লন্ডন: বাংলাদেশকে ৯৪ হারে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করল পাকিস্তান। যদিও প্রত্যাশিতভাবেই ক্ষীণ আশাটুকুও এই জয়ের আগেই শেষ হয়ে যায় সরফরাজ আহমেদদের।  বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় পাকিস্তান।ভারত, অস্ট্রেলিয়া,ইংল্যান্ডের সঙ্গে শেষ চারে গেল নিউজিল্যান্ড। এদিন বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে তাদের শেষ ম্যাচ  খেলতে নামে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান ৫০ ওভারে ৩১৫ রান করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ আট রান করার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তান ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই টুর্নামেন্টের বাইরে চলে গেল। ১১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠল নিউজিল্যান্ড।

জয়ের জন্য ৩১৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ ৪৪.১ ওভারে ২২১ রানে অল আউট হয়ে যায়।

এই ম্যাচে জয়ের ফলে গ্রুপ পর্যায়ে তালিকায় পঞ্চম স্থানে শেষ করল পাকিস্তান।এই ম্যাচে জয়ের ফলে  ১১ পয়েন্ট পেল পাকিস্তান। নিউজিল্যান্ডের পয়েন্টও একই। কিন্তু নেট রান রেটে পাকিস্তান (-০.৪৩) নিউজিল্যান্ডের (০.১৭৫) থেকে পিছিয়ে। ফলে নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত হল।

বাংলাদেশ সাত পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে থাকল।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার শাকিব আল হাসানের স্বপ্নের ফর্ম তাদের শেষ ম্যাচেও অব্যাহত থাকল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি খেললেন ৬৪ রানের ইনিংস। ৮৬.৫৭ গড়ে তাঁর মোট রান ৬০৬। এদিনও তাঁর ব্যাটই বাংলাদেশের জয়ের আশা জিইয়ে রেখেছিল। কিন্তু অন্যপ্রান্তে ব্যাটসম্যানদের থেকে যথাথথ সহায়তা পেলেন না তিনি। সৌম্য সরকার (২২), মুশফিকর রহিম (১৬) ও লিটন দাস (৩২) শুরুটা ভালো করলেও তাঁদের কেউই লম্বা ইনিংস খেলতে পারেননি।

পাক পেসার শাহিন আফ্রিদির বলে শাকিব আউট হওয়ার পরই বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে যায়। ১৯ বছরের আফ্রিদি তাঁর কেরিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স মেলে ধরে এদিন ৩৫ রানে ছয়টি উইকেট দখল করলেন। বিশ্বকাপে সবচেয়ে কনিষ্ঠ হিসেবে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট সংগ্রহের নজির গড়লেন তিনি। লেগ স্পিনার শাদাব খান দুটি উইকেট নিয়েছেন।

শেষ চারে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচে জেতা তো অবশ্যই জরুরি ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু এজন্য প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করতে হত তাদের। জিততে হত ৩০০-রও বেশি রানের ব্যবধানে। কিন্তু ৯ উইকেটে ৩১৫ রান করার পর সেমিফাইনালে যেতে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের ইনিংস সাত রানে শেষ করতে হত। তাহলে তারা নেট রান রেটে নিউজিল্যান্ডকে পিছনে ফেলতে পারত।

অসম্ভবের পেছনে যে ছোটা সম্ভব নয়, তা সম্ভবত বুঝে গিয়েছিল ১৯৯২-এর চ্যাম্পিয়নরা। পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ ম্যাচের আগে বলেছিলেন যে, তাঁরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৫৫০ রানের জন্য ঝাঁপাবেন। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে এ রকম কোনও লক্ষ্যের দিকে ছুটতে দেখা যায়নি পাক ব্যাটসম্যানদের। প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই তরুণ ব্যাটসম্যান ইমাম-উল-হক (১০০) ও বাবর আজম (৯৬)-এর ইনিংসে ভর করে ৩০০-র বেশি রান তোলে পাকিস্তান। দ্বিতীয় উইকেটে বাবর ও হক ১৫৭ রান যোগ করেন। ২৩ বছরের হক বিশ্বকাপে কনিষ্ঠ পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান হিসেবে শতরানের ইনিংস খেলার কৃতিত্ব অর্জন করেন। আজম মাত্র চার রানের জন্য টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় শতরান হাতছাড়া করেন।

ইমাদ ওয়াসিমের ২৬ বলে ৪৫ রান পাকিস্তানের স্কোর ৩০০-র গণ্ডি পার করে।দলের বড় কোনও স্কোরের পিছনে ছোটার সদিচ্ছা ওপেনার ফকর জামানের ব্যাটে দেখা যায়নি। তিনি ৩১ বলে মাত্র ১৩ রান করে আউট হন। হক ও আজমও স্বাভাবিকভাবেই ব্যাট করেছেন। তাঁদের জুটি ভাঙেন মহম্মদ সইফুদ্দিন। ডিপিং ইয়র্কারে আজমকে পরাস্ত করেন তিনি।

হকের সঙ্গে জুটি বেঁধে মহম্মদ হাফিজ (২৭) তৃতীয় উইকেটে ৬৬ রান যোগ করেন।

৪২ তম ওভারে সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর হিট উইকেট হন হক।

বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজুর রহমান ৫ উইকেট নিয়েছেন। সইফুদ্দিন দখল করেন ৩ উইকেট।