বাকু: বয়স মাত্র ২২। কিন্তু এই বয়সেই তাঁর ঝুলিতে দুটো সোনা। শ্যুটিংয়ে বাংলাকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন মেহুলি ঘোষ। গতকালই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ব্যক্তিগত বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতেছেন এই বাংলার তরুণী। শুধু তাইই নয়, এই সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে আগামী বছর প্যারিসে আয়োজিত হতে চলা অলিম্পিক্সে খেলার যোগ্য়তা অর্জন করেছেন তিনি। এছাড়াও বাকুতে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে মেহুলির এটি দ্বিতীয় পদক। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল টিম ইভেন্টে সোনা জিতেছিলেন এই তরুণী। শ্যুটিংয়ে বাংলাকে পথ দেখাচ্ছেন মেহুলি। 


২০১৪ সালে প্রথমবার রাইফেল ক্লাবে যোগ দেন মেহুলি। শ্রীরামপুর রাইফেল ক্লাব থেকে পথ চলা শুরু হয় তাঁর। কিন্তু অনুশীলনের সময় একজনকে আঘাত করায় তাঁকে ক্লাব থেকে বহিষ্কৃত করা হয়। পরবর্তীকালে অলিম্পিক্স খেলা প্রাক্তন ভারতীয় শ্যুটার ও অর্জুন পুরস্কার জয়ী জয়দীপ কর্মকারের অধীনে অনুশীলন শুরু করেন মেহুলি। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে পুণেতে জাতীয় শ্যুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সুযোগ পান। সেবারের চ্যাম্পিয়নশিপে ২টো সোনা ও ৭টি রুপো জিতেছেন। এছাড়াও ২০১৭ সালের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ৮টি সোনা ও ৩টি ব্রোঞ্জ জিতে মোট ১১টি পদক জিতে সেবার সেরা শ্যুটার নির্বাচিত হয়েছিলেন। 


২০১৭ সালে চেক প্রজাতন্ত্রে প্রস্তুতিমূলক জুনিয়র শ্য়ুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে সপ্তম হয়েছিলেন। সেই বছরই ডিসেম্বরে জাপানে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন মেহুলি। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে মেক্সিকোতে আইএসএসএফ শ্যুটিং বিশ্বকাপে কণিষ্ঠতম খেলােয়াড় হিসেবে ২টো পদক জেতেন তিনি। ২০১৮ গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল বিভাগে রুপো জেতেন মেহুলি। ২০১৯ সালে কাঠমান্ডুতে আয়োজিত সাউথ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে  সোনা জিতেছিলেন এই তরুণী। 


উল্লেখ্য, প্যারিস অলিম্পিক্সে মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল বিভাগে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন মেহুলি ঘোষ। প্রবাসী বাঙালি তিলোত্তমা সেন শ্যুটিং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে চতুর্থ স্থানে শেষ করেছেন। তাঁর বয়স মাত্র ১৫ বছর।


দলগত বিভাগেও ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে তিল্লোতমা সেন এবং রমিতার সঙ্গে জুটি বেঁধে ভারতকে সাফল্য এনে দেন মেহুলি। দলগত বিভাগে তাঁদের মোট স্কোর ১৮৯৫.৯। এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদেই ১৮৯৩.৭ স্কোর করা চিনের দলকে পিছনে ফেলে দেয় ভারত। দলগত বিভাগে তৃতীয় স্থান অধিকার করে ব্রোঞ্জ পদক জেতে জার্মানি। তবে এই ইভেন্ট জিতলেও, দুর্ভাগ্যবশত একমাত্র ব্যক্তিগত বিভাগে সাফল্যের মাধ্যমেই অলিম্পিক্সের যোগ্যতাঅর্জন করা যায়, তাই মেহুলি প্যারিসের ছাড়পত্র পেলেও এই জয়ের সুবাদে তিলোত্তমা বা রমিতা অলিম্পিক্সের ছাড়পত্র পাননি।