নয়াদিল্লি: ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন নিয়ে নাটক অব্যাহত। বিজেপি সাংসদ তথা ফেডারেশনের প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণের (Brij Bhusan Saran Singh) ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সঞ্জয় সিং ফেডারেশনের নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। যার জেরে অলিম্পিক্সে পদকজয়ী কুস্তিগির সাক্ষী মালিক অবসর নিয়েছিলেন। এবার নিয়ম না মানার জন্য সঞ্জয় সিংহ সহ গোটা কুস্তি ফেডারেশনকেই নির্বাসিত করল কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক। ফেডারেশন প্রসঙ্গে মন্ত্রক বলেছে, এখনও মনে হচ্ছে আগের পদাধিকারীরাই ফেডারেশন চালাচ্ছেন। 


কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সঞ্জয় সিংহের কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর তড়িঘড়ি অনূর্ধ্ব ১৫ ও অনূর্ধ্ব ২০ প্রতিযোগিতা ঘোষণা করেছিল। এই ঘোষণা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে করা হয় বলে জানিয়েছে সরকার। কোনও প্রতিযোগিতার আগে অন্তত ১৫ দিনের নোটিশ দিতে হয় বলে জানিয়েছে সরকার। কুস্তিগীরদের প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হয়। কিন্তু কোনও নিয়মই মানা হয়নি। 


এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ''জাতীয় পর্যায়ে কোনও প্রতিযোগিতা আয়োজন করার হলে কার্যনির্বাহী কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর কমিটির সামনে এজেন্ডা পেশ করতে হয়। তা নিয়ে আলোচনা হয়, তারপর বৈঠকে সেই সংক্রান্ত ইস্যুর ওপর ভোটাভুটি হয়। কিন্তু কোনও নিয়মই মানা হয়নি।''


উল্লেখ্য, কুস্তি সংস্থার নির্বাচনে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ শরন সিংহ ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় সিংহের জয়ের পরই ক্ষোভে অবসর গ্রহণ করেছিলেন সাক্ষী মালিক। যিনি রিও অলিম্পিক্সে কুস্তিতে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। এবার পদ্মশ্রী পুরস্কার ফেরালেন আরেক কুস্তিগীর বজরঙ্গ পুনিয়া। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনের সামনের ফুটপাতে নিজের পদ্মশ্রী রেখে এলেন পালোয়ান বজরঙ্গ।


তাঁদের লড়াইটা ছিল ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে। গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল, দেশের মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থা করেছেন ব্রিজভূষণ। প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন দেশের পদকজয়ী পালোয়ানরা।


নির্বাচনে ৪০-৭ ভোটে জিতে জাতীয় কুস্তি সংস্থার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন সঞ্জয় সিংহ। যাঁর আরেক পরিচয়, তিনি ব্রিজভূষণের বিজনেস পার্টনার। খুবই ঘনিষ্ঠতা রয়েছে দুজনের। তাহলে কি বকলমে ব্রিজভূষণই চালাবেন জাতীয় হকি সংস্থা? পালোয়ানদের অন্তত সেরকমই আশঙ্কা।


ক্ষোভে ফুঁসছেন বজরঙ্গ পুনিয়া (Bajrang Punia)। বলেছেন, 'আমরা সত্যের জন্য লড়াই করছিলাম। মহিলাদের সম্মানের জন্য লড়াই করছিলাম। তা নাহলে আমরা সক্রিয় অ্যাথলিট। দেশের জন্য পদক জয়ই আমাদের কাছে প্রাধান্য পায়। আমি মনে করি না মেয়েরা সুবিচার পাবে কারণ সিস্টেমই সেরকম নয়। মহিলাদের ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়। বিচারব্যবস্থায় আমাদের এখনও আস্থা রয়েছে। তবে সরকার কথা রাখেনি।'