কলকাতা : সালটা ১৯৯৩। স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান (Sir Donald Bradman) ও ওয়েলি হ্যামন্ডের (Wally Hammond) পর ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে অনন্য নজির গড়েছিল এক ভারতীয়। টানা দুটি টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তিমান। বিনোদ কাম্বলি। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের জেরে ক্রিকেট কেরিয়ারে প্রতিভার সঙ্গে সুবিচার করতে না পারার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু ব্যাট যে তাঁর হাতে অন্যরকমভাবেই কথা বলত, সেই নজির মিলেছিল বিনোদ কাম্বলির ( (Vinod Kambli) ওস্তাদের মারে (Ostader Mar)। টানা দুই টেস্টে দ্বিশতরানের অনন্য নজির তার পরে গড়েছেন কুমার সাঙ্গাকারা (২০০৭), মাইকেল ক্লার্ক (২০১২) ও বিরাট কোহলি (২০১৭)।
মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে (Wankhede Stadium) ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো ২২৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে ভারতকে টেস্ট জিতিয়ে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করতে করতে খেলতে নেমেছিলেন বিনোদ কাম্বলি। যার ঠিক পরের টেস্টেই '৯৩-এর মার্চে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্টেও ঝলসে উঠেছিল বাঁ হাতি কাম্বলির ব্যাট। দিল্লির ফিরোজ শা কোটলায় (অধুনা অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে) ২২৭ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ২৮ টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৩০১ বলে ঝকঝকে যে ইনিংসে ছড়িয়ে ছিল ব্যাটিং দাপটের অনন্য নজির।
কীভাবে এগিয়েছিল কাম্বলির সেই ইনিংস
টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিন (Mohammad Azharuddin)। ওপেনার মনোজ প্রভাকর সাজঘরে ফেরার পর তিন নম্বরে ক্রিজে নামেন বিনোদ কাম্বলি। তারপর অপর ওপেনার নভজ্যোৎ সিংহ সিধু, সচিন তেন্ডুলকার ও আজহারউদ্দিনের সঙ্গে তিনটি একশো রানের পার্টনারশিপ গড়েন তিনি। দলের ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার পথে ৩০১ বলে হাঁকান ২৮ টি বাউন্ডারি। শেষমেশ ২২৭ রানের মাথায় জন ট্রাইকোসের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১৩২ ওভার ব্যাটের পর ভারতের রান যখন ৭ উইকেটে ৫৩৬ রান, তখন ইনিংস ডিক্লেয়াল ঘোষণা করে ভারত।
অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের ১১৫ ও গ্রান্ট ফ্লাওয়ারের ৯৬ রানের সুবাদে কিছুটা লড়াই করলেও অনিল কুম্বলে ও মনিন্দর সিংহের ৩ টি করে উইকেট নেওয়ার সুবাদে ৩২২ রানে থেমে যায় জিম্বাবোয়ের প্রথম ইনিংস। যার পর সফররত দলকে ফলো-ইন করায় ভারত। জিম্বাবোয়ের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ২০১ রানে। ইনিংস ও ১৩ রানে ম্যাচ জেতে ভারত।
কাম্বলির কীর্তি- টেস্ট কেরিয়ার শুরুর মাত্র ১৪ ইনিংসের মধ্যে হাজার রানের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছিলেন বিনোদ কাম্বলি। প্রথম ভারতীয় ও বিশ্বের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে যে নজির গড়েন তিনি। পাশাপাশি কেরিয়ারে প্রথম টেস্ট শতরানকে দ্বিশতরানে রূপান্তরিত করেছিলেন যে সমস্ত ভারতীয় ক্রিকেটার, সেই তালিকাতেই রয়েছে বিনোদ কাম্বলির নাম।
আরও পড়ুন- 'আমি ম্যাচ বাঁচাব', নেপিয়ারে ১০ ঘণ্টার ইনিংসের শুরুতেই বন্ধুকে ফোনে বলেছিলেন গম্ভীর