কলকাতা: রাজ্যে ৫জি মোবাইল পরিষেবা চালু করার জন্য প্রয়োজন ১৫ লক্ষ টাওয়ারের। যার মধ্যে রয়েছে মাত্র দেড় লক্ষ টাওয়ার। নতুন করে বসাতে হবে আরও প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ টাওয়ার। সঙ্গে লাগবে কেবল। যার অনেকটাই হয়তো ভূগর্ভস্থ থাকবে। আর তার জন্য প্রয়োজন হবে যথেচ্ছ খোঁড়াখুঁড়ির। কিন্তু তাতেও ঝুঁকি কম নেই। কীরকম?
প্রথমত, খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে মাটির নীচে জলের পাইপ বা অন্য কোনও কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে পুরোমাত্রায়। পাশাপাশি গ্যাসের লাইন ফেটে আরও বড় বিপত্তির সম্ভাবনাও থাকে।
যে সমস্যা দূর করতে অভিনব প্রযুক্তি ব্যবহার করছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক। সোমবার রাজারহাটে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে কