ইনদওর: বুড়ো আঙুলের চোট পাওয়া জায়গায় যখন প্রতিপক্ষ ফিল্ডারের ছোড়া বল এসে লাগল, যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠলেন তিনি। মাঠে দৌড়ে এলেন ফিজিও। শুশ্রূষা চলল। কেউ কেউ ভাবছিলেন, মাঠ ছেড়ে না বেরিয়ে যেতে হয় তাঁকে।


কিন্তু তিনি, অনুষ্টুপ মজুমদার (Ranji Trophy) অন্য ধাতুতে গড়া। ফের গ্লাভস পরলেন। স্টান্স নিলেন। এবং সেঞ্চুরি করে প্রমাণ করলেন, এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ। সে প্রতিপক্ষ যতই গতবারের চ্যাম্পিয়ন হোক না কেন।


অভিজ্ঞ অনুষ্টুপকে সঙ্গত করলেন তরুণ সুদীপ ঘরামি। সেঞ্চুরি করলেন নৈহাটির ক্রিকেটারও। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালের প্রথম দিনের শেষে ম্যাচের রাশ বাংলার হাতে। দিনের শেষে বাংলার স্কোর ৩০৭/৪। ২০৬ বলে ১২০ রান করেছেন অনুষ্টুপ। সুদীপ আউট হয়েছেন ২১৩ বলে ১১২ রান করে। ক্রিজে রয়েছেন মনোজ তিওয়ারি ও শাহবাজ আমেদ। সব কিছু ঠিকঠাক চললে এখান থেকে বাংলার চারশো পেরনো সময়ের অপেক্ষা।


যদিও আত্মতুষ্ট হতে নারাজ বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল। বলছেন, 'সবে প্রথম দিন হল। ওরাও লড়াই ছাড়বে না। আমাদের পাঁচ দিন ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। সুযোগ হাতছাড়া করলে চলবে না।'


প্রতিশোধের মঞ্চে জ্বলে উঠল বাংলার টপ অর্ডার। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) সেমিফাইনাল ম্যাচে জাঁকিয়ে বসল বাংলা (Bengal Cricket Team)। ব্যাট হাতে বাংলাকে ফাইনালের স্বপ্ন দেখালেন অনুষ্টুপ মজুমদার (Anustup Mazumdar) ও সুদীপ ঘরামি (Sudip Gharami)। অনুষ্টুপের ইনিংস সাজানো ১৩টি চার ও একটি ছক্কায়। সুদীপ ঘরামি মেরেছেন ১২টি বাউন্ডারি। সঙ্গে জোড়া ছক্কা। তৃতীয় উইকেটে ৪১৪ বলে ২৪১ রান যোগ করেছেন দুজনে।


বাংলার ওপেনাররা ভাল শুরু করলেও, আচমকাই ঘনিয়েছিল উদ্বেগের মেঘ। ৪ বলের ব্যবধানে ছিটকে গিয়েছিল দুই ওপেনারের স্টাম্প। প্রথমে অভিমন্যু ঈশ্বরণ। গৌরব যাদবের বলের লাইন ফস্কে বোল্ড হন অভিমন্যু। ৩৩ বলে ২৭ রান করে। তার ৪ বল পড়েই কার্যত একই কায়দায় বোল্ড হন কর্ণ। অনুভব অগ্রবালের বলের লাইন ফস্কে। ৪৫ বলে ২৩ রান করেন কর্ণ। টস জিতে প্রথম ব্যাটিং করে বিনা উইকেটে ৫০ রান থেকে এক সময় ৫১/২ হয়ে গিয়েছিল বাংলা।


কিন্তু সেখান থেকে বাংলা ইনিংসকে টেনে তুলেছেন কার্যত দুই প্রজন্মের দুই ব্যাটার। অভিজ্ঞ অনুষ্টুপ মজুমদার ও তরুণ তুর্কি সুদীপ ঘরামি। ক্রিজে একবার প্রাণরক্ষা হয়েছে সুদীপের। ব্যক্তিগত ২৬ রানের মাথায় সারাংশ জৈনের বলে খোঁচা দিয়েছিলেন নৈহাটির ক্রিকেটার। কিন্তু প্রথম স্লিপে তাঁর ক্যাচ ফেলে দেন রজত পাতিদার।


অনুষ্টুপ অবশ্য কোনও সুযোগ দেননি। বরং ভাঙা আঙুল নিয়েও লড়াই চালালেন। তাঁর হাতের বুড়ো আঙুলে চিড় রয়েছে। সেখানে টেপ জড়িয়ে ব্যাটিং করছেন। রান নেওয়ার সময় প্রতিপক্ষের ছোড়া বলে আঙুলে ফের চোট পান এদিন। কিন্তু লড়াই ছাড়েননি।


আরও পড়ুন: ABP Exclusive: ১০৬৭-র জবাবে প্রতিপক্ষ অল আউট মাত্র ৪ রানে! মেয়র্স কাপে বিরল রেকর্ড