দুবাই: ভারত-পাকিস্তান মহারণের আগে ট্রোলিংয়ের ভয়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে কয়েকদিন দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। সানিয়া মির্জা (Sania Mirza) নিজেই জানিয়েছিলেন সে কথা। তবু সেই আক্রান্তই হতে হল ভারতের টেনিস সুন্দরীকে। তবে ভারত-পাক ম্যাচের জন্য নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 WC) অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গ্যালারি থেকে পাকিস্তানের হয়ে গলা ফাটানোর জন্য। এমনকী, 'বিশ্বাসঘাতক' তকমাও দেওয়া হল শোয়েব মালিকের ঘরনিকে।


বৃহস্পতিবার দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়া। সেই ম্যাচেই পাকিস্তানের হয়ে স্ট্যান্ডে গলা ফাটাতে দেখা যায় ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জাকে। এরপরেই নেটিজেনদের রোষের মুখে পড়েন সানিয়া।


সানিয়া ভারতীয় হলেও তাঁর স্বামী শোয়েব মালিক পাকিস্তান দলের সদস্য এবং তিনি পাকিস্তানের হয়ে এই ম্যাচও খেলেছেন। তাঁকে সমর্থন জানাতেই গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন সানিয়া। কিন্তু সানিয়ার এরকম প্রকাশ্যে পাকিস্তানকে সমর্থন করাটা একেবারেই ভাল চোখে নেননি অনেকেই। অনেকে তো আবার তাঁকে দেশদ্রোহিতার জন্য আইনমাফিক শাস্তি দেওয়ারও আবেদন জানান প্রধানমন্ত্রীর কাছে।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া। টানটান ম্যাচে শেষ হাসি হাসল অস্ট্রেলিয়া। ৬ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নিল অ্যারন ফিঞ্চের দল।


 




ম্যাচে স্টিভ স্মিথ আউট হতেই টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে সানিয়ার উচ্ছ্বাস প্রকাশের ছবি। যা দেখে তাঁকে কাঠগড়ায় তুলতে থাকেন অনেকেই। তবে অনেকেই আবার সানিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি যে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ভারতের হয়ে একাধিক পদক জিতে দেশকে গৌরবান্বিত করেছেন, তা মনে করিয়ে দেওয়া হয়।  


এদিন টস জিতে আগে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠান অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। এই ম্যাচে নজর কেড়েছেন মহম্মদ রিজওয়ান। এই হাইভোল্টেজ ম্যাচের শুরুতে তাঁর খেলাই অনিশ্চিত ছিল। সেমিফাইনাল শুরুর আগে দলের দুই অন্যতম নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার মহম্মদ রিজওয়ান ও শোয়েব মালিকের অসুস্থতা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল পাক শিবিরে। যদিও অস্ট্রেলিয় বোলিংকে চুরমার করে ৫২ বলে ৬২ রানের ইনিংস সাজান রিজওয়ান। ৪টি ওভার বাউন্ডারি আর ৩টি বাউন্ডারি দিয়ে এই ইনিংসে ভর করেই বড় রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় পাকিস্তান। তবে কম যান না ফকর জামানও। তাঁর ২৪ বলে ৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ভর করে ৪ উইকেট খুইয়ে ১৭৬ রান তুলেছিল পাকিস্তান। 



জেতার জন্য ১৭৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নামে অজিরা। যদিও শুরুতেই ছন্দপতন। শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ক্যাপ্টেন অ্যারন ফিঞ্চ। এরপর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রেখেছিলেন অস্ট্রেলিয় ব্যাটাররা। ৫.৪ ওভারে ৫১ রান তুলেছিলেন তাঁরা। ক্রিজে ছিলেন মিচেল মার্শ ২৭ (১৯) এবং ডেভিড ওয়ার্নার ২৩ (১৬)।  তবে ৮৪ বলে ১২৫ রান যখন প্রয়োজন সেই সময় সাজঘরে ফেরেন মার্শ। অন্যদিকে, ম্যাচের শুরু থেকে ঝোড়ো ব্যাটিং করেও ৪৯ রানে আউট হন ডেভিড ওয়ার্নার। 


মার্কাস স্টোইনিস, ম্যাথু ওয়েড। ব্যাটে ঝড় তুলে ম্যাথিউ ওয়েড ১৭ বলে ৪১ রান করেন, অন্যদিকে, ৩১ বলে ৪০ রান করে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন  স্টোইনিস। পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে সফল হয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। চার ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। যদিও ম্যাচে শেষ রক্ষা হল না।