ঝিলম করঞ্জাই,কলকাতা: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে জেনারেল কেবিনে সরানো হল। অ্যাপোলো হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দুটি স্টেন্ট বসানোর পর রাতে কোনও সমস্যা হয়নি তাঁর। এদিন সকালে তাঁকে পরীক্ষা করেন চিকিৎসক আফতাব খান-সহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা। সবকিছু খতিয়ে দেখার পর, আইসিইউ থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে জেনারেল কেবিনে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রাতে কোনও সমস্যা হয়নি সৌরভের ৷ সকালে ব্রেকফাস্টও করেছেন মহারাজ ৷ সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, রবিবার ছুটি পেতে পারেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।


সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হার্টে বসানো হয়েছে ড্রাগ ইলিউটিং স্টেন্ট। চিকিৎসকদের পরামর্শ, আগামী একটা বছর খুব সাবধানে থাকতে হবে মহারাজকে। নিয়ম করে খেতে হবে ওষুধ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হৃদযন্ত্রে ব্লকেজ সারাতে আরও দু’টি স্টেন্ট বসানো হয়েছে। চিকিৎসকরা বৃহস্পতিবারই দাবি করছিলেন, সফল হয়েছে গোটা প্রক্রিয়া। চিকিৎসক আফতাব খান জানান, ‘‘অপারেশন সফল, সৌরভ ঠিক আছেন...৷’’



আগেরবারের মতো এবারও সৌরভের হার্টে ব্লকেজ থাকা দু-টি ধমনীতে ড্রাগ ইলিউটিং স্টেন্ট বসানো হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে এটাই সৌরভের শরীরের পক্ষে উপযুক্ত। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শুভাশিস রায়চৌধুরী জানাচ্ছেন, ‘‘প্রথমে প্রাইমারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়েছিল। ওটাই ছিল বেস্ট পসিবল ওয়ে। হার্টের পেশীকে ভাল রাখতে এবং রক্তের প্রবাহ চালু করতে এটা করা হয়েছিল। সেটা করার সময় দেখা যায় আরও দুটো ব্লকেজ আছে, সেই দুটোয় আঝ স্টেন্ট বসানো হয়েছিল। স্টেন্ট বসানো মানে ব্লাড ফ্লো নর্মাল হয়ে গিয়েছে। এবার তিনি অ্যাকটিভ লাইভ লিড করতে পারবেন কিনা, সেটা নির্ভর করছে হার্ঠের পাম্পিং ক্ষমতার উপর ৷’’


শরীরে স্টেন্ট বসেছে। এরপর কোন কোন দিকে খেয়াল রাখতে হবে মহারাজকে? তিনটি স্টেন্ট বসানোর পর আবার কোনও সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে কি? হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নবারুণ রায় বলেছেন, ‘‘স্টেন্ট মানে হচ্ছে একধরনের মেটাল টিউব। প্রথম একবছর খুব গুরুত্বপূর্ণ শরীর এটাকে সবসময় নিতে চায় না। তাই রক্ত তরল করার ওষুধ আমরা হায়ার ডোজ একবছর দিই। এগুলিকে খুব নিয়ম মেনে খেতে হবে। ১-২ শতাংশ চান্স থাকে স্টেন্টের মধ্যে রক্ত জমাট বেধে যাওযার এবং ক্লোরেসস্টরেজ জমে ব্লকেজ হওয়ার। মানুষ যদি নিয়ম মেনে ওষুধ খান তাহলে ভাল থাকবেন।’’


সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার কলকাতায় আসেন বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি। সৌরভকে দেড় ঘণ্টা ধরে পরীক্ষা করেন তিনি। মুম্বইয়ের যশলোক হাসপাতালের হদরোগ বিশেষজ্ঞ অশ্বিন মেহতাও সৌরভের জন্য কলকাতায় আসেন। তারপরই শুরু হয় চিকিৎসকদের বোর্ড মিটিং। এক ঘণ্টার মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় যে এদিনই বসানো হবে দুটি স্টেন্ট।


পৌনে তিনটের সময় সৌরভকে ক্যাথল্যাবে নিয়ে যাওয়া হয়। ৩টে ১০ থেকে শুরু হয় অ্যাঞ্জিওগ্রাম। অ্যাঞ্জিওগ্রামের পরই দুটি স্টেন্ট বসানো হয়। দেবী শেঠি, অশ্বিন মেহতার উপস্থিতিতে অস্ত্রোপচার করেছেন আফতাব খান।