পার্কেন: গোটা বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল দৃশ্যটা দেখে। খেলা চলাকালীন মাঠের মধ্যে আচমকা লুটিয়ে পড়ছেন ডেনমার্কের সেরা তারকা, ক্রিস্তিয়ান এরিকসেন। ডেনমার্কের ফুটবলাররা তো বটেই, প্রতিপক্ষ ফিনল্যান্ডের ফুটবলাররাও আতঙ্কে দিশাহারা। অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন, কোনও বিপর্যয় না নেমে আসে টুর্নামেন্টের ওপর। ক্রিকেট, ফুটবল, টেনিস থেকে শুরু করে অ্য়াথলেটিক্স, গোটা বিশ্বের সমস্ত ক্রীড়ার তারকারা প্রার্থনা শুরু করেছিলেন।


অবশেষে কিছুটা ইতিবাচক খবর দিল ইউরোপের ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা উয়েফা। জানাল, হাসপাতালে স্থিতিশীল রয়েছেন এরিকসেন। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন তিনি। শ্বাস-প্রশ্বাসও এখন স্বাভাবিক। যে খবর পাওয়ামাত্র সর্বস্তরে স্বস্তি। দুই দলের ফুটবলারদের অনুরোধে শনিবার ইউরো কাপে স্থগিত হয়ে যাওয়া ডেনমার্ক-ফিনল্যান্ড ম্যাচও ফের শুরু করা হয়েছে।


উয়েফা জানিয়েছে, দ্রুত সুচিকিৎসার জন্য জীবনরক্ষা হয়েছে এরিকসেনের। মাঠে যেভাবে চিকিৎসা করা হয়েছিল, তা অনবদ্য। পাশাপাশি এরিকসেনের সতীর্থরা যে সাহসিকতা ও উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে মাউথ টু মাউথ অক্সিজেন দিয়েছেন বা মাঠে চিকিৎসা চলার সময় তাঁকে ঘিরে একটা বলয় রচনা করেছিলেন, তারও প্রশংসা করা হয়েছে উয়েফার তরফে।


শনিবার ইউরো কাপে ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালীন মাঠেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন ডেনমার্কের ফুটবলার এরিকসেন। খেলা চলাকালীন হঠাৎই মাঠে লুটিয়ে পড়েন এরিকসেন। তাঁকে কেউ ধাক্কা মারেননি। নিজে থেকেই পড়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে অবস্থার গুরুত্ব বুঝে খেলা থামিয়ে দেন রেফারি অ্যান্টনি টেলর। সবাই ছুটে যান এরিকসেনের দিকে। মাঠেই শুরু হয় প্রাথমিক চিকিৎসা। এরপর এরিকসেনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 


এরিকসেন অসুস্থ হয়ে পড়ার ঠিক আগে বল কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে মাঠের বাইরে চলে যায়। থ্রো-ইন থেকে বল রিসিভি করতে ছুটে যান এরিকসেন। সেই সময়ই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। বল তাঁর হাঁটুতে লাগে। এরিকসেনের কাছেই ছিলেন ফিনল্যান্ডের দুই ফুটবলার। তাঁরা চিকিৎসকদের দ্রুত মাঠে আসার ইশারা করেন। রেফারিও চিকিৎসকদের ডাকেন। ডেনমার্ক দলের সঙ্গে থাকা চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা মাঠে ছুটে যান। তাঁদের মধ্যে একজন এরিকসেনের বুকে চাপ দিতে থাকেন। সবাই এই ফুটবলারকে ঘিরে থাকেন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে মাঠেই চিকিৎসা চলে। এরপর ধীরে ধীরে অন্য ফুটবলাররা মাঠ ছাড়েন। এরিকসেনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।


ডেনমার্কের ফুটবল সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাসপাতালে এরিকসেনের জ্ঞান রয়েছে। ফলে উদ্বেগ কিছুটা কমেছে। এদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইংল্যান্ডের সাংবাদিক বৈঠক বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট ও অধিনায়ক হ্যারি কেনের প্রাক্তন সতীর্থ এরিকসেন। তাঁর জন্য সবাই উদ্বিগ্ন। এখন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই সাউথগেট, কেনরা। সেই কারণেই তাঁরা সাংবাদিক বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন।