মেলবোর্ন: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের নায়ক তিনি (Eng vs Pak)। মেলবোর্নে মাত্র ১২ রান দিয়ে নিয়েছেন তিন উইকেট। পাক ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিলেন। ম্যাচের সেরা হয়েছেন স্যাম কারানই (Sam Curran)। তবে তাঁর মতে, পুরস্কারটা প্রাপ্য ছিল বেন স্টোকসের (Ben Stokes)।


ম্যাচ সেরার পুরস্কার নেওয়ার পর কারান বলেছেন 'মনে করি না আমি এটা পাওয়ার যোগ্য। যেভাবে স্টোকস ওই ইনিংসটা খেলল তাতে করে ওর ম্যাচের সেরা হওয়া উচিত।' যোগ করেছেন, 'আমরা এই মুহূর্তটা খুব উপভোগ করব। খুব স্পেশাল একটা মুহূর্ত। এখানকার স্কোয়ার বাউন্ডারিগুলো খুব বড়। সেই কারণে পিচে বল হিট করতে পারলে পেসারদের সুবিধা হয়েছে। বল সুইং করেছে দুই দিকে।'


স্টোকসের প্রশংসা করে কারান বলেন 'আমাদের জন্য ও হচ্ছে সেরা।' ম‌্যাচ সেরা হওয়ার পাশাপাশি কারান টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারও নির্বাচিত হয়েছেন। নিয়েছেন ১৩টি উইকেট। ওভার প্রতি মাত্র ৬.৫০ রান খরচ করেছেন।


স্টোকসের শাপমোচন


৬ বছর আগের ইডেন গার্ডেন্সের (Eden Gardens) এক রাত। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T20 World Cup) ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ড। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ওভারে ম্যাচ জেতার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। বেন স্টোকসের (Ben Stokes) হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন ইংরেজ অধিনায়ক অইন মর্গ্যান। ব্যাট করছিলেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। স্টোকসের ওভারের প্রথম চার বলে চার বিশাল ছক্কা মেরে ইংরেজ শিবিরে অন্ধকার নামিয়েছিলেন ব্র্যাথওয়েট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এপ্রিল রাতের সেই ইডেন দেখেছিল ক্যারিবিয়ানদের বিজয়োল্লাস। আর দেখেছিল এক অন্ধকার চোখ-মুখের ক্রিকেটারকে। হাঁটু গেড়ে পিচের ওপর বসে।


কোথায় সেই ব্রিটিশ সুলভ ঔদ্ধত্য! এ যেন আত্মসমর্পণের ছবি। সতীর্থরা পাশে এসে কাঁধে টোকা মারার পর যাঁর সম্বিৎ ফিরেছিল যেন। শূন্য দৃষ্টিতে আকাশের দিকে দেখতে দেখতে মাঠ ছেড়েছিলেন বিধ্বস্ত স্টোকস।


মাঝে ২ বছর আগে দেশকে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছেন স্টোকস। বিশ্বজয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন ইংরেজ অলরাউন্ডার। কিন্তু তবু, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে কার্যত জেতা ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা কি ভুলতে পেরেছিলেন তিনি?
হয়তো পারেননি। যে শাপমুক্তি ঘটল মেলবোর্নে। পাকিস্তানের ১৩৭/৮ তাড়া করতে নেমে যখন প্রবল চাপে ইংল্যান্ড ইনিংস, হাল ধরলেন স্টোকস। পাক বোলারদের আগুনে স্পেলও তাঁকে টলাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত রইলেন স্টোকস। আর নিশ্চিত করে দিলেন যাতে, টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয়বারের জন্য বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড।