লন্ডন: চলতি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের খেলা চলছে। গ্রুপ পর্বের প্রায় অর্ধেক ম্যাচ হয়ে গিয়েছে। আর জয়-পরাজয় ও চলতি ফর্মের নিরিখে এখনও পর্যন্ত তিনটি দলের সেমিফাইনালের পথ অনেকটাই প্রশ্বস্ত। এই তিনটি দল হল নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। এই তিনটি দল ছাড়া সেমিফাইনালের চতুর্থ দল নিয়ে সাসপেন্স অব্যাহত।
দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তান ইতিমধ্যেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছে। চার নম্বরের ক্ষেত্রে লড়াই ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মধ্যে।
২১ জুন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের পর শ্রীলঙ্কার সামনেও সেমিফাইনালে ওঠার রাস্তা খুলে গিয়েছে। অন্যদিকে, ২৩ জুন দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পর পাকিস্তানের সামনেও সেমিফাইনালে ওঠার দরজা খোলা রয়েছে। এখন দেখে নেওয়া যাক কোন দল পয়েন্ট তালিকায় কোথায় রয়েছে এবং কোন দল এখনও সেমিফাইনালে পৌঁছতে পারে।



নিউজিল্যান্ড ও ভারতের সেমিফাইনালে পৌঁছনো কার্যত নিশ্চিত
ভারত ও নিউজিল্যান্ড-এই দুটি দল টুর্নামেন্টে এখনও একটি ম্যাচও হারেনি। ৬ ম্যাচে ৫ টিতে জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে নিউজিল্যান্ড।তাদের পয়েন্ট ১১। অন্যদিকে, পাঁচ ম্যাচে চারটিতে জিতেছে ভারত। ভারতের পয়েন্ট ৯। আর একটি ম্যাচ জিতলেই সেমিফাইনালে পৌঁছে যাবে নিউজিল্যান্ড। আর ভারতকে সেমিফাইনালে উঠতে হলে আর দুটি ম্যাচ জিততে হবে। ভারত আগামী চারটি ম্যাচে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলবে।

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ম্যাচ বাকি রয়েছে। আর একটি ম্যাচ জিতলে কার্যত তারা সেমিফাইনালে পৌঁছে যাবে। আর কোনও ম্যাচ জিততে না পারলে অর্থাত্ ১০ পয়েন্টেই থেকে গেলে অস্ট্রেলিয়াকে অন্যদলগুলির খেলার ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হবে। শ্রীলঙ্কা দুটি ম্যাচে হেরে গেলে এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একটি করে ম্যাচ হারলে অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করবে। পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়া যদি আর একটি ম্যাচ জেতে এবং শ্রীলঙ্কা যদি তাদের বাকি তিনটি ম্যাচেই জেতে তাহলে দুই দলেরই পয়েন্ট (১২) সমান হবে। সেক্ষেত্রে রানরেটের ভিত্তিতে এগিয়ে থাকা দল সেমিফাইনালে পৌঁছবে।
ইংল্যান্ড
বিশ্বকাপ খেতাবের অন্যতম প্রবল দাবিদার ও আইসিসি একদিনের দলের ক্রমতালিকায় শীর্ষে থাকা দল ইংল্যান্ডকে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কাছে হারের মুখ দেখতে হয়েছে। এরপর আয়োজক দেশকে ভারত, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে হবে।ছয় ম্যাচ খেলে তাদের পয়েন্ট ৮। বাকি তিনটি ম্যাচেই হারলে টুর্নামেন্টের বাইরে চলে যেতে হবে ইংল্যান্ডকে।
সেমিফাইনালে যেতে হলে বাকি তিন ম্যাচের মধ্যে অন্তত দুটিতে জিততে হবে। এতে তাদের পয়েন্ট হবে ১২। কিন্ত ইতিহাস ইংল্যান্ডের পক্ষে নেই। আয়োজক দেশ গত ২৭ বছরে বিশ্বকাপে ভারত, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারেনি। আর তিন ম্যাচের মধ্যে একটিতে জিতলে তাদের শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচের ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হবে।
শ্রীলঙ্কা
৬ ম্যাচে ছয় পয়েন্ট। বাকি তিনটি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে হবে শ্রীলঙ্কাকে। সেমিফাইনালে উঠতে বাকি তিন ম্যাচেই জিততে হবে তাদের। দুটি ম্যাচ জিতলেও সম্ভাবনা থাকছে। কিন্তু তখন পুরো বিষয়টি তাদের হাতে থাকবে না। অন্য দলগুলির খেলার ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের। সেক্ষেত্রে যদি ইংল্যান্ড বাকি তিনটি ম্যাচেই হারে এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তান আর কোনও ম্যাচ না জেতে তাহলে শ্রীলঙ্কার নকআউটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।
শ্রীলঙ্কার তিনটি ম্যাচের মধ্যে দুটি ম্যাচ এমন দুটি দলের বিরুদ্ধে যারা বিশ্বকাপ থেকে ইতিমধ্যেই ছিটকে গিয়েছে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার পারফরম্যান্স এখনও তেমন আশাপ্রদ নয়। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইতে থাকতে ব্যাটিং ও বোলিং-দুই বিভাগেই উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে তাদের।
বাংলাদেশ
গতকাল বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে।এখন সাত ম্যাচে সাত পয়েন্ট তাদের। এখনও ভারত ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের ম্যাচ রয়েছে। ওই দুটি ম্যাচ জিতলে কোয়ালিফাই করতে পারে তারা। কিন্তু সেক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কাকে বাকি তিন ম্যাচ ও ইংল্যান্ডকে বাকি তিন ম্যাচের একটিতে হারতে হবে।
পাকিস্তান
১৯৯২-র বিশ্বকাপের মতো পাক দলের পরিস্থিতিটা একই ধরনের। নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বাকি তিন ম্যাচে খেলতে হবে তাদের। ছয় ম্যাচ খেলে তাদের পয়েন্ট পাঁচ। তিনটি ম্যাচ জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ১১। এরপর যদি ইংল্যান্ড তাদের বাকি ম্যাচের মধ্যে দুটিতে হারে, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা যদি একটি করে ম্যাচ হারে তাহলে পাকিস্তানের নক আউটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।