তরুণ তারকা নন্দকুমার শেখর সমানে আক্রমণে উঠতে থাকেন। তাঁদের সাহায্য করার জন্য ছিলেন থৈবা সিং, জেরি ও সাওল ক্রেসপো।


এই চাপ বেশিক্ষণ রাখতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স এবং ২২ মিনিটের মাথাতেই গোল হজম করে তারা। কর্নার থেকে এই গোল করে দলকে সমতা এনে দেন মরিসিও। রেইনিয়ে ফার্নান্ডেজের অসাধারণ ও মাপা কর্নার ছ’গজের বক্সের মধ্যে পড়ার আগেই ডান পায়ের বাইরে অংশ দিয়ে বল গোলের দিকে ঠেলে দেন (১-১)। লালচুঙনুঙ্গা তাঁর সঙ্গে লেগে থাকলেও আটকাতে পারেননি তাঁকে। গোলকিপার শুভম সেন কিছুটা এগিয়ে এলে হয়তো আগেই বল ধরে নিতে পারতেন।


বিরতির মিনিট পাঁচেক আগে ফের ধাক্কা খায় ইস্টবেঙ্গল এফসি। হীমাংশু জাংরা চোট পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন এবং তাঁর জায়গায় মাঠে নামেন অনিকেত যাদব। এই পরিবর্তনের পরেই প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মিনিটে অসাধারণ এক গোল করে ওডিশাকে এগিয়ে দেন নন্দকুমার।


বাঁ দিকের উইং দিয়ে ওঠা নন্দকুমার বক্সের বাইরে বাঁ দিক থেকেই একটি ভলি করেন, যা অপ্রত্যাশিত ভাবে ক্রসবারের সামান্য নীচ দিয়ে জালে জড়িয়ে যায় (১-২)। গোলকিপার শুভম অনেকটা লাফিয়ে উঠেও বল আটকাতে পারেননি।


মোবাশির রহমানের জায়গায় সুমিত পাসিকে নামিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করে ইস্টবেঙ্গল এফসি। তবে শুরু থেকেই দাপট বজায় রাখার চেষ্টা শুরু করে ওড়িশা এফসি। এই অর্ধেও ক্রমশ খেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ওড়িশা এফসি। প্রথমার্ধের মতোই ছবি দেখা যায় দ্বিতীয়ার্ধেও। চাপের মুখে নিজেদের স্বাভাবিক খেলা প্রায় ভুলেই যান ইস্টবেঙ্গল তারকারা।


নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে অনিকেতের পাসে বক্সের মধ্যে থেকে অঙ্কিত মুখোপাধ্যায় বল জালে জড়িয়ে দিলেও অফসাইডের জন্য তা বাতিল হয়।


আরও পড়ুন: জেহাদি কার্যকলাপের অভিযোগ, জঙ্গি সন্দেহে ধাওয়া করে হাওড়ায় ২ জনকে গ্রেফতার STF-এর