কলকাতা: তিনি অধিনায়ক থাকাকালীন সামলাতে হয়েছে যুবরাজ সিংহ, হরভজন সিংহ, বীরেন্দ্র সহবাগদের মতো ক্রিকেটারদের। যাঁরা খুব একটা সুবোধ বালক ছিলেন বলে খবর নেই। বরং ভারতীয় দলে তাঁদের সতীর্থরা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এই ত্রয়ীর খুনসুটি গোটা দলকে তটস্থ করে রাখত।


তবে অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) তটস্থ থাকতেন আর একজনকে নিয়ে। যাঁকে কোনও ম্যাচে বাদ দেওয়া মানে অবধারিতভাবে দিনের শেষে বিক্ষোভ সামলাতে হতো। বিক্ষোভ দেখাতেন স্বয়ং সেই বাদ পড়া ক্রিকেটার।


আশিস নেহরা (Ashish Nehra)। দল থেকে বাদ পড়লেই যিনি অধিনায়কের ঘরে ছুটতেন। জবাবদিহি চাইতে। কেন তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে?


এক সাক্ষাৎকারে সৌরভ নিজেই জানিয়েছেন সেই ঘটনা। জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, 'আশিসকে কোনও ম্যাচে খেলানো না হলে ম্যাচের শেষে অবধারিতভাবে আমার ঘরে আসত। জিজ্ঞেস করতো, দাদা, আমাকে বাদ দিলে কেন? আমি ঘণ্টায় দেড়শো কিলোমিটার গতিতে বল করছি। ভাল স্যুইং পাচ্ছি। তাহলে কেন বাদ?'


অবশ্য সতীর্থকে শান্ত করার দাওয়াইও জানা ছিল সৌরভের। তিনি নিজেই বলেছেন, 'কোনও ম্যাচে আশুকে (সতীর্থরা এই নামেই ডাকতেন আশিস নেহরাকে) বাদ দেওয়া মানেই আমি জানতাম, দিনের শেষে ও আমার ঘরে আসবে। আমি তাই মাঠ থেকে টিম হোটেলে ফিরেই দু কাপ চা রুম সার্ভিসে অর্ডার করতাম। আশু এলেই বলতাম, আগে চা খা। তারপর কথা বলছি।' সৌরভ যোগ করেছেন, 'আশু আসত। তারপর চা খেতে খেতে কথা হতো। ওকে বলতাম, তুই ভালই বল করছিস। পরের ম্যাচে নিশ্চয়ই খেলবি। তবে এই মানসিকতা আমার ভাল লাগত। ওরা এমন ক্রিকেটার ছিল, যারা খেলতে চাইত। দলের হয়ে অবদান রাখতে চাইত।'


নেহরার সাহসিকতার কথাও জানিয়েছেন সৌরভ। বলেছেন, '২০০৩ বিশ্বকাপের ঘটনা। নামিবিয়া ম্যাচে বল করার সময় দক্ষিণ আফ্রিকার হার্ড পিচে পা পিছলে পড়ে গেল। আসলে জুতোর স্পাইক হার্ড পিচে মাটিতে গাঁথেনি। ম্যাচের শেষে দেখলাম ওর গোড়ালি ফুলে ঢোল। দুদিন বাদেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ। আমি বললাম, তুই পারবি তো? আশু বলল, হ্যাঁ দাদা, চিন্তা কোরো না। আমি খেলব। আমি বললাম, তুই দেড়শো কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে বল করতে পারবি? ও বলল, হ্যাঁ পারব। তুমি শুধু ফিজিওকে পাঠিয়ে দাও।'


সেই ম্যাচে খেলেছিলেন নেহরা। ২৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে তছনছ করে দিয়েছিলেন। সৌরভ বলছেন, 'আশু জিততে মরিয়া থাকত। সব সময় আগ্রাসী থাকত।'


আরও পড়ুন: স্পেন সফরে গিয়ে প্রথম ম্যাচেই হকিতে ২-১ ব্য়বধানে হার ভারতের