চণ্ডীগড়: মন্টি পানেসর, গুরিন্দর সান্ধু, ইশ সোধীর পর আরও এক পঞ্জাবি ক্রিকেটার বিদেশি দলের হয়ে খেলছেন। এই ক্রিকেটারের নাম সিমরনজিৎ সিংহ। তিনি আয়ারল্যান্ডের জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন। এ বছরের মে-তে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে সিমরনজিতের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে আয়ারল্যান্ডের একটিমাত্র টি-২০ ম্যাচের দলেও আছেন তিনি। ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ না পেলেও, সদ্য টেস্ট খেলার যোগ্যতা পাওয়া আয়ারল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলাই এখন সিমরনজিতের লক্ষ্য।

সিমরনজিতের বাবা অমরজিৎ সিংহ বলেছেন, ‘পঞ্জাবের অনূর্ধ্ব-১৪ ও অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে ভাল পারফরম্যান্স দেখিয়েছিল সিমরনজিৎ। ২০১১ সালে বিজয়ওয়াড়ায় অনুষ্ঠিত হওয়া ৪৬তম জাতীয় স্কুল গেমসের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিল ও। ২০০৪ সালে পঞ্জাবের আন্তঃজেলা অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে ও ৭২৫ রান করেছিল। কিন্তু তারপরেও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সুযোগ পায়নি।’

সিমরনজিতের কোচ ভারতীয় ভিজ বলেছেন, ‘ও যথেষ্ট পরিশ্রম করছিল। ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে ভাল পারফরম্যান্স দেখাচ্ছিল। ওর টেকনিকও ভাল ছিল। কিন্তু পঞ্জাবে ওর যোগ্যতার প্রতি সুবিচার করা হয়নি।’

ভারতের হয়ে খেলার স্বপ্ন সফল না হওয়ায় হতাশায় ভেঙে পড়েছিলেন সিমরনজিৎ। তিনি ২০০৫ সালে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার জন্য আয়ারল্যান্ড পাড়ি দেন। তবে তাঁর বন্ধু ও প্রাক্তন সতীর্থ গৌরব বোঝান, আয়ারল্যান্ডে পড়ার পাশাপাশি খেলারও সুযোগ রয়েছে। বন্ধুর কথাতেই খেলা চালিয়ে যান সিমরনজিৎ। সেভাবে খেলতে খেলতেই আয়ারল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে তিনি জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন।

সিমরনজিৎ বলেছেন, ‘ভারতের হয়ে খেলার স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ায় আমার মতোই পরিবারের সবাই ভেঙে পড়েছিল। তবে আয়ারল্যান্ডে গিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি সপ্তাহান্তে ক্রিকেট খেলতাম। প্রতি ম্যাচ খেলার জন্য আমাকে ৫ ইউরো করে দিতে হত। ক্রিকেট খেলা যাতে চালিয়ে যেতে পারি, তার জন্য একটা দোকানে কাজ করতাম।’

আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার এক বছরের মধ্যেই ডাবলিনের ম্যালাহাইড ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে খেলার সুযোগ পান সিমরনজিৎ। ২০০৮ সালে প্রথম আইপিএল-এর আগে তিনি ভারতে ফেরেন। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবে ট্রায়ালও দেন। কিন্তু সেখানেও সুযোগ মেলেনি। তাই ফের আয়ারল্যান্ডে চলে যান এই ক্রিকেটার। দেশে কদর না পেলেও, বিদেশে যথেষ্ট সফল তিনি।