সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ইডেন গার্ডেন্সের (Eden Gardens) ক্লাব হাউসের সামনের লনে সবুজ গালিচা পাতা চলছে তখন। সাজানো হচ্ছে মঞ্চ। পিছনের বোর্ডে জ্বলজ্বল করছে তাঁর ছবি। সঙ্গে লেখা, 'প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০ হাজার প্লাস রান। অভিনন্দন মনোজ তিওয়ারি।'


কেরিয়ারের শেষ ম্যাচ খেললেন বাংলার কিংবদন্তি। অথচ মঞ্চ বাঁধার আগেই ম্যাচ শেষ। বিহারকে সোয়া দুদিনের মধ্যে ইনিংস ও ২০৪ রানে হারিয়ে বিরাট জয় পেল বাংলা। বোনাস-সহ সাত পয়েন্ট পেলেন মনোজরা (Manoj Tiwary)। ১৯ পয়েন্টে শেষ করল বাংলা (Bengal vs Bihar)। রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে শেষ ম্যাচে বড় জয় মনোজের জন্য সান্ত্বনা হয়ে রইল।


আর মনোজের বিদায়ী মঞ্চে জ্বলে উঠলেন অন্য দুজন। দুজনের কেউই বাংলার ভূমিপুত্র নন। কিন্তু বাংলার জার্সিতে খেলেই জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন। একজন তো ভারতের হয়ে তিন ফর্ম্যাটে খেলছেনও।


প্রথমজন, অভিমন্যু ঈশ্বরণ ব্যাট হাতে অপরাজিত দুশো রান করে বিহারকে কোণঠাসা করে দেন। যাঁর ব্যাটের শাসন থামাতেই পারেনি বিহার। দ্বিতীয় জন, মুকেশ কুমার, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশাখাপত্তনমে দ্বিতীয় টেস্টেও খেলেছেন। রাজকোট টেস্টের একাদশে ছিলেন না বলে তাঁরে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার জন্য ছেড়েছিল ভারতীয় দল। বাংলার শেষ ম্যাচে সেই মুকেশ কুমার নিলেন ১০ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৪ শিকার। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬। মুকেশের দাপটে প্রথম ইনিংসে বিহার ৯৫ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে তুলল তার চেয়ে ১৭ রান বেশি। ১১২ রানে অল আউট হয়ে গেল বিহার।


মনোজের বিদায়ী ম্যাচে সংবর্ধনা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সিএবি। বঙ্গ ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থাও যেন নিশ্চিত ছিল যে, ম্যাচ চারদিন গড়াবে না। তাই রবিবার, ম্যাচের তৃতীয় দিন বিকেল পাঁচটায় মনোজ-বরণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মনোজের হাতে তুলে দেওয়া হবে সোনার জল করা ব্যাট। কিন্তু ম্যাচ শেষ হয়ে গেল প্রথম সেশনে ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে। ৩২/১ স্কোরে ব্যাট করতে নেমে আর ৮০ রান যোগ করে অল আউট হয়ে গেল বিহার। তাদের খেলা দেখে কারও কারও মনে হয়েছে, এই দল প্লেট গ্রুপ থেকে এলিটে উঠল কী করে!


মনোজকে বিদায়ী ম্যাচে স্মারক উপহার দিল দলও। সকলের সই সম্বলিত জার্সি ও ফ্রেমে বাঁধানো দলের ছবি তুলে দেওয়া হয় মনোজের হাতে। তবে গোটা মরশুমে এক সূরয সিন্ধু জয়সওয়ালের উত্থান ও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স আর ঊনচল্লিশের অনুষ্টুপ মজুমদারের ব্যাটিং ছাড়া বাংলার প্রাপ্তির তালিকা করতে বসলে হাতে পড়ে থাকে শুধু পেন্সিল। জুতোজোড়া তুলে রাখার আগে মনোজ কি বাংলা ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব একটা নিশ্চিন্ত হতে পারলেন?


আরও পড়ুন: Mukesh Kumar: কলকাতায় ট্যাক্সি চালাতেন বাবা, রোহিতদের সংসারে ঢুকেও পা মাটিতে রেখে চলার শপথ মুকেশের


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।