দোহা: কাতার বিশ্বকাপের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে আজ মুখোমুখি হতে চলেছে পর্তুগাল ও মরক্কো (Portugal vs Morocco)। প্রথম দলটি যেমন রোনাল্ডো ছাড়াও প্রতি ম্য়াচে ক্রমেই জ্বলে উঠছে। দ্বিতীয় দলটি এবারে বিশ্বকাপে একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে চলেছে। গ্রুপ পর্বে বেলজিয়ামের পর প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের মত দলকে হারিয়ে দিয়েছে। আজ রোনাল্ডো খেলুক না খেলুক, হাকিমির দল যে পর্তুগালকে বেগ দেবে তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু তার আগে দেখে নেওয়া যাক মুখোমুখি মহারণে কে এগিয়ে -


এখনও পর্যন্ত মোট ২ বার মুখোমুখি হয়েছে পর্তুগাল ও মরক্কো। ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপের মঞ্চে সেই ম্যাচে ৩-১ গোলে পর্তুগালকে হারিয়ে দেয় মরক্কো। ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের মঞ্চেই দেখা হয়েছিল ২ দলের। সেই ম্যাচে যদিও ১-০ ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয় রোনাল্ডো বাহিনী। মরক্কো মোট ৩টি গোল করেছে ও পর্তুগাল মোট ২টি গোল করেছে মুখোমুখি মহারণে।


ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে এই ম্যাচেও শুরু থেকে খেলানো হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। স্যান্তোস হয় তাঁকে বদলি হিসেবেই নামাবেন এই ম্যাচেও। কারণ সুইসদের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা রামোসের দিকে বাড়তি নজর থাকবে। মাঝমাঠে ব্রুনো ফার্নান্ডেজ রয়েছে। তিনি যেমন গোল করতে ভালবাসেন, তেমনই গোল করাতেও ভালবাসেন। রোনাল্ডোকে হয়ত শেষের দিকে নামানো হতে পারে। 


যেভাবে সেমিতে মেসিরা


ম্যাচের ৩৫ মিনিটে চারজন ডাচ ফুটবলারের মধ্যে দিয়ে অবিশ্বাস্য পাস বাড়ালেন মেসি। সেই থ্রু থেকে গোল করলেন নাহুয়েল মোলিনা। আর্জেন্তিনার জার্সিতে প্রথম গোল। বিরতির আগেই ১-০ এগিয়ে যায় আর্জেন্তিনা। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে বক্সের মধ্যে আকুনাকে ফাউল করা হয়। পেনাল্টি দেন রেফারি। গোল করে ২-০ করেন মেসি। ম্যাচ তখন সম্পূর্ণরূপে আর্জেন্তিনার হাতে। মনে করা হচ্ছিল, নেদারল্যান্ডসকে রীতিমতো উড়িয়ে সেমিফাইনালে যাবে আর্জেন্তিনা।


কিন্তু অন্যরকম কিছু ভেবেছিলেন উট ওয়েগহোর্স্ট। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতে তখন মিনিট সাতেক বাকি। স্টিভেন বার্গহুইসের পাস থেকে জোরাল হেডে ২-১ করেন ওয়েগহোর্স্ট। এরপর ম্যাচের একেবারে শেষ লগ্ন। নিজেদের বক্সের বাইরে অহেতুক ফাউল করেন পাজেল্লা। ফ্রি কিক দেন রেফারি। ইনজুরি টাইমের একেবারে শেষের দিকে সেই ফ্রি কিক থেকে ফের গোল করেন ওয়েগহোর্স্ট। ম্যাচ ২-২ হয়ে যায়।


৯০ মিনিটে ফয়সালা না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তবে অতিরিক্ত সময়ের দুই অর্ধেই কোনও দল কোনও গোল করতে পারেনি। একমাত্র এনজো ফার্নান্দেজের একটি শট পোস্টে লেগে ফেরে। উল্টে মাঠের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বেশ কয়েকবার বচসা, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ফুটবলাররা। হলুদ কার্ডের বন্যা বয়ে যায়। রেফারি আন্তোনিও মিগুয়্যেল মাতেও লাহোজ মেসিকেও হলুদ কার্ড দেখান। পাশাপাশি হলুদ কার্ড দেখায় পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন না আকুনা।


তবে টাইব্রেকারে নায়ক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। আর্জেন্তিনার কোপা আমেরিকা জয়ের নেপথ্যেও যাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। প্রথম শট নিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। ডাচ অধিনায়ক ভার্জিল ভ্যান ডাইকের শট শরীর শূন্যে ছুড়ে রুখে দেন মার্তিনেজ। আর্জেন্তিনার প্রথম শটে গোল করেন মেসি। ডাচদের দ্বিতীয় শটও রুখে দেন এমিলিয়ানো। স্টিফেন বারগুইসের শট বাঁচান তিনি। লিয়ান্দ্রো পারাদেস ২-০ করেন। একমাত্র এনজো ফার্নান্দেজ ছাড়া আর্জেন্তিনার বাকি চার শটেই গোল হতে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় মেসিদের।