প্যারিস: টোকিও অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জিতেছিল ভারতীয় হকি দল। সেই দলের জয়ের সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন পিআর শ্রীজেশ। তেকাঠির নীচে যাঁকে সদা ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল। প্রতি ম্য়াচেই দুর্দান্ত সব সেভ করেছেন। দেশকে অলিম্পিক্সের মঞ্চ থেকে ১৯৮০ সালের পর হকিতে পদক এনে দেওয়ার অন্য়তম কারিগর পি আর শ্রীজেশ এবার অবসর নিতে চলেছেন। অন্তত নিজে তেমনই আভাস দিয়েছেন। আসন্ন প্যারিস অলিম্পিক্সের মঞ্চই শেষবার জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা যাবে শ্রীজেশকে। নিজেই জানিয়েছেন তিনি।
গত শনিবার প্যারিসে পৌঁছে গিয়েছিল ভারতীয় হকি দল। আগামী ২৭ জুলাই নিজেদের প্রথম ম্য়াচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে তাঁরা। ৩৬ বছরের শ্রীজেশের জন্যই এবার ভারতীয় হকি দল আরও ভাল পারফর্ম করতে চায়। এখনও পর্যন্ত মোট ৩২৮টি ম্য়াচে খেলতে নেমেছেন ভারতীয় দলের জার্সিতে। তিনটি অলিম্পিক্স, কমনওয়েলথ ও বিশ্বকাপে খেলেছেন শ্রীজেশ। ২০১০ বিশ্বকাপে ভারতীয় হকি দলে অভিষেক হয় শ্রীজেশের। এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন স্মরণীয় জয়ের সাক্ষী ছিলেন এই অভিজ্ঞ গোলরক্ষক। ২০১৪ এশিয়ান গেমসে সোনা জয়ী ভারতীয় দলের সঙ্গে ছিলেন শ্রীজেশ। এছাড়াও ২০১৮ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০১৯ সালে এফআইএইচ মেনস সিরিজ ফাইনালে সোনা জয়, ২০২২ কমনওয়েলথে ব্রোঞ্জজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন শ্রীজেশ।
২০২১ সালে মেজর ধ্যানচাঁদ খেলরত্ন পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছিল শ্রীজেশকে। এক সাক্ষাৎকারে শ্রীজেশ বলেন, ''আমি প্যারিসে শেষবারের মত জাতীয় দলের জার্সিতে নামতে চলেছি। এই সফরটা দুর্দান্ত ছিল। অনেক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার পরিবার, আমার ভক্তদের, হকি ইন্ডিয়াকে ও আমার সব কোচেদের। আমার এই সফরে তাঁদের উপস্থিতি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল।'' তিনি আরও বলেন, ''আমার এখনও মনে আছে, আমার প্রথম হকি কিট কিনে দেওয়ার জন্য বাবাকে গরু বেচে দিয়ে হয়েছিল। তাঁর আত্মত্যাগ আমার মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। আমি সাফল্য পাওয়ার জন্য আরও পরিশ্রম করতে শুরু করি, আরও বড় স্বপ্ন দেখতে শুরু করি।''
নিজের সিদ্ধান্ত যে দলের সতীর্থদের জানিয়েছেন, সে কথাও জানান শ্রীজেশ। তিনি বলেন, ''আমার শুধু একার নয়। দলের প্রত্যেকের একটাই লক্ষ্য প্যারিসে ভাল খেলা। আগের বারের পদকের যে রং, সেই রংটা বদলাতে চাই এবার। সবাই তাই মুখিয়ে আছে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য।''