পঞ্জাব: একটা সময় ছিল যখন বিশ্ব ক্রিকেটকে রাজ করত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিষাক্ত বোলিং লাইন আপ। বিশেষ করে পেস বোলিং আক্রমণে তাবড় তাবড় ব্য়াটারদের রাতের ঘুম উড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল ২-৩ টে নামই। কার্টলি অ্যামব্রোজ, কোর্টনি ওয়ালশ সেই আক্রমণের নেতৃত্বভাগে ছিলেন। এই ২ বোলারের সামনে ক্রিজে টিকে থাকাই যেখানে দুঃসাধ্য ছিল, সেখানে প্রায় ৬৭৩ মিনিট একের পর এক গোলার মতো গতি শয়ে দুর্দান্ত দ্বিশতরান। নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর টেস্ট কেরিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক একটি ইনিংস তিনি খেলেছিলেন ১৯৯৬-৯৭ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সময়। সেই ম্যাচে পোর্ট অফ স্পেনে খেলতে নেমে ২০১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সেই ইনিংস নিয়েই আমাদের আজকের ওস্তাদের মার প্রতিবেদন -


পোর্ট অফ স্পেনের কুইন্স পার্ক ওভালে ৫ ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কোর্টনি ওয়ালশ। বোর্ডে প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রান তুলতে পারে ক্যারিবিয়ানরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে যদিও শুরুতেই ধাক্কা খায় টিম ইন্ডিয়া। খাতা খোলার আগেই ওপেনিংয়ে নেমে প্য়াভিলিয়নে ফেরেন ভিভি এস লক্ষ্মণ। এরপর প্রথমে রাহুল দ্রাবিড় ও পরে সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে জুটি বাঁধেন সিধু। এর আগের সিরিজে খুব একটা ভাল পারফর্ম ছিল না। বার কয়েক দল থেকেও বাদ পড়েছিলেন। কিন্তু শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেই নিজের জাত চেনানোর পরীক্ষায় বসার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন হয়ত পঞ্জাবের এই ওপেনার। একের পর এক দর্শনীয় শট। প্রায় ১৯টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন সিধু সেদিন। তার থেকেও বড় কথা ক্রিজে ৬৭৩ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের স্বপ্ন দেখায় যতি টেনে দেন তিনি। ৪৯১ বলের এই ইনিংসে ১৯টি বাউন্ডারি ও ১টি পেল্লাই ছক্কা হাঁকান ডানহাতি ও ব্যাটার। রাহুল ৫৭ ও সচিন ৮৮ রান করেন। একটা সময় ভারতের স্কোর ছিল ২ উইকেটের বিনিময়ে ৩৪৫। কিন্তু সেখান থেকেই আচমকা ৪৩৬ রানে অল আউট হয়ে যায় ভারত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের মধ্যে সেই ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নেন অ্যামব্রোজ। সিধুকেও শেষ পর্যন্ত তিনিই ফিরিয়েছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে ১৪০ রানের লিড নিয়ে নিয়েছে ভারতীয় দল।



দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯৯ রান বোর্ডে তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু ম্যাচ অমিমাংসীতভাবেই শেষ হয়। তবে সিধুর ইনিংস ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের প্রশংসা কুড়িয়ে নেয়। ভারতের টেস্ট ক্রিকেটের আর্কাইভেও উজ্জ্বল সিধুর এই ইনিংস।