কলকাতা: পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপে (Asia Cup) চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। অস্ট্রেলীয় ওপেনে খেলার ছাড়পত্র পেতে পারেন নোভাক জকোভিচ (Novak Djokovic)। খেলার দুনিয়ার সব খবর এক ঝলকে।


চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা


গোটা একটা দেশ জ্বলছে। রাস্তায় রাস্তায় শুধু প্রতিবাদীদের মিছিল। জনজীবন বিপর্যস্ত। সাধারণ মানুষ যাতে দু'বেলা দু'মুঠো খেতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে এগিয়ে এসেছেন কুমার সঙ্গকারা থেকে শুরু করে দেশের প্রাক্তন কিংবদন্তি ক্রিকেটারেরা। রাজনৈতিক অশান্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, আয়োজক হলেও এবারের এশিয়া কাপ (Asia Cup) দেশের মাটিতে করতেই পারেনি শ্রীলঙ্কা। বাধ্য হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে টুর্নামেন্ট সরিয়ে নিয়ে যেতে।


আর চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলায় জর্জরিত দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটালেন দাসুন শনাকারা। বিধ্বস্ত রোজনামচায় ফিরল সাময়িক স্বস্তি। ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে এশিয়া সেরার মুকুট ছিনিয়ে নিল শ্রীলঙ্কা। ফেভারিট হিসাবে ফাইনালে নামলেও বাবর আজমদের জন্য বরাদ্দ রইল শুধুই হতাশা। শ্রীলঙ্কার ১৭০/৬ তাড়া করতে নেমে ১৪৭ রানে অল আউট পাকিস্তান (SL vs Pak)।


অস্ট্রেলীয় ওপেনে জোকার!


করোনার টিকা নেননি তিনি। যে কারণে চলতি বছরের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে পারেননি নোভাক জকোভিচ (Novak Djokovic)। আইনি লড়াইয়ের পরে অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল নোভাককে। অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের জন্য তাঁর উপর আরোপিত হয়েছিল তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলেও বা তিনি এখনও করোনার টিকা না নিলেও পরের বছর অস্ট্রেলীয় ওপেনে খেলার ছাড়পত্র পেতে চলেছেন নোভাক জকোভিচ। সূত্রের খবর, নোভাককে ছাড়পত্রও দেওয়া হয়েছে।


গত মে মাসেই অস্ট্রেলিয়ায় ক্ষমতায় এসেছে নতুন সরকার। তারা তাদের নয়া অভিবাসন নীতিও চালু করেছে। নোভাকের উপর অস্ট্রেলিয়াতে যে তিন বছর প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা তারা প্রত্যাহার করে নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর। নয়া অভিবাসন মন্ত্রী অ্যান্ড্রু জাইলস স্বয়ং এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে জকোভিচকে সে দেশের সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই অস্ট্রেলীয় সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে বলে জানানো হয়েছে।


ফিঞ্চের শেষ ম্যাচে জয়


পড়শি নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ আগেই নিজেদের নামে করেছিল অস্ট্রেলিয়া (AUS vs NZ)। তবে সিরিজের শেষ ম্যাচে দলের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে (Aaron Finch) ম্যাচ জিতেই বিদায় জানাতে সচেষ্ট ছিল অজিরা। নিজেদের সেই লক্ষ্যে সফলও হল তারা। ২৫ রানে ম্যাচ জিতে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল অস্ট্রেলিয়া। অজিদের জয়ের নায়ক স্টিভ স্মিথ (Steve Smith)। মন্থর পিচে নায়কোচিত শতরান করেন স্মিথ।


শাহবাজের দাপট


দলীপ ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে (Duleep Trophy) উত্তরাঞ্চলের বিরুদ্ধে এক হতাশাজনক ড্রয়ে করেই সন্তুষ্ট থাকতে হল মনোজ তিওয়ারির নেতৃত্বাধীন পূর্বাঞ্চলকে (East Zone vs North Zone) । প্রথম ইনিংসে উত্তরাঞ্চল লিড নিতে সক্ষম হওয়ায় মনোজদের মাত দিয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করল উত্তরাঞ্চল। তবে পূর্বাঞ্চলের হতাশার দিনেও প্রভাবিত করলেন বাংলার দুই ক্রিকেটার, অভিষেক পোড়েল এবং শাহবাজ আহমেদ। 


গতকাল যশ ধুলের অনবদ্য ১৯৩ রানের সুবাদে উত্তরাঞ্চল দিনের শেষে তিন উইকেটে ৪৩৩ রান তুলে ফেলেছিল। উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংসে লিড পেয়ে যাওয়ায় এবং ম্যাচে মাত্র একদিন অবশিষ্ট থাকার ফলে, ফলাফল মোটামুটি আগেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। শেষদিনে পূর্বাঞ্চল কতটা লড়াই করতে পারে, সেটাই দেখার ছিল। পূর্বাঞ্চলের হয়ে লড়াইটা করলেন বাংলার শাহবাজ। ৮৬ রানের বিনিময়ে পাঁচটি উইকেট তুলে নেন বাঁ-হাতি স্পিনার। তাঁর বোলিংয়ের দাপটেই ম্যাচের শেষদিনে ১১২ রানেই সাত উইকেট হারায় উত্তরাঞ্চল।


