কলকাতা: কেউ বলছেন লজ্জা। কেউ বলছেন কলঙ্কের অধ্যায়।


শনিবার অ্যাডিলেডে কার্যত আড়াই দিনের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করল ভারত। বিরাট কোহলিদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে গেল মাত্র ৩৬ রানে। যা টেস্টের এক ইনিংসে ভারতের সর্বনিম্ন স্কোর। প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানের লিড নেওয়া ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারল না। প্রথম ইনিংসে ভারতীয় ব্যাটসম্যানেরা যেখানে প্রায় ৯৪ ওভার ক্রিজে কাটিয়েছিলেন, সেখানে বিরাট কোহলিদের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে গেল মাত্র ২১.২ ওভারে! জশ হ্যাজলউড নিলেন ৫ উইকেট। ৪ শিকার প্যাট কামিন্সের। অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার ভারতীয় শিবিরে রীতিমতো কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিলেন।

কিন্তু কেন এই ব্যাটিং বিপর্যয়? যে বোলিংকে সামলে প্রথম ইনিংসে আড়াইশোর কাছাকাছি স্কোর তুলেছিল ভারত, সেই একই বোলারদের সামনে ৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না প্রাক্তন ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের কেউই।

প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে দুশোর কম রানে অল আউট করে দেওয়া আর ৫৩ রানের লিড নিশ্চিত করতে পেরে কি আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েছিল ভারতীয় শিবির? এরকম কোনও মনোভাব কি দলের মধ্যে তৈরি হয়েছিল যে, অস্ট্রেলিয়ার ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াই চাপে? আর সেই কমফর্ট জোনই কি দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটিয়ে দিল?

শনিবার ম্যাচের শেষে এবিপি আনন্দের প্রশ্ন শুনে অ্যাডিলেড থেকে জুম কলে কোহলি বললেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনও কমফর্ট জোন হয় না। আমাদের প্রস্তুতিতেও কোনও কমফর্ট জোন ছিল না। যারা ভাবছেন প্রথম ইনিংসের লিড আমাদের আত্মতুষ্ট করে তুলেছিল তাঁদের বলব, আমরা চাপের কাছে হার মেনেছি। কোনও আত্মতুষ্টি ছিল না।’

ভারতীয় দলের অধিনায়ক যোগ করছেন, ‘এত বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুবাদে বলতে পারি, এই পর্যায়ে আত্মতুষ্টি আসা উচিত নয়। আমাদের দলেও কোনও কমফর্ট জোন ছিল না।’

প্রথম টেস্ট খেলেই ভারতে ফিরছেন কোহলি। প্রথম সন্তান জন্ম নেওয়ার সময় স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার পাশে থাকতে চান তিনি। সিরিজে ০-১ পিছিয়ে পড়া ভারতীয় দলের কাছে যা বড়সড় ধাক্কা হবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। যদিও ভারতীয় দলের ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বিরাট। বলছেন, ‘এটা টেস্ট ক্রিকেট। অনেক কিছুই হতে পারে। আমি নিশ্চিত যে মেলবোর্নে পরের টেস্টে ভারতীয় দল ঘুরে দাঁড়াবে। কয়েকজন ক্রিকেটার তাদের চারিত্রিক দৃঢ়তা উপলব্ধি করবে, নিজেরাই বুঝতে পারবে দলের প্রয়োজনে তাদের কী ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি নিশ্চিত এই হার থেকে আমরা শিক্ষা নেব।’