কলকাতা: মেডিক্যাল রিপোর্ট সন্তোষজনক, রবিবার সকালেই বাড়ি ফিরছেন মহারাজ। আজ অ্যাপোলো হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়, স্টেন্ট বসানোর পর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। তাঁর শারিরীক অবস্থার উন্নতিতে সন্তুষ্ট চিকিৎসকরাও। তবে বাড়িতে থাকলেও নিয়মিত চিকিৎসা চলবে বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের।


গত বুধবার হঠাৎ বুকে ব্যথা নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার, তাঁর শরীরে দুটি স্টেন্ট বসানো হয়। এর জন্য কলকাতায় আসেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি এবং মুম্বইয়ের যশলোক হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিত্‍সক অশ্বিন মেহতা। তাঁদের তত্ত্বাবধানেই বসানো হয় স্টেন্ট।

এরপর শুক্রবারই সৌরভকে আইসিইউ থেকে জেনারেল কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। অ্যাপোলো হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত খোশমেজাজে আছেন সৌরভ। স্ত্রী ডোনা ও মেয়ে সানার সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন। মোবাইল ফোনেও কথা বলেছেন পরিচিতদের সঙ্গে। তবে মোবাইল ফোন থাকছে স্ত্রীর কাছেই।

শনিবার সকালেও চিকিত্‍সক আফতাব খান তাঁকে পরীক্ষা করেন। চিকিত্‍সকরা জোর দিচ্ছেন বিশ্রামের ওপর। বাড়ি ফিরলেও যাতে বিসিসিআই সভাপতি কিছুদিন বিশ্রাম নেন, তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে অ্যাপোলো হাসপাতাল সূত্রে খবর।

প্রসঙ্গত, গত ২ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হন সৌরভ! তাঁর তিনটি ধমনীতে ব্লকেজ ধরা পড়ে। ডান দিকের ধমনীতে প্রায় ৯০ শতাংশ ব্লকেজ ছিল। যেখানে স্টেন্ট বসানো হয়েছে। বাকি দু’টি ধমনীতে ব্লকেজ প্রায় ৭০ শতাংশ। গতকাল হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি জানান, শরীরের মধ্যে কেমিক্যাল চেঞ্জ হয়ে এমন ব্লকেজ হতে পারে। নির্দিষ্ট কারণ নেই। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির পর মহারাজের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করতে উডল্যান্ডস হাসপাতালে যান প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি। তখন হাসপাতালেই ছিলেন সৌরভের স্ত্রী ডোনা এবং দাদা স্নেহাশিস। প্রথমেই ৯ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে কথা বলেন চিকিৎসক দেবী শেট্টি। এরপর তিনি সৌরভের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখেন। দেবী শেট্টি বলেন, "ওকে ঠিক সময়ে আনা হয়েছিল, ডাক্তাররা যে ট্রিটমেন্ট করেছেন, একদম ঠিক, এটা খুব একটা বড় সমস্যা তৈরি করবে না, কোনও বড় রকম সমস্যা নেই, কোনওরকম সমস্যা তৈরি করবে না, বাড়ির যাওয়ার পরদিন থেকেই ও কর্মজীবনে ফিরতে পারবে, যে ব্লকেজ তৈরি হয়েছে, ও যেহেতু ফিট, তাই অল্প ব্লকেজ, যে কোনও সাধারণ মানুষের ৪০ পেরোলেই চেকআপে থাকা উচিত।"

তবে সৌরভের অসুস্থতার পরই নানা মহলে এই প্রশ্নও উঠছে, সৌরভের ওপর কি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জন্য কোনও চাপ তৈরি হয়েছিল? তার জেরেই কি হঠাৎ‍ অসুস্থ হয়ে পড়েন? আর তাই প্রত্যাশিতভাবেই দেবী শেট্টির কাছে এই প্রশ্নও করা হয়েছিল, বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতিতে কি সৌরভ রাজনীতিতে নামতে পারবেন? অত্যন্ত কৌশলে সেই প্রশ্ন এড়িয়ে যান বিশিষ্ট এই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।