টোকিও: সদ্যসমাপ্ত টোকিও অলিম্পিক্সে আরওসি (ROC) অ্যাথলিট হিসাবে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। তবে পদক তালিকায় বেশ নজরকাড়া পারফরম্যান্স। বরাবরের মতোই। এবারও সেই ছবি পাল্টায়নি। 


মোট পদকের সংখ্যায় তিন নম্বরে রয়েছে আরওসি। ঝুলিতে জমা পড়েছে ৭১টি পদক। তবে অলিম্পিক্সের পদক তালিকায় যেহেতু কোন দেশ কটা সোনা পেয়েছে সেই অনুযায়ী সাজানো হয়, ২০টি স্বর্ণপদক সহ আরওসি রয়েছে পাঁচ নম্বরে।


জানেন, কারা এই আরওসি অ্যাথলিট?


এঁরা সকলেই রাশিয়ার। কিন্তু কেন দেশের প্রতীকে খেলতে পারেন না তাঁরা? কারণ, ২০১৯ সালে রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত ডোপিংয়ের (নিষিদ্ধ বলবর্ধক পদার্থ সেবন) অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যে কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ বা আয়োজন করা থেকে রাশিয়াকে চার বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ব ডোপিং বিরোধী সংস্থা (ডব্লিউএডিএ বা ওয়াডা)। সেই কারণে রুশ অ্যাথলিটরা আরওসি ব্যানারে খেলছেন। আরওসি-র পুরো কথাটি হল রাশিয়ান অলিম্পিক্স কমিটি।


রাশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত না বাজলেও এবারের অলিম্পিকে 'আরওসি'র পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানাতে দেশের বিখ্যাত সুরকার পিওতর চাইকভস্কির এক নম্বর পিয়ানো কনচের্তো (বি-ফ্ল্যাট মাইনর) বাজানো হচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে যে কোনও রুশ জাতীয় প্রতীক বা লোগো ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা। এমনকী 'আরওসি'র পূর্ণরূপ বলাও নিষিদ্ধ।


তবে 'আরওসি'র পতাকায় অলিম্পিক্সের লোগোর উপরেই রয়েছে রাশিয়ার পতাকার আদলে সাদা-নীল-লাল রঙের ডোরাকাটা ঢেউ খেলানো প্রতীক। তাতে মনে হতে পারে, খোদ রাশিয়ার পতাকাই উড়ছে। সেই সঙ্গে রুশ প্রতিযোগীরা তাদের সেই চিরচেনা তেরঙা জার্সি পরেই খেলছেন।


তফাত শুধু দেশের নামে।


অলিম্পিক গেমসে অতীতেও রাশিয়ানরা নিরপেক্ষ পতাকার নীচে খেলেছেন। ১৯৯২ সালের বার্সেলোনা অলিম্পিক্সের ঠিক দুমাস আগে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ায় রুশ প্রতিযোগীদের অলিম্পিক্সের পতাকায় খেলতে বাধ্য করা হয়। সেবার যখনই তাঁরা কোনও পদক জিততেন, তখনই অলিম্পিক্সের সঙ্গীত বাজানো হতো। ডোপিংয়ের অপরাধে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ৪৩টি অলিম্পিক্স পদক কেড়ে নেওয়া হয়েছে, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।