কলকাতা: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা করল আইসিসি। রঞ্জি ট্রফির প্রথম দিনই বাংলার হয়ে সেঞ্চুরি অনুষ্টুপ মজুমদারের। তিতাস সাধুর চার উইকেটের দাপটে জয়ী ভারতের মেয়েরা। খেলার দুনিয়ার সারাদিন।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচি


জল্পনা ছিলই। অবশেষে শুক্রবার এল সিলমোহর। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup) ভারত বনাম পাকিস্তান হাইভোল্টেজ ম্যাচ হবে ৯ জুন, নিউ ইয়র্কের এইসেনহোয়ার পার্কে।


শুক্রবার টুর্নামেন্টের সূচি ঘোষণা করল বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি। গ্রুপ পর্বে ভারত তিনটি ম্যাচ খেলবে নিউ ইয়র্কে। একটি ম্যাচ হবে ফ্লোরিডায়। গতবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ওয়ান ডে ক্রিকেটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলবে ৮ জুন, বার্বাডোজে।


ক্রিকেটপ্রেমীরা মুখিয়ে ছিলেন ভারত বনাম পাকিস্তান (IND vs PAK) দ্বৈরথের সূচি জানার জন্য। যে ম্যাচকে মহারণ মনে করা হয়। ক্রিকেটপ্রেমীরা কৌতূহলের সঙ্গে অপেক্ষা করে থাকেন, কবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ বাইশ গজে একে অপরের মুখোমুখি হবে। আইসিসি-ও এই ম্যাচের প্রচার করতে থাকে। সম্প্রচারকারী চ্যানেলে বিজ্ঞাপন শুরু হয়, 'মওকা, মওকা...' টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ যে দুই দেশের দ্বৈরথই।


আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যুগ্মভাবে আয়োজন করবে আমেরিকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। ১ জুন শুরু হবে টুর্নামেন্ট। প্রথম ম্য়াচে আয়োজক দেশ আমেরিকা খেলবে কানাডার বিরুদ্ধে। ডালাসে হবে সেই ম্যাচ। ২৯ জুন ফাইনাল হবে বার্বাডোজে। দুটি সেমিফাইনাল হবে ২৬ ও ২৭ জুন। প্রথম সেমিফাইনাল হবে গায়ানায়। দ্বিতীয় সেমিফাইনাল হবে ত্রিনিদাদে।


চুঁচুড়া এক্সপ্রেসের দাপট


অনূর্ধ্ব ১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করার অন্যতম কারিগর তিনি। পরে এশিয়ান গেমসে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের সোনা জয়ের পিছনেও ছিল তাঁর অবদান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বল হাতে এবার জ্বলে উঠলেন বাংলার তিতাস সাধু। চুঁচুড়া এক্সপ্রেসের বলে ধরাশায়ী অস্ট্রেলিয়া। টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৯ উইকেটে হারাল ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল। যে জয়ের কারিগর বঙ্গতনয়া।


তিতাসের বোলিং পরিসংখ্যান ঈর্ষণীয়। ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন চুঁচুড়ার পেসার। তাঁর দাপটেই ১৯.২ ওভারে ১৪১ রানে অল আউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ১৪ বল বাকি থাকতে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যপূরণ করে ভারত।


টেস্টে শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া


এ যেন সাপ-সিঁড়ির লুডো। জুন মাসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে (Indian Cricket Team) হারিয়ে টেস্টে বিশ্বের এক নম্বর দল হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া (Australia)। সেই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন ট্র্যাভিস হেড। যিনি ওয়ান ডে বিশ্বকাপ ফাইনালেও ভারতের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেছিলেন। পরে অবশ্য অস্ট্রেলিয়াকে উৎখাত করে টেস্টে আইসিসি বিশ্ব ব়্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর দল হয়েছিল ভারত। ফের উলটপুরাণ। ভারতের সিংহাসন কেড়ে নিল অস্ট্রেলিয়া। আইসিসি ব়্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের সেরা টেস্ট দল হিসাবে উঠে এল তালিকার শীর্ষে।


ভারত ও অস্ট্রেলিয়া - দুই দলই ১১৮ রেটিংয়ে ছিল। তবে পয়েন্টে এগিয়ে ছিল ভারত। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ ১-১ ফলে শেষ হওয়ায় ভারত এক রেটিং পয়েন্ট হারায়। তাতেই শীর্ষে উঠে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। ভারত নেমে গিয়েছে দুই নম্বরে। অস্ট্রেলিয়া ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম দুই টেস্টেই জিতেছে। ১১৮ পয়েন্টেই রয়ে গিয়েছেন প্যাট কামিন্সরা।


স্বস্তিতে বাংলা


সেঞ্চুরির জন্য অনেক অভিনন্দন। সেই সঙ্গে যেভাবে অভিষেক ম্যাচে খেলতে নামা সৌরভ পালকে গাইড করলেন...


প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই মোবাইল ফোনের অপর প্রান্তের কণ্ঠস্বর বলে উঠল, 'গাইড তো দেব আনন্দ করেছিলেন। আমি করব কেন?'


অনুষ্টুপ মজুমদার (Anustup Majumdar) এমনই। ময়দান যাকে ভালবেসে ডাকে রুকু নামে। বাংলা বিপাকে পড়লেই তাঁর ব্যাট ঝলসে উঠবে, আর দলকে তিনি টেনে তুলবেন খাদের কিনারা থেকে, এ যেন গত পাঁচ বছর ধরে বঙ্গ ক্রিকেটের পরিচিত চিত্রনাট্য হয়ে উঠেছে। ঋদ্ধিমান সাহার অভাব অনেকটাই ঢেকে দিচ্ছেন চাপের মুখে দিনের পর দিন পারফর্ম করে। শুক্রবার রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) প্রথম ম্যাচের প্রথম দিনই অন্ধ্র প্রদেশের বিরুদ্ধে ঝকঝকে সেঞ্চুরি করলেন চন্দননগরের ক্রিকেটার। সেই সঙ্গে ওপেনার সৌরভ পালকে আগলে রাখলেন। সৌরভ সেঞ্চুরির মাত্র ৪ রান দূরে থামলেন। ৯৬ রান করে ফিরলেন। যা নিয়ে সৌরভের আক্ষেপ রয়েছে। তার চেয়েও যেন বেশি আফশোস অনুষ্টুপের।


বিশাখাপত্তনম থেকে মোবাইল ফোনে রুকু বললেন, 'সেঞ্চুরিটা অল্পের জন্য হাতছাড়া হল ওর। ভাল ব্যাট করছিল। ওর জন্য খারাপই লাগছে।' যোগ করলেন, 'আমি চেষ্টা করছিলাম যাতে ও স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে।' আর নবীণকে আগলে রাখার পথে নিজের সেঞ্চুরি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৪তম সেঞ্চুরি। ১৩৯ বলে ১২৫ রান। ১৫টি চার, জোড়া ছক্কা। স্ট্রাইক রেট? ৮৯.৯২। কার্যত ওয়ান ডে ক্রিকেটের আদলে ব্যাটিং করেছেন।


বৈভবকে নিয়ে হইচই


মুম্বইয়ে ৬-৭ বছরের খুদেদের ক্রিকেটারদের খেলতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত হয়েছিলেন সঞ্জীব সূর্যবংশী। শহরতলিতে তিনি তখন সংসার চালানোর জন্য লড়াই করছেন। ওভাল ময়দানে এক কোচকে তিনি জিজ্ঞেস করেন, ক্রিকেট শুরু করার বয়স কী হওয়া উচিত? সেই কোচ তাঁকে তিন শব্দের জবাব দেন। 'যত দ্রুত সম্ভব।'


সেই সঞ্জীব সূর্যবংশীর পুত্র বৈভব (Vaibhav Suryavanshi) হইচই ফেলে দিলেন শুক্রবার। মাত্র ১২ বছর বয়সে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক ঘটিয়ে। পাটনার মঈন উল হক স্টেডিয়ামে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলছে বৈভব সূর্যবংশী।