পাক প্রাক্তনীর তোপ


এশিয়া কাপের আগে পর্যন্ত বিরাট কোহলির (Virat Kohli) ফর্ম নিয়ে চর্চার অন্ত ছিল না। প্রায় তিন বছর ভারতীয় দলের হয়ে একটি শতরান না করায় অনেকেই বিরাটের দলে জায়গা পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলছিলেন বটে। তবে এশিয়া কাপেই রাজকীয় মেজাজে ফিরে এসেছেন 'কিংগ কোহলি'। বহু অপেক্ষার পর আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৭১তম শতরান তো এসছেই, পাশাপাশি দুইটি অর্ধশতরান করেও ফর্মে ফেরার আভাস দিয়েছেন বিরাট কোহলি। তবে এশিয়া কাপটা ভাল কাটলেও গত বিশ্বকাপ থেকে এখনও পর্যন্ত সময়টা সব মিলিয়ে কোহলির জন্য খুব একটা সুখকর হয়নি।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষেই বিশ ওভারের ফর্ম্যাটে ভারতের অধিনায়কত্ব ছাড়েন কোহলি। এরপর তুমুল বিতর্কের মাঝে তাঁকে ওয়ান ডে দলের নেতৃত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে টেস্ট অধিনায়কত্বকেও আলবিদা জানান কোহলি। এইসবের মধ্যেই তাঁর সঙ্গে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) মন কষাকষি এবং বিরোধের জল্পনা বারবার খবরের শিরোনাম দখল করে। এবার সরাসরি সৌরভের বিরুদ্ধেই গুরুতর অভিযোগ আনলেন প্রাক্তন পাকিস্তান অধিনায়ক রশিদ লতিফ (Rashid Latif)। তাঁর মতে সৌরভ বিসিসিআইয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সব থেকেই সবকিছু এলোমেলো হওয়া শুরু হয় এবং ইচ্ছা করেই বিরাটকে বিপাকেও ফেলা হয়।


লড়াই উপভোগ করছেন ভরত


বৃষ্টিতে ভারত এ বনাম নিউজিল্যান্ড এ (Ind A vs NZ A) দ্বিতীয় চারদিনের ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হল। গোটা ম্যাচে মাত্র ৭৮.৩ ওভার খেলা হয়েছে। ভারত ২২৯/৬ স্কোরে প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার দেওয়ার পর নিউজিল্যান্ড এ দল ১২.৩ ওভারে ৩৯/২ তোলে। একটি উইকেট নিয়েছেন বাংলার পেসার মুকেশ কুমার (Mukesh Kumar)।


ভারত এ বনাম নিউজিল্যান্ড এ দলের প্রথম ম্যাচও অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়েছিল। ফলে তিনটি চারদিনের ম্যাচের সিরিজের ফয়সালা নির্ভর করে থাকবে তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচের ওপর।


দ্বিতীয় ম্যাচ বৃষ্টির জন্য একদিনও পুরো খেলা হয়নি। তবে ভারতের হয়ে প্রথম ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার কে এস ভরত (অপরাজিত ৭৪ রান) হতাশ নন। বলছেন, 'আবহাওয়ার ওপর কারও হাত নেই। বৃষ্টির মধ্যেও ম্যাচ করার খুব চেষ্টা করেছিলেন মাঠকর্মীরা। অনেক মানুষ এই আবহাওয়াতেই খেলা দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু প্রকৃতির ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই।'


ভরত যোগ করেছেন, 'উইকেট ভাল ছিল। ব্যাটাররা শৃঙ্খলা মেনে খেললে রান পেয়েছে। আমার ও শার্দুলের পার্টনারশিপ ভাল হয়েছিল। নিউজিল্যান্ড রান খরচ করে না। ওদের বোলারদের বিরুদ্ধে পরিশ্রম করে রান অর্জন করতে হয়।'


জাতীয় টেস্ট দলে ঋদ্ধিমান সাহার বিকল্প মনে করা হচ্ছে কে এস ভরতকে। ঋদ্ধিমানকে জাতীয় দল থেকে ছেঁটে ফেলার সময় জানা গিয়েছিল, জাতীয় দলের হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় বঙ্গ উইকেটকিপারকে বলেছিলেন যে, তাঁরা ভরতকে দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসাবে তৈরি করতে চান। যা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল।


ভরত অবশ্য দলে সুযোগ পাওয়ার লড়াই উপভোগ করছেন। বলেছেন, 'ভারত এ দল দারুণ একটা মঞ্চ। এখানে নিজেদের পরীক্ষা করে নেওয়ার সুযোগ থাকে। জাতীয় দলে ডাক এলে তার আগে যেন নিজেদের প্রাথমিক ব্যাপারগুলো ঠিক রাখা যায়। ভি ভি এস লক্ষ্মণ স্যারও সেটা বলেন।' যোগ করেছেন, 'ভারতীয় দলে জায়গা পেতে লড়াই করতেই হবে। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা ভাল। সাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, ঋদ্ধিমান সাহা তারপর ঋষভ পন্থ, আমি, আমরা সকলেই এই লড়াই ভালবাসি। উপভোগ করি।'


ক্ষুব্ধ হরমনপ্রীত


ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হেরে ক্ষোভ উগরে দিলেন ভারতীয় মহিলা দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর (Harmeenpreet Kaur)। জানালেন, খেলার উপযুক্ত পরিস্থিতিই ছিল না। 


ভারত বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে বৃষ্টি হয়। হরমনপ্রীতের অভিযোগ, মাঠ ভিজে ছিল। সেই মাঠে খেলতে নেমে চোট লেগে যাওয়ার আশঙ্কাও ছিল। একপ্রকার জোর করেই ম্যাচ খেলতে হয় ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলকে।


হরমনপ্রীত বলেছেন, 'যতটা রান তোলা উচিত ছিল তা আমরা পারিনি। আমার মনে হয়েছে আমরা জোর করে খেলেছি কারণ ক্রিকেটের জন্য পরিস্থিতি একশো শতাংশ উপযুক্ত ছিল না। তবু বলব মেয়েরা নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। চোট লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও ওরা মাঠে নামতে প্রস্তুত ছিল।'