দুবাই: আশায় বুক বেঁধেছিল গোটা দেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রবিবার আফগানিস্তান গ্রুপের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারালে লাইফলাইন পেতেন বিরাট কোহলিরা। সেক্ষেত্রে সোমবার নামিবিয়াকে হারাতে পারলেই সেমিফাইনালের টিকিট পেয়ে যেত টিম ইন্ডিয়া।


কিন্তু তা হয়নি। নিউজিল্যান্ড সহজেই হারিয়ে দিয়েছে আফগানিস্তানকে। সেই ম্যাচের পরই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে যে, গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হবে ভারতকে। সোমবার নামিবিয়া ম্যাচ নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়িয়েছে।


কিন্তু কী কারণে বিশ্বকাপে এমন বিপর্যয় ভারতের? ভরাডুবির অন্তর্তদন্তে উঠে এল অন্যতম প্রধান পাঁচ কারণ:


টস-ভাগ্য


বিশ্বকাপে টস-ভাগ্য ভারতের সঙ্গে ছিল না। অথচ চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ম্যাচে বড়সড় ভূমিকা পালন করছে টস। বিশেষ করে শিশিরের জন্য টস অনেক সময় ম্যাচের ভাগ্য নিয়ন্তা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বেশিরভাগ দলই টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করে নিচ্ছে। যাতে পরের দিকে বোলারদের শিশিরে ভেজা বল গ্রিপ করতে কোনও সমস্যা না হয়। কিন্তু গ্রুপে এখনও পর্যন্ত চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই টস হেরেছেন কোহলি। তাই ম্যাচের শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যেতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে।


ব্যাটিং বিপর্যয়


টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের সেরা অস্ত্র মনে করা হয় ব্যাটিং টপ অর্ডারকে। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও কতে এল রাহুল এবং তিন নম্বরে নামা বিরাট কোহলির ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল থাকে দলের ব্যাটিং। কিন্তু বিশ্বকাপে দেখা গিয়েছে, ওপেনাররা অনেক সতর্ক থেকে শুরু করছেন। যে কারণে পাওয়ার প্লে-র ফিল্ডিং বিধিনিষেধের ফায়দা তুলতে ব্যর্থ হয়েছে ভারত। কোহলিও অনেকত সংযমী ব্যাটিং করেছেন। প্রভাব পড়েছে স্কোরবোর্ডে।


 






টানা ক্রিকেটের ক্লান্তি


ভারতীয় দলের ক্রিকেটারেরা কার্যত ৬ মাসা টানা ক্রিকেট খেলে চলেছেন। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চারটি টেস্ট ও তারপরই আইপিএল খেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেমেছিলেন বিরাট কোহলিরা। টানা জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে খেলতে খেলতে ক্রিকেটারেরা মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে। যা বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ।


বোলিংয়ের ধার হারানো


ভুবনেশ্বর কুমারের ছন্দ হারানো, হার্দিক পাণ্ড্যর বল করতে না পারা ও যশপ্রীত বুমরার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা, সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বোলিংয়ে চেনা কামড়টাই ছিল না। প্রতিপক্ষের উইকেট তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন বোলাররা। যে কারণে চাপ তৈরি করা সম্ভব হয়নি।


ব্যাটিং অর্ডারে রদবদল


নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আচমকাই ওপেনিং থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল রোহিত শর্মাকে। তাঁর পরিবর্তে ওপেনিংয়ে পাঠানো হয় ঈশান কিষাণকে। ট্রেন্ট বোল্ট-টিম সাউদি সমৃদ্ধ অভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে যা মারাত্মক সিদ্ধান্ত ছিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেই ম্যাচে শুরু থেকেই চাপে পড়ে যায় ব্যাটিং। পরে রোহিত শর্মা স্পিনারদের বিরুদ্ধে হোঁচট খাওয়ায় বিপর্যস্ত হতে হয়েছিল ব্যাটিংকে।