দুবাই: অলিম্পিক্সে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করাতে উঠে পড়ে লেগেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ২০২৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।


তবে ক্রিকেটের ইতিহাস বলছে, এর আগেও বাইশ গজের যুদ্ধ দেখা গিয়েছে অলিম্পিক্সে। তবে সেটা ১২১ বছর আগে। ১৯০০ সালের প্যারিস অলিম্পিক্সে।


মঙ্গলবার ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি যে ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এনেছে। বলা হয়েছে, ১৯০০ সালে প্রথমবার অলিম্পিক্সে ক্রিকেট খেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। সেই ঘটনাও বেশ আকর্ষণীয়।


আইসিসি জানিয়েছে, মাত্র ২ দল সেবার অলিম্পিক্স ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিল। গ্রেট ব্রিটেন ও আয়োজক দেশ ফ্রান্স। যদিও প্রথমে ঠিক ছিল, মোট চার দেশ অংশ নেবে। আধুনিক অলিম্পিক গেমসের শুরু হয়েছিল ১৮৯৬ সালে, এথেন্সে। সেবারই গেমসে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অংশগ্রহণে সেরকম সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই বাতিল হয়। ১৯০০ সালেও বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছিল অলিম্পিক্সের উদ্যোক্তাদের। কেন? কারণ, প্রথমে ঠিক ছিল গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়াম অলিম্পিক্স ক্রিকেটে অংশ নেবে। কিন্তু সেবারের অলিম্পিক্সের সহ-আয়োজক হওয়ার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়াম সরে দাঁড়ায়।


খেলেছিল শুধু গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্স। সেই ম্য়াচই অলিম্পিক্সের ইতিহাসে প্রথম ও এখনও পর্যন্ত একমাত্র ম্যাচ। তবে কোনও দেশই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নামায়নি। ক্লাব ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গড়ে। ম্যাচটি হয়েছিল দুই দলের। দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মত থাকায় ১১ জনের বদলে ১২জন করে ক্রিকেটার ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন।



১৫৮ রানের বিশাল ব্যবধানে সেই ম্যাচ জিতেছিল গ্রেট ব্রিটেন। তবে রুদ্ধশ্বাস লড়াই হয়েছিল ফয়সালা নির্ধারণের জন্য। কারণ, গ্রেট ব্রিটেনের রান তাড়া করতে নেমে ফ্রান্সের ব্যাটিং বেশ নড়বড়ে দেখালেও শেষ উইকেট প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। ম্যাচ শেষ হওয়ার ঠিক ৫ মিনিট আগে কাঙ্খিত উইকেটটি তুলে নেন ব্রিটিশরা।


ম্যাচে দুটি করে ইনিংস ছিল। প্রথম ইনিংসে গ্রেট ব্রিটেন তুলেছিল ১১৭ রান। ফ্রেডেরিক কামিং সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন। জবাবে ফ্রান্সের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় ৭৮ রানে। ফ্রেডেরিক ক্রিশ্চিয়ান ৭ উইকেট নেন। গ্রেট ব্রিটেন ১৪৫/৫ তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেয়। ফ্রান্সের দ্বিতীয় ইনিংস মাত্র ২৬ রানে গুটিয়ে যায়। মন্টাগা টলার মাত্র ৯ রানের বিনিময়ে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন।


তবে প্রথমে ম্যাচটিকে অলিম্পিক্সের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। যে কারণে গ্রেট ব্রিটেনকে রুপো ও ফ্রান্সকে ব্রোঞ্জ দেওয়া হয়। ১৯১২ সালে ম্যাচটি অলিম্পিক্সের স্বীকৃতি পায়। পদকগুলো পাল্টে সোনা ও রুপোর করে দেওয়া হয়।