ইন্দৌর: একটানা ক্রিকেট নয়। বরং মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিয়ে আরও এনার্জি নিয়ে ফিরে আসা এবং নিজের একশো শতাংশ উজাড় করে দেওয়া। একটা ছোট্ট ভুল হল। একশো নয়, একশো দশ শতাংশ দেওয়া, এটাই বিরাট কোহলির ক্রিকেট মন্ত্র। ফিটনেস, বিশ্রাম এবং নিজের সবটা উজাড় করে দেওয়া, এই মন্ত্রেই সাফল্যের সরণিতে বিরাট। তবে এই পথ চালায় ধাক্কা কি আসেনি? এসেছে।


সাল ২০১৪। ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে টেস্ট সিরিজ হার ভারতের। নটিংহ্যামে ড্র, লর্ডসে জয়। আর বাকি তিন ম্যাচ পরপর হার। এই ভরাডুবিতে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন বিরাটও। ১০ ইনিংসে ‘রান মেশিন’ কোহলির ব্যাট থেকে এসেছিল ১৩৪ রান। দুটি ইনিংসে শূন্য। মোট গড় ছিল ১৩.৫০। ওয়ান ডে সিরিজে ভারত কামব্যাক করলেও কামব্যাক করতে পারেননি কোহলি। ৪ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ছিল ৫৪। এই গোটা সিরিজে একটা অর্ধশতরানও করতে পারেননি তিনি।  আর এই ব্যর্থতার কারণেই অবসাদ গ্রাস করেছিল বিরাটকে। কথা বলা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিলেন বিরাট। অবসাদগ্রস্ত বিরাটের মনে হয়েছিল পৃথিবীটা বোধহয় এখানেই শেষ। তবে তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। শেষবার তাঁর নেতৃত্বেই ইংল্যান্ডে গিয়েছিল ভারত। দল হেরেছে ঠিকই, তবে একবারের জন্যও জেমস অ্যান্ডারসনকে নিজের উইকেট দেননি। উল্টে, স্যাম কুরান, বেন স্টোকস, অ্যান্ডারসনদের বিরুদ্ধে ২টি শতরান, ৩টি অর্ধশতরান সহ মোট ৫৯৩ রান করেন ভারত অধিনায়ক।


বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইন্দৌরে প্রথম টেস্টে নামার আগে তাঁর সেই ‘অন্ধকার’ সময়ের কথা সাংবাদিকদের কাছে মেলে ধরলেন বিরাট কোহলি। ক্রিকেটের মতো খেলায় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একজন ক্রিকেটারকে সচেতন থাকতেই হয়, সে কথাই স্মরণ করিয়ে দিলেন তিনি। অবসাদের সম্প্রতি ক্রিকেট বিরতি নিয়েছেন অস্ট্রেলীয় তারকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও নিক ম্যাডিনসন। অতীতে স্টিভ হার্মিসন, মার্স ট্রেসকথিক এবং গ্রেম ফওলারের মতো ক্রিকেটাররাও মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বিরতি নিয়েছেন। এই বিষয়কে কখনও নেতিবাচক হিসেবে দেখা উচিত নয়। বিরাটের মন্তব্য, “ও ক্রিকেটারদের জন্য সঠিক দৃষ্টান্ত রাখল। মানসিক স্থিতি না থাকলে একজন স্রেফ বারংবার চেষ্টাই করতে পারেন এবং ফিরে আসতে সময়ের প্রয়োজন হয়। আমার মনে হয় এই বিষয়গুলোকে সম্মান জানানো উচিত। যেকোনও মানুষেরই যেকোনও পেষায়ই এমনটা হতে পারে। তাই এই বিষয়কে নেতিবাচকভাবে দেখা উচিত নয়।”