প্যারিস: প্রয়াত কিংবদন্তি ইউসেবিও, লুই ফিগোরা যা করতে পারেননি, সেটাই করে দেখালেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। দেশকে প্রথমবার কোনও ট্রফি এনে দিলেন। নিজে ফাইনালে কিছু করতে পারেননি। ২৪ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। কিন্তু রোনাল্ডোই তো এই পর্তুগাল দলের আসল নায়ক। তিনিই তো দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন। রোনাল্ডোর সৌজন্যেই ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরো কাপ জিতে ইতিহাস গড়ল পর্তুগাল। দেশের হয়ে ভাল খেলতে না পারার বদনাম চিরতরে ঘুচিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসিকেও এ ব্যাপারে টেক্কা দিলেন সিআরসেভেন।


দলের জয়ের পর আনন্দাশ্রু রোনাল্ডোর

 

রোনাল্ডোদের এই ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক অখ্যাত এডার। যিনি গত মরশুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব সোয়ানসি সিটির হয়ে ১৫টি ম্যাচ খেলে একটিও গোল করতে পারেননি। সেই এডারই অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে দেশকে বহুকাঙ্খিত ট্রফি এনে দিলেন।

 

এবারের ইউরো কাপ দেখিয়ে দিল, সবসময় সেরা দল চ্যাম্পিয়ন হয় না। পর্তুগাল প্রথম থেকেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এগোচ্ছিল। গ্রুপ লিগে তিনটি ম্যাচই ড্র করে ফার্নান্দো স্যান্টোসের দল। তৃতীয় সেরা দল হিসেবে নক-আউট পর্বে যান ন্যানি-পেপেরা। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে জয় আসে অতিরিক্ত সময়ের গোলে। কোয়ার্টার ফাইনালে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় আসে টাইব্রেকারে। সেমিফাইনালে অবশ্য রোনাল্ডো জ্বলে ওঠেন। রিয়াল মাদ্রিদের সতীর্থ গ্যারেথ বেলের ওয়েলসের বিরুদ্ধে ২-০ গোলে জয় পায় পর্তুগাল। এবারের ইউরোতে এই একটি ম্যাচেই নির্ধারিত ৯০ মিনিটের মধ্যে জয় পেয়েছেন রোনাল্ডোরা। ফাইনালেও ৯০ মিনিট গোলশূন্য থাকার পর ১০৯ মিনিটে এডারের গোলে জয় এল।

চ্যাম্পিয়নদের উল্লাস

ঘরের মাঠে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল দিমিত্রি পায়েত, আঁতোয়া গ্রিজম্যানদের ফ্রান্স। কিন্তু ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ হল ফরাসিদের। এই ম্যাচে অলিভিয়ের জিরু, পায়েতরা প্রত্যাশিত ফর্মের ধারেকাছেও ছিলেন না। বিপক্ষের সেরা তারকা চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও দিদিয়ের দেশঁর দল খেলায় আধিপত্য বিস্তার করতে পারল না। এই ম্যাচে কোনও দলই খুব বেশি সুযোগ পায়নি। কিন্তু যা সুযোগ এসেছিল তা-ও নষ্ট করলেন ফরাসিরা। ফলে হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হল তাঁদের।