জয়পুর: সোনালি লম্বা চুল। রাঁচির মত ছোট শহর থেকে উঠে আসা। কেউ হয়ত ভাবেননি যে এই ছেলেটা এতদূর যেতে পারবেন। বিশেষ করে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজে (International Series) দুর্বল বাংলাদেশের (IND vs BAN) বিরুদ্ধে চরম ব্যর্থতার পর তো তাঁকে  দল থেকে বাদ দেওয়ার কথাই উঠতে শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) ও নির্বাচক কমিটি তাঁর ওপর ভরসা রেখেছিলেন। ভরসা মর্যাদা রাখেন তিনি। অভিষেক সিরিজের পরের সিরিজেই পাকিস্তানের (IND vs PAK) বিরুদ্ধে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। আর তার পরের বছর ২০০৫ সালে আজকের দিনেই রেকর্ড গড়ে ওয়ান ডে ক্রিকেটে নিজের সর্বোচ্চ রানটি করেছিলেন এম এস ধোনি (Mahendra Singh Dhoni)। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৪৫ বলে অপরাজিত ১৮৩ রানের ঝকঝকে ইনিংস। নিজের ইনিংসটি মাহি সাজিয়েছিলেন ১৫টি বাউন্ডারি ও ১০টি ছক্কা দিয়ে।


জয়পুরের সোয়াই মানসিংহ স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ। সাত ম্য়াচের সিরিজে সেই ম্য়াচ জিতেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৯৮ রান বোর্ডে তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। রান তাড়া করতে নেমে তিন নম্বরে ব্য়াটিং করতে নেমেছিলেন ধোনি। সচিন তেন্ডুলকর আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসেন। আর আসার পর থেকেই একেবারে সবাইকে চমকে দিয়ে একের পর মারকাটারি শট। ক্রিকেটীয় ব্য়াকারণ মেনে শট কোনওদিনই নিজের কেরিয়ারে খুব একটা খেলেননি ধোনি। যে হেলিকপ্টার শট পরে গোটা বিশ্ববিখ্যাত হয়েছিল। সেদিন সেই শটের মাধ্যমেও প্রচুর রান করেছিলেন এমএসডি। মাহির ব্য়াটিং বিক্রমে ২৩ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। ধোনির ইনিংস আজ ১৮ বছর পরও একটি রেকর্ড দখলে রেখেছে। উইকেট কিপার ব্য়াটারদের মধ্যে ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক ধোনিই। তিনি টপকে গিয়েছিলেন ২০০৪ সালে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে অ্যাডাম গিলক্রিস্টের হাঁকানো ১২৬ বলে ১৭২ রানের ইনিংসটি। নিজের ইনিংসে ১৩টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন গিলি।


এরপরের ১৮ বছরে আজ পর্যন্ত কোনও উইকেট কিপার ব্যাটার ধোনির রেকর্ড ভাঙতে পারেননি। চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৭৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন কুইন্টন ডি কক। ২০১৬ সালে সেঞ্চুুরিয়নে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও ১৭৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। কিন্তু ভাঙতে পারেননি ধোনির রেকর্ড। 


এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইকেট কিপার ব্যাটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক রানের মালিক ধোনি। ৫৩৮ ম্যাচে ১৭,২৬৬ রান করেছেন তিনি। তাঁর আগে রয়েছেন কুমার সাঙ্গাকারা। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ১৭,৮৪০ রান।