সন্দীপ সরকার, কলকাতা: বাপ কা বেটা, সিপাহী কা ঘোড়া, কুছ নহী তো থোড়া থোড়া...


শনিবার সকালে ইডেন গার্ডেন্সের (Eden Gardens) লোয়ার টিয়ারে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের এই প্রবাদবাক্যর কথা মনে পড়ে যেতে বাধ্য। মাঠে চলছে বাংলা বনাম ছত্তীসগড় (Bengal vs Chhattisgarh) রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের খেলা। আর লোয়ার টিয়ারে বসে সেই ম্য়াচ নিষ্পলক দৃষ্টিতে দেখছে তিন বালক। প্রত্যেক বলের শেষে তাদের উন্মাদনা এমন পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে যে, পারলে যেন নিজেরাই মাঠে নেমে পড়ে।


অগ্যস্ত শুক্ল, উৎসব শুক্ল ও শ্রেয়াংশ লাহিড়ী। শীতের সকালে তিন খুদে হাজির হয়ে গিয়েছিল ইডেন গার্ডেন্সে। বাংলা বনাম ছত্তীসগড় ম্যাচ দেখতে।


এতটুকু পড়ে মনে হতেই পারে, ক্রিকেট মাঠে তো এরকম অনেক খুদেকেই দেখা যায়। এর মধ্যে বিশেষত্ব কী?


বিশেষত্ব হল পরিচয়ে। কারণ, তিন বালকের বাবার নাম লক্ষ্মীরতন শুক্ল, ঈশান শুক্ল ও সৌরাশিস লাহিড়ী। অগ্যস্ত জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতনের ছেলে। উৎসব ভাইপো। লক্ষ্মীরতনের দাদা ঈশানের পুত্র। আর শ্রেয়াংশ বাংলার কোচ সৌরাশিসের পুত্র। তিনজনে মিলে ক্লাব হাউসের লোয়ার টিয়ার রীতিমতো জমিয়ে রাখল।


লক্ষ্মীরতনের দুই পুত্র। বড় ছেলে অগ্যস্ত। বিতান নামেই সকলের কাছে বেশি পরিচিত। হাওড়া ডিপিএসের ক্লাস এইটের ছাত্র। তবে পড়াশোনা নয়, বিতানকে বেশি টানে খেলাধুলো। বাবার মতোই পেসার-অলরাউন্ডার। বিতান বলছিল, 'পড়াশোনার চেয়েও ক্রিকেট আমার বেশি প্রিয়। বড় হয়ে ক্রিকেটার হতে চাই।' আলিপুরের হয়ে খেলে বিতান। অনূর্ধ্ব ১৮ ও অনূর্ধ্ব ১৫ পর্যায়ে খেলেছে। স্বপ্ন, বাংলা ও ভারতীয় দলে খেলারও। আর পাঁচজন খুদের মতোই। মা প্রশাসনের উচ্চপদে। মায়ের ভয়ে অবশ্য পড়াশোনাতেও মন দিতে হচ্ছে ছোট্ট বিতানকে।


উৎসব বাংলার অনূর্ধ্ব ১৩ দলের অধিনায়ক। পড়াশোনা এশিয়ান স্কুলে। সাহাপুরের হয়ে ক্রিকেট খেলে।


তবে তিন খুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চঞ্চল শ্রেয়াংশ। সৌরাশিস-পুত্রও অফস্পিন বল করে। হাওড়া ডিপিএসে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। প্রিয় ক্রিকেটার কে? শ্রেয়াংশ বলছে, 'শেন ওয়াটসন।' বিতানের প্রিয় ক্রিকেটার? 'ডেল স্টেন।' বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার ইন্দুভূষণ রায়, রাকেশ কৃষ্ণণদের তত্ত্বাবধানে চলছে তিন কিশোরের ক্রিকেটের পাঠ। সঙ্গে বাবা-কাকারা তো আছেনই।


রঞ্জি ম্যাচ দেখতে বেশি ভাল লাগে, না আইপিএল? তিন কিশোরের জবাব ক্রিকেটপ্রেমী হিসাবে মন ভাল করে দিতে বাধ্য। এক সুরে বলছে, 'রঞ্জি ট্রফি। লাল বলের ক্রিকেট দেখতে খুব ভাল লাগে।'


তিন খুদের উন্মাদনা যেন ছুঁয়ে গেল ক্রিকেটের নন্দনকাননকেও।


আরও পড়ুন: পারিবারিক সমস্যাতেও লক্ষ্যে অটল, শামির তত্ত্বাবধানে বাংলায় তৈরি হচ্ছে নতুন পেস-অস্ত্র


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে