সন্দীপ সরকার, কলকাতা: এক দল প্রথমে ব্যাট করে তুলল ১০৬৭ রান। জবাবে প্রতিপক্ষ মাত্র ৪ রানে শেষ! জয়ের ব্যবধান ১০৬৩ রানের!


স্থানীয় ক্রিকেটে (CAB) রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ, এই ঘটনা ঘটেছে সিএবি-র স্কুল ক্রিকেটে। মেয়র্স কাপে (Mayor's Cup)। অনূর্ধ্ব ১৫ যে টুর্নামেন্টের আয়োজক সিএবি, কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)।


বুধবার মেয়র্স কাপে মুখোমুখি হয়েছিল নব নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয় ও নোপানি হাইস্কুল। খেলা ছিল রাজপুর সাধারণ সম্মিলনী মাঠে। ম্যাচের স্কোরবোর্ড দেখে সকলের চক্ষু চড়কগাছ। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নব নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়। ২৮ ওভারে ১০৬৭/৪ তুলে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেয় তারা। জবাবে ৫.১ ওভারে মাত্র ৪ রানে অল আউট হয়ে যায় নোপানি হাইস্কুল। নব নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়ূষ ঘোষ একাই ৬ উইকেট নিয়েছে। বাঁহাতি স্পিনারের বোলিং পরিসংখ্যান চমকে দেওয়ার মতো। ৩-১-২-৬। অর্থাৎ, ৩ ওভারে ১টি মেডেন-সহ মাত্র ২ রান খরচ করে ৬ উইকেট নিয়েছে আয়ূষ।


মেয়র্স কাপ তো প্রত্যেক ইনিংসে ৪৫ ওভার করে খেলা হয়। সেখানে প্রথমে নেমে নব নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয় ২৮ ওভার ব্যাট করল  কেন? তাতে ১০৬৭ রান উঠল কীভাবে? নব নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রিকেট দলের ম্যানেজার গৌতম দাস বলছিলেন, 'আমরা প্রথমে ব্যাট করে ২৮ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৮২ রান তুলেছিলাম। কিন্তু নোপানি স্কুল তারপর আর খেলতে চায়নি। ওরা ওয়াক ওভার দিতে চেয়েছিল। যা নিয়মবিরুদ্ধ। সেই কারণে ওদের ৫৮৫ রান পেনাল্টি করেন ম্যাচ রেফারি। ২৮ ওভারের পর আর খেলতে চায়নি আমাদের প্রতিপক্ষ। ম্যাচ রেফারি আমাদের জানতে চান, আর ব্যাটিং করব কি না। পেনাল্টি পেয়ে যাওয়ায় আমাদের আর কোনও দাবি ছিল না। ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দিই।'


নব নালন্দার হয়ে ওপেনার আত্মজ মণ্ডল ৮৬ বলে ২১০ রানে অপরাজিত ছিল। ৪০টি চার ও ৩টি ছয় মেরেছে আত্মজ। অধিনায়ক দেবার্ঘ রক্ষিত ৪৩ বলে ১০১ রান করে। ১৬টি চার ও ৪টি ছয় মেরেছে দেবার্ঘ।


জবাবে ব্যাট করতে নেমে কার্যত কোনও লড়াই করতে পারেনি নোপানি হাইস্কুল। ৪ রানে শেষ হয়ে যায় তাদের ইনিংস। অভূতপূর্ব জয়ের পর নব নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্র বলছেন, 'আমাদের প্রতিপক্ষ ব্যাটিং করতে নামতেই চায়নি। দক্ষতায় অনেক পিছিয়ে। নামার ইচ্ছেই ছিল না ওদের। ব্যাটাররা যেভাবে পেরেছে আউট হয়ে বেরিয়ে গিয়েছে।'


রেকর্ড রানে জিতে হইচই ফেলে দিয়েছে নব নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়। অরিজিৎ মিত্র অবশ্য খুশিতে ভাসতে নারাজ। স্কুলের প্রিন্সিপাল বলছেন, 'রেকর্ড জয় ঠিকই। তবে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করেছিলাম। এই জয়ে সেভাবে আনন্দ করতে পারছি না। গত ৩-৪ বছর ধরেই আমাদের ক্রিকেট দল ভাল করছে। প্রতিপক্ষের মান কেমন ছিল জানি না। খেলায় জেতা-হারা থাকে। কিন্তু এরকম কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা অকল্পনীয়। তাই উচ্ছ্বাসে ভাসছি না।'


আরও পড়ুন: সেরে উঠলে পন্থের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে কিংবদন্তির চড়!