রাওয়ালপিন্ডি: ম্যাচ গড়াপেটা নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রাক্তন তারকা পেসার শোয়েব আখতার। উমর আকমলের নির্বাসনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর দাবি, পিসিবি-র আইনি বিভাগ কোনও কাজের না। ক্রিকেটারদের কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, সেটাই জানে না পিসিবি।


পাকিস্তান সুপার লিগ চলাকালীন ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব পেলেও, সে বিষয়ে দুর্নীতি দমন শাখার আধকারিকদের কিছু না জানানোর দায়ে সোমবার আকমলকে তিন বছরের জন্য নির্বাসিত করেছে পিসিবি-র শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।

এ বিষয়ে শোয়েব বলেছেন, ‘এই শাস্তি কি ন্যায্য? আমি বলছি, পিসিবি-র আইনি বিভাগ সম্পূর্ণ অপদার্থ ও নিস্কর্মা। বিশেষ করে ফজল রিজভি কোনও কাজই করেন না। আমি জানি না তিনি কোথা থেকে এসেছেন। অনেকের সঙ্গে তাঁর ভাল সম্পর্ক। সেই সুবাদেই তিনি ১০-১৫ বছর ধরে পিসিবি-তে আছেন। পিসিবি যখন পাকিস্তান সুপার লিগে অনলাইন বেটিংকে স্বীকৃতি দিল, তখন কী মনে করেছিল? আমাদের আইন ও সংবিধান যখন বেটিংকে স্বীকৃতি দেয় না, তখন এই বিষয়টি কীভাবে পিসিবি-র দৃষ্টি এড়িয়ে গেল? পিসিবি বড় ভুল করেছে এবং আমাদের সংবিধানের অবমাননা করেছে। অনলাইন বেটিংয়ের অনুমতি দিয়ে ইসলামেরও অবমাননা করেছে পিসিবি। আমরা এ বিষয়ে কিছু জানতাম না। পাকিস্তান সুপার লিগের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিও কিছু জানত না। আমি জানতে চাই, কোনও ক্রিকেটার ম্যাচ গড়াপেটা করে ধরা পড়লে অন্তত ১০ বছরের কারাদণ্ড সংক্রান্ত আইন কেন জারি করা হল না? শ্রীলঙ্কায় এই আইন রয়েছে। এই আইন জারি করা হলে কেউ ম্যাচ গড়াপেটার মতো অপরাধ করার সাহস পাবে না। ১৯৯৫ থেকে শুরু হয়েছে, এখন ২০২০। কিন্তু এখনও লোকজন ম্যাচ গড়াপেটা করে চলেছে। এটা পিসিবি-র আইনি বিভাগের ব্যর্থতা।’

ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে নির্বাসিত হওয়ার পরেও মহম্মদ আমির, শারজিল খানের মতো ক্রিকেটারদের পাকিস্তানের জাতীয় দলে ফেরানো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শোয়েব। তাঁর বক্তব্য, ‘মহম্মদ আমিরকে কেন দলে ফেরানো হল? আমিরের জন্য একরকম আইন, আবার মহম্মদ আসিফের জন্য অন্য আইন! আমিরকে ফের তারকা বানাতে চেয়েছিল পিসিবি। কিন্তু ও তার বদলে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিল। সব সিস্টেমের বিপক্ষে গিয়ে ওকে ফেরায় পিসিবি। কিন্তু ওর বোর্ডকে এর বিনিময়ে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল না। পিসিবি ম্যাচ গড়াপেটা ধামাচাপা দিয়েছে, আমিরের মতো ক্রিকেটারদের দলে ফিরিয়েছে। ম্যাচ গড়াপেটা করে ধর পড়ার পরেও দলে ফিরে আসা ক্রিকেটাররা ভাবছে, আমরা যদি ধরা পড়ি, তাহলে ৬ মাস বা ২ বছরের জন্য মাঠের বাইরে থাকব, বিপুল অর্থ পাব, তারপর শারজিল খানের মতো আবার দলে ফিরে আসব। পিসিবি-র লজ্জা হওয়া উচিত।’

শোয়েব আরও বলেছেন, ‘উমর আকমলের ঘটনাটি হওয়ারই ছিল। ও ৬ মাস অন্তর কিছু একটা ভুল করে ধরা পড়ে। ও একের পর এক ভুল করেই যায়। ৮-১০ বছরে বিরাট কোহলি ৩০-৪০টি শতরান করেছে। সেখানে উমরের শতরানের সংখ্যা মাত্র ৩। সেটা ওর নিজের দোষ। ও নিজেই নিজের কেরিয়ার নষ্ট করেছে।’