কলকাতা: রবিবার মেলবোর্নে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তান-ইংল্যান্ড ম্যাচ ভেস্তে যেতে পারে বৃষ্টিতে। আইসিসি-র ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান থেকে গেলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। খেলার দুনিয়ার সব খবরের ঝলক।


কাঁটা আবহাওয়া


রবিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T20 World Cup) মহারণ। ফাইনালে মুখোমুখি পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। যে ম্যাচে বৃষ্টির ভ্রুকুটি ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। মেলবোর্নে টানা পাঁচদিন প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। যা শুনে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড, দুই শিবিরই চরম উদ্বেগে।


শনিবার থেকে মেলবোর্নে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। পিচ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তবে মাঠ জল থইথই। রবিবার সকাল থেকে শুরু হতে পারে ভারী বৃষ্টি। পাশাপাশি বইবে ঝোড়ো হাওয়া। অস্ট্রেলিয়া আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফাইনালের দিন অর্থাৎ রবিবার সকাল থেকেই আকাশ থাকবে মেঘলা। বেলায় শুরু হবে বৃষ্টি। সেই সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার। রবিবার আকাশ পরিষ্কার হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বৃ্ষ্টি হবে সোমবারও। কোনও কোনও জায়গায় অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।


নিয়ম বদল


গ্রুপ পর্ব এবং সুপার ১২-এ কোনও রিজার্ভ ডে ছিল না। তবে আইসিসির তরফে বিশ্বকাপের নক আউট ম্যাচগুলি অর্থাৎ দুই সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের জন্য রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ রবিরার ম্যাচ শেষ করা সম্ভব না হলে, সোমবার দিনেও খেলা হবে ফাইনাল। যদিও রবিবারই ম্যাচ শেষ করার সব প্রচেষ্টাই করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দলকে অন্তত ১০ ওভার খেলতে হবে। বৃষ্টির জন্য যদি তাও সম্ভব না হয়, একমাত্র সেক্ষেত্রেই খেলা সোমবার পর্যন্ত গড়াবে।
আইসিসির তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'রবিবার ম্যাচ শেষ করার সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা করা হবে এবং প্রয়োজনে ওভারও কমানো হবে। একমাত্র যদি রবিবার সবথেকে কম ওভারের ম্যাচ খেলাও সম্ভব না হয়, তাহলেই তা সোমবার পর্যন্ত গড়াবে। যদি সোমবার খেলা হয়, তাহলে রবিবার যেখানে ম্যাচ থামবে, সেখান থেকেই আবার খেলা শুরু হবে। রবিবার ম্যাচ শেষ করার জন্য বাড়তি ৩০ মিনিট দেওয়া হবে। সোমবার ম্যাচ শেষ করার জন্য বাড়তি চার ঘণ্টার সময় থাকবে।'


তবে ম্যাচ টাই হলে বা কোনওভাবেই দুইদিনেও ম্যাচ শেষ করা সম্ভব না হলে, তখন বিশ্বকাপ জিতবে কোন দল? আইসিসির তরফে জানানো হয়েছে, 'ম্যাচের শেষে স্কোর টাই থাকলে সুপার ওভার হবে এবং যদি পরিবেশে এতে বিঘ্ন সৃষ্টি করে এবং সুপার ওভার সম্ভব না হয়, তখন পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপের যুগ্ম বিজেতা ঘোষণা করা হবে।'


আইসিসি কমিটিতে থাকলেন সৌরভ


আইনি বাধা না থাকলেও, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (BCCI) মসনদ থেকে কার্যত সরতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এখন বোর্ডের কোনও পদে নেই। একটা সময় মনে করা হয়েছিল, তিনি আইসিসি চেয়ারম্যান হতে পারেন। কিন্তু সেখানে নিজের দেশের সমর্থনই পাননি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)।


তবে আইসিসি-তে থেকে গেলেন সৌরভ। এবং গুরুত্বপূর্ণ পদেই। ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান পদে থেকে গেলেন সৌরভ। গোটা বিশ্বে ক্রিকেট ছড়িয়ে দিতে এবং ক্রিকেটের প্রসার বাড়াতে এই কমিটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, ক্রিকেট সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও নিয়ে থাকে এই কমিটি।


ধোনি-শাহ সাক্ষাৎ


একটা করমর্দন জল্পনা উস্কে দিয়ে গিয়েছে।


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) সঙ্গে করমর্দন করতে দেখা গিয়েছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে (MS Dhoni)। যে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। আর সেই সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে আলোচনা। ধোনি কি তবে বিজেপি-তে (BJP) যোগ দিচ্ছেন? নেটিজেনরা আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষায় রয়েছেন।


ভয়ঙ্কর অভিযোগ


তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। আপাতত পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। মামলা চলছে। তবে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার দানুষ্কা গুণতিলকা (Danushka Gunathilaka) আরও বিপাকে। কারণ, যে মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর একটি বয়ান পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই মহিলা অভিযোগ করেছেন, যৌন হেনস্থার সময় তাঁকে বারবার শ্বাসরোধ করা হচ্ছিল। এমনকী, তিনি প্রাণ সংশয়ে ভুগছিলেন বলে পুলিশকে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছেন ওই মহিলা।


ঘটনার পরের দিন তাঁর মস্তিষ্কে কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, তা জানার জন্য ওই মহিলার সিটি স্ক্যান করা হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ সূত্রে খবর, বিকৃত যৌনতার শিকার হয়েছিলেন বলে ওই মহিলা অভিযোগ করেছেন।


পাঠানের জবাব


টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) থেকে ভারতের বিদায়কে বিদ্রুপ করেছিলেন তিনি। পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে সে জন্য পাল্টা কথা শোনালেন প্রাক্তন অলরাউন্ডার ইরফান পাঠান (Irfan Pathan)।


টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে ভারতের লজ্জাজনক হারের পর বিদ্রুপ করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি ইঙ্গিতপূর্ণভাবে ট্যুইট করেছিলেন, 'তাহলে এই রবিবার ১৫২/০ বনাম ১৭০/০।' 


কেন এরকম ট্যুইট?


পাকিস্তান এর আগে ওপেনিং জুটিতে ভারতের বিরুদ্ধে বিনা উইকেটে ১৫২ তুলেছিল। গত টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের ১৫২ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের হয়ে দুই ওপেনার বাবর আজম এবং মহম্মদ রিজওয়ান করেছিলেন যথাক্রমে ৬৮ এবং ৭৯ রান। কোনও উইকেট না হারিয়ে ভারতকে হারিয়েছিল পাকিস্তান।
প্রায় সেই একই কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে। সেমিফাইনালে ভারতের ১৬৯ রানের লক্ষ্য বিনা উইকেটে তুলে দিয়েছেন দুই ইংরেজ ওপেনার জস বাটলার (৪৯ বলে অপরাজিত ৮০ রান) এবং অ্যালেক্স হেলস (৪৭ বলে অপরাজিত ৮৬ রান)। চার ওভার বাকি থাকতেই ভারতীয় বোলারদের পিটিয়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে দেন দুই ইংরেজ ওপেনার।


পাক প্রধানমন্ত্রী সেই লজ্জাজনক কাণ্ডের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন নিজের ট্যুইটে। বোঝাতে চেয়েছেন, ভারতকে বিপুল ব্যবধানে হারানো দুই দল এবার ফাইনালে মুখোমুখি। যদিও প্রধানমন্ত্রীর মতো দেশের সর্বোচ্চ সিংহাসনে বসে কোনও রাষ্ট্রনায়ক কীভাবে এরকম কটূক্তি করতে পারেন, তা নিয়ে অনেকেই সরব হয়েছিলেন।


পাক প্রধানমন্ত্রীর এমন ট্যুইটের পরেই পাল্টা দিলেন ইরফান পাঠান। রীতিমত তোপ দেগে পাঠান পাল্টা লিখে দেন, 'এখানেই আপনাদের সঙ্গে আমাদের তফাত। আমরা নিজেদের সাফল্যে খুশি হই। আর আপনারা অন্যের ব্যর্থতায় খুশি হন। এই কারণেই নিজের দেশের উন্নতিতে আপনি মনোযোগ দিতে পারছেন না।' 


বাংলার হার


বিজয় হাজারে ট্রফিতে (Vijay Hazare Trophy) নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরে গেল বাংলা (Bengal Cricket Team)। মুম্বইয়ের (Mumbai) বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল বাংলা। প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে বাংলাকে হারিয়ে দিল মুম্বই। অর্ধশতরান করে মুম্বইয়কে জয় এনে দেন দলের অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে। 


অল্প রানের পুঁজি ছিল। বোলারদের আঁটোসাঁটো বোলিংয়ের দরকার ছিল। কিন্তু যশস্বী জয়সওয়ালকে সঙ্গে নিয়ে দলের স্কোরবোর্ড সচল রাখার চেষ্টা করেন পৃথ্বী শ। ৩১ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান পৃথ্বী। জয়সওয়াল ১০ রান করে ফিরে গেলেও পৃথ্বী (২৬) ও হার্দিক তামোর (১৮) মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে এরপর দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। ৭২ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন রাহানে। নিজের ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি ও ২টো ছক্কা হাঁকান তিনি। ৩০.২ ওভারে ১২৩ রান বোর্ডে তুলে নেয় মুম্বই। বাংলার হয়ে ২ উইকেটই নেন মুকেশ কুমার। 


মুস্তাকে (Sayed Mustaq Ali Trophy) চ্যাম্পিয়ন মুম্বই (Mumbai) ছিল সামনে। লড়াইটা যে কঠিন হবে তা আগেই থেকেই জানা ছিল। কিন্তু বাংলার ব্য়াটিং লাইন আপ যে এভাবে হাল ছেড়ে দেবে তা কেউ ভাবেননি। বিজয় হাজারে ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল বাংলা। আর সেই ম্যাচেই প্রথমে ব্য়াট করে ১২২ রানে অল আউট হয়ে যায় বাংলা। একমাত্র কিছুটা লড়াই করেন অভিজ্ঞ তারকা ব্যাটার মনোজ তিওয়ারি।