মুম্বই: হাজার চেষ্টা করেও তাঁকে আউট করতে পারছিলেন না প্রতিপক্ষ বোলাররা। আজাদ হিন্দ ময়দানে তাঁর ব্য়াটিং দাপট দেখে বিপক্ষ দলের উইকেটকিপার বলেছিলেন, তুই এভাবে ব্য়াট করে গেলে আমি আর কালকে মাঠে আসবো না। শেষ পর্যন্ত হ্যারিস শিল্ডের সেই ম্যাচে সেন্ট ফ্রান্সিস ডিঅ্যাসির বিরুদ্ধে ৫৪৬ রান করে আউট হয়েছিলেন রিজভি স্প্রিংফিল্ড স্কুলের পৃথ্বী শ (Prithvi Shaw)। স্কুল ক্রিকেটে ভারতীয়দের মধ্য়ে সর্বোচ্চ স্কোর করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন।


রেকর্ডবুকে নিজের নাম তুলেও বাবাকে খুশি করতে পারেননি ১৪ বছরের পৃথ্বী। পঙ্কজ শ বরং বিরক্ত হয়েছিলেন। ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আউট কেন হলে! নট আউট থাকতে পারতে!


মঙ্গলবার পৃথ্বীর জন্মদিন। ২২ বছর পূর্ণ করলেন মুম্বইয়ের ডানহাতি ব্যাটার। যিনি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, একটা সময় দিনের পর দিন অপছন্দের খাবার খেয়ে ক্রিকেট সাধনা চালিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকে। কী সেই খাবার? পৃথ্বী বলেছিলেন, ‘ঘি মাখানো রুটি আর নুন। রোজ ভোর সাড়ে চারটেয় ঘুম থেকে ডেকে তুলে দিতেন বাবা। আমাকে দু’গ্লাস গরম জল পান করতে দিতেন। তাহলে নাকি পেট পরিষ্কার হয়। আমার ভোরবেলা উঠে অত জল পান করতে ভাল লাগত না। কিন্তু বাবার কড়া শাসন। তড়িঘড়ি করে খাবার তৈরি করতেন বাবা। উনি ভাল রান্না করতে পারতেন না। রুটি বানাতেন। কিন্তু কোনওদিন তা গোল হতো না। চৌকো বা লম্বা কিছু একটা হতো। সেটা টিফিনবক্সে ভরে নিতেন। ঘি মাখানো রুটি আর নুন।’


তারপর লোকাল ট্রেনে চেপে বেড়িয়ে পড়তেন পৃথ্বী। ক্রিকেট কিট নিয়ে। প্রায় ঘণ্টাখানেকের ট্রেন সফর। প্র্যাক্টিসের ফাঁকে বিরতিতে রুটি খেতেন। পৃথ্বী বলছেন, ‘গলা দিয়ে নামতে চাইতো না। শুকনো রুটি কি খাওয়া যায়! কিন্তু তাই খেতাম।’ মজা করে যোগ করেছেন, ‘বাবার কোনওদিন মনেও হয়নি যে, আহা রে বাচ্চাটা ঘুমোচ্ছে ওকে ঘুমোতে দিই।’


দুরন্ত দুই ক্যাচে ঘুরল ম্যাচ, কর্নাটককে ৭ উইকেটে হারিয়ে শেষ আটে বাংলা


তবে বেড়াতে ভালবাসতেন পৃথ্বী। জানিয়েছেন, মুম্বই অনূর্ধ্ব ১৪ দলে সুযোগ পেয়ে বঢোদরা খেলতে যাচ্ছিলেন ট্রেনে চেপে। সেটাই ছিল মুম্বইয়ের বাইরে তাঁর প্রথম সফর। পৃথ্বী বলেছেন, ‘দারুণ লেগেছিল। মনে হয়েছিল রান করতে পারলে এরকম অনেক জায়গায় বেড়াতে পারব। তখনই খেলায় আরও মনোযোগ দিই।’


আপাতত জাতীয় দলে ফেরার অপেক্ষা করছেন পৃথ্বী।