গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুন্দরবনকে (Sundarban) বলা হয়ে থাকে 'বাংলার অ্যামাজন জঙ্গল'। কত প্রাণী, কত উদ্ভিদ যে রয়েছে তা আজও অজানা। এর বিরাটত্ব, বিশালাত্ব এতটাই যে তা সম্পূর্ণ করা অসম্ভবের তালিকায়। তবে এই বনের যিনি রাজা, সেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে (Royal Bengal Tiger) নিয়ে সবসময়ই আতঙ্কে থাকে সুন্দরবনের এলাকাবাসী।  


এবার সুন্দরবনে বাঘের আতঙ্ক তো ছিলই, কিন্তু এর মধ্যেই এক অজানা জন্তু, পায়ের ছাপ দেখে এবং গর্জন শুনে ভয়ে কাঁপছেন নামখানার নাদাভাঙা গ্রামের বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, গতকাল সন্ধেয় বাঘের মতো চেহারার অজানা জন্তুকে নিয়ে আতঙ্ক বেড়েছে ওই এলাকায়। 


গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী। নাম বেশ 'লিরিকাল' হলেও, প্রয়োজন ব্যতীত এই নদী থেকে দূরেই থাকেন বাসিন্দারা। এর কারণ অদূরে বড় জঙ্গল। এর আগে এই এলাকায় বাঘের দেখা মেলেনি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। কিন্তু বাঘ তো জঙ্গলের সীমারেখা মানে না। নদী পেরিয়ে এদিক সেদিকের জঙ্গলে ঢুঁ মেরে থাকেন তিনি। তাই ভয়ে ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের। রাতে লাঠিসোটা নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন তাঁরা। খবর পেয়ে সজাগ রয়েছেন বন দফতরের কর্মীরা। 


তবে এই জন্তুকে বাঘ নয়, অজানা জন্তু বাঘরোল হতে পারে বলে মনে করছে বন দফতর। 


আরও পড়ুন, গতি কমানোর প্রক্রিয়া শেষ, চাঁদের মাটি ছুঁতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিক্রম ল্যান্ডার


কিছুদিন আগে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে যেমন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের হাতে আক্রান্ত হন এক মৎস্যজীবী। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন ওই মৎস্যজীবী। কিন্তু বাঘের সঙ্গে লড়াই করে ফিরেছেন বটে, কিন্তু শারীরিকভাবে ভয়ঙ্কর জখম হন তিনি। 


স্থানীয় সূত্রে খবর, পাথরপ্রতিমার জি-প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সত্যদাসপুরের বাসিন্দা। বিজুয়াড়া জঙ্গলে প্রবেশ করেন দিলু। কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ই অতর্কিতে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একটি রয়্যাল বেঙ্গল। এলোপাথাড়িভাবে দিলুর মাথায় থাবা বসাতে থাকে সে। ডোরাকাটার হামলার সময় অদূরেই ছিলেন দিলুর স্ত্রী নমিতা মল্লিক এবং মেয়ে। তাদের সঙ্গে ছিলেন এক পড়শিও। সকলে মিলেই কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন দিলু। বাঘের সঙ্গে দিলুকে লড়াই করতে দেখে আঁতকে ওঠেন তাঁরা। তড়িঘড়ে বেঁধে রাখা নৌকা থেকে লাঠি, শাবল নিয়ে ছুটে আসেন। তা হাতে নিয়ে বাঘটিকে পাল্টা আক্রমণ করেন তাঁরা। তাতেই ভয় পেয়ে পিছিয়ে যায় ওই রয়্যাল বেঙ্গল। দিলুকে ছেড়ে জঙ্গল থেকে যেমন বেরিয়ে এসেছিল, তেমনই পালিয়ে যায়।