ইম্ফল: অলিম্পিক্সে কীর্তি গড়ে দেশে ফিরেছেন সোমবার। ভারোত্তোলনে ৪৯ কেজি বিভাগে রুপোর পদক জিতেছেন। মঙ্গলবার সেই মীরাবাঈ চানু নিজের রাজ্য মণিপুরে ফিরলেন। এবং মাকে দেখে কান্নায় ভঙে পড়লেন।


মা সাইখম ওঙ্গবি টোম্বি লেইমাকে দেখেই মঙ্গলবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন চানু। মাকে জড়িয়ে ধরেন। তারপরই কাঁদতে শুরু করেন দুজনই। স্ত্রী ও মেয়ের আনন্দাশ্রু তখন পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন চানুর বাবা সাইখম কৃতি মেইতেই।


পাঁচ বছর আগের ঘটনা। রিও অলিম্পিক্সের ঠিক আগে। নিজের গয়না বিক্রি করে চানুর জন্য একজোড়া কানের দুল বানিয়ে দিয়েছিলেন সাইখম ওঙ্গবি টোম্বি লেইমা। দুলজোড়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ তার গড়ন অলিম্পিক্স রিংয়ের মতো। সেই দুল পরে রিও অলিম্পিক্সে পারেননি। তবে টোকিও থেকে পদক জিতে ফিরেছেন চানু। ইম্ফল থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে চানুর গ্রাম নঙ্গপক কাকচিংয়ে উৎসবের আবহ। 


টোকিওয় চলতি অলিম্পিক্সে ভারত্তোলনে রুপো জেতার পর সোমবার দেশে ফেরেন মীরাবাঈ চানু। তিনি অভিনন্দনের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছেন। মণিপুর সরকার তাঁকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিযুক্ত করেছে।


দেশে ফেরার পর চানু বলেছেন, ‘এবারের অলিম্পিক্স বেশ কঠিন ছিল। আমরা ২০১৬ থেকে প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। রিও অলিম্পিক্সের পর প্রস্তুতির ধরন বদলে ফেলি। আমরা (চানু ও তাঁর কোচ) টোকিও অলিম্পিক্সের জন্য পাঁচ বছর দিয়েছি। এত ভালবাসা ও সমর্থনের মধ্যে দেশে ফিরে ভাল লাগছে। সবাইকে ধন্যবাদ।’


২১ বছরের খরা কাটিয়ে চানুর হাত ধরে অলিম্পিক্সে ভারোত্তোলনে পদক পেয়েছে ভারত। ২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিক্সে ভারোত্তোলনে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন কর্ণম মালেশ্বরী। তারপর এই প্রথম কোনও ভারতীয় ভারোত্তোলক অলিম্পিক্সে পদক পেলেন। মহিলাদের ৪৯ কেজিতে রুপো পান চানু। রোমহর্ষক ম্যাচে স্ন্যাচে পিছিয়ে পড়েও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে বাজিমাত করেন তিনি। চানু স্ন্যাচে তোলেন ৮৭ কেজি। এরপর ৮৯ কেজি ওজন তুলতে ব্যর্থ হন তিনি। তবে ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১১৫ কেজি তুলে রুপো নিশ্চিত করেন তিনি। সোনা জেতেন চিনের প্রতিযোগী। 


বদলাবে কি চানুর পদকের রঙ? ভারোত্তোলনে তাঁর জেতা রুপো কি বদলে যেতে পারে সোনায়? হঠাৎই তৈরি হয়েছে সেই আশা। ভারোত্তোলনে তাঁর বিভাগে সোনা জেতেন চিনের অ্যাথলিট ঝিহুই হাউ। সোনা জয়ের দু’দিনের মাথায় হঠাৎই তাঁর ডোপ টেস্ট হবে বলে খবর। অথচ তাঁর রুটিন টেস্ট আগেই হয়েছে। হঠাৎ কেন এই ডোপ টেস্ট? তাই নিয়েই তৈরি হয়েছে জল্পনা। এই ডোপ পরীক্ষায় হাউ যদি ব্যর্থ হন, তাহলে চানুই হবেন স্বর্ণপদক জয়ী প্রথম ভারতীয় ভারোত্তোলক।