নয়াদিল্লি:সদ্যসমাপ্ত অস্ট্রেলিয়া সফরে একের পর এক প্রথমসারির খেলোয়াড় চোট পেয়েছেন। প্রথম টেস্টের পর পিতৃত্বকালীন ছুটির জন্য দলে ছিলেন না অধিনায়ক বিরাট কোহলি। কিন্তু এরপরও প্রথম টেস্টে ৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া ও হারের ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। প্রথমসারির ক্রিকেটাদের ছাড়াই কার্যত ভাঙা দল নিয়েই গাব্বা টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ জেতে ভারত।
দেশে ফিরে দলের পেসার মহম্মদ সিরিজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন হেড কোচ রবি শাস্ত্রী। তিনি সিরাজকেই অস্ট্রেলিয়া সফরের আবিষ্কার বলে মন্তব্য করেছেন। শুক্রবার ট্যুইট করে শাস্ত্রী বলেছেন, বোলিং আক্রমণের দায়িত্ব সিরাজ যেভাবে পালন করেছে, তাতে অস্ট্রেলিয়া সফরেও ও-ই ভারতের আবিষ্কার। সিরাজ সফর চলাকালেই ওর বাবাকে হারিয়েছে। বর্ণবিদ্বেষমূলক টিপন্নি সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু সমস্ত কিছু প্রতিকূলতাকে দলকে সহায়তার কাজে বদলে ফেলেছে।


উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় চার টেস্টের সিরিজে সিরাজ বল হাতে দারুণ পারফর্ম করেছেন। মোট ১৩ উইকেট নিয়েছেন। ব্রিসবেনে নির্ণায়ক টেস্টে সিরাজ একটি ইনিংসে পাঁচ উইকেট দখল করেন। সিরাজ সহ অন্যান্য তরুণদের চমকপ্রদ পারফরম্যান্সে ভর করে ভারত ২-১ সিরিজ জিতে নিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় বিজয় পতাকা উড়িয়ে দলের সঙ্গে দেশে ফিরেই প্রয়াত বাবার সমাধিতে ছুটে যান সিরাজ। এই তরুণ ফাস্ট বোলার ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েই তা কাজে লাগিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ায় কাজটা একেবারেই সহজ ছিল না সিরাজের কাছে। অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয় দলের সফর চলাকালেই সিরাজের বাবার মৃত্যু হয়। কঠিন কোয়ারেন্টিন বিধির কারণে সিরাজ তাঁর বাবার শেষকৃত্যে সামিল হতে দেশে ফিরতে পারেননি। পুরো সিরিজেই তাঁর প্রতিটি ভালো পারফরম্যান্সেই বাবাকে স্মরণ করেছেন সিরাজ।

ভারতীয় দলের সদস্য হিসেবে ছেলের অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় ফুসফুসের অসুখে ভুগে লড়াইয়ের পর মৃত্যুর কাছে হার মানেন সিরাজের ৫৩ বছরের বাবা মহম্মদ ঘাউস। সিরাজের বাবা ছিলেন অটোরিক্সা চালক। কিন্তু ছেলেকে সফল ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলতে কঠোর পরিশ্রম ও আত্মত্যাগ করেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে সোজা বাবার সমাধিতে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিরাজ। তিনি বলেছেন, আমার বাবার বরাবরের ইচ্ছা ছিল যে, তাঁর ছেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। বাবার মৃত্যু আমার কাছে বড় একটা ধাক্কা। আমি আমার জীবনে সবচেয়ে বড় ভরসাকে হারিয়েছি। তাঁর স্বপ্ন ছিল, আমি দেশের হয়ে খেলি। এই কথাটা যে বুঝতে পেরেছি, এতে আমি সন্তুষ্ট। আমি তাঁকে খুশি করতে পেরেছি বলে আমি খুশি।