প্য়ারিস: বয়স ৫৮। টেনিস প্লেয়ার। না না, প্রাক্তন নন। তিনি এখনও টেনিস খেলেন। এমনকী শুধু খেলেনই না, রীতিমত অলিম্পিক্সে অভিষেক ঘটিয়ে ফেললেন এই বর্ষীয়ান মহিলা টেনিস প্লেয়ার। প্যারিসে চিলির তানিয়া জেংকে নিয়েই এখন। কিন্তু যে বয়সে একজন প্লেয়ার কোচের ভূমিকায় থাকেন সাধারণত। সেই বয়সে অলিম্পিক্স খেলার অনুপ্রেরণা পেলেন কীভাবে? তানিয়ার জীবনের কাহিনি কিন্তু আপনাকেও চমকে দেবেই।
চিনে জন্ম জেং জিহিং ওরফে তানিয়া জেং। খেলতে চেয়েছিলেন নিজের জন্মভূমির হয়ে। কিন্তু সেই সুযোগ হয়ে ওঠেনি। ১৯৮৯ সালে চিন ছেড়ে চিলিতে পাড়ি দেন জেং। সেখানেই টেনিস থেকে অবসর নিয়ে কোচিং শুরু করেছিলেন। নামও পরিবর্তিত হয়ে যায়। জেং জিহিং হয়ে ওঠেন তানিয়া জেং। ২০০০ সাল পর্যন্ত টেবিল টেনিসে অনেক জনকে কোচিং করিয়েছেন। এছাড়া অনেক দলের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এরপর হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নেন যে টিটি থেকে সরে দাঁড়াবেন। অন্য় চাকরি করা শুরু করেন। এই করে কেটে যায় ২০টা বছর। ২০২০ সালে জীবন অন্য় মোড় নেয় তানিয়ার। সেই বছর কােভিড আসে। আর কোভিডের সময়ই হঠাৎ করে তানিয়ার ইচ্ছে হয় যে ফের তিনি টেবিল টেনিস খেলা শুরু করবেন। শুধু খেলাই নয়। মনের মধ্যে জেদ চেপে গিয়েছিল যে চিলির হয়েই অলিম্পিক্সে খেলতে নামবেন তিনি।
টোকিওতে সম্ভব হয়নি। অবশেষে প্যারিসে ৫৮ বছর বয়সে অলিম্পিক্স অভিষেক করলেন এই 'তরুণী'। ২০২৩ সালে প্যান আমেরিকান গেমসে মহিলাদের সিঙ্গলসে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরই অলিম্পিক্স খেলার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গিয়েছিল তানিয়ার। গত শনিবার প্রথম ম্য়াচে খেলার পর হেরে যেতে হয় তাঁকে। কিন্তু লড়াইয়ের জন্য অভিবাদন কুড়িয়ে নেন। তানিয়া নিজেই বলেন, ''এটা আমার জন্য স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মুহূর্ত।'' তিনি ম্য়াচের আগে আরও বলেছিলেন, ''আমি নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম সব টুর্নামেন্টে। যাতে আমি অলিম্পিক্সের মঞ্চে খেলতে পারি। প্রায় ৩০ বছর পর নিজে খেলা শুরু করেছিলাম। আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। শুধু এই মুহূর্তটার জন্য় অপেক্ষা করছিলাম। কখনও এই বয়সে অলিম্পিক্স খেলতে পারব ভাবতেই পারিনি। শুধু পরিশ্রম করে গিয়েছিলাম। ম্য়াচ জেতা শুরু করলাম বিভিন্ন টুর্নামেন্টে, তখন মনে হয়েছিল যে আমিও পারতে পারি। আমি ভীষণ খুশি। চিলিতে আমাকে সবাই শুভেচ্ছা জানিয়েছে। তাঁরা আমাকে ভালভাবে চেনে এখন।'' সত্যিই তো, তানিয়া জেংরাই তো হয়ে ওঠেই অনুপ্রেরণা, তাঁদের জীবনের গল্পই তো হয়ে ওঠে এখ মাইলস্টোন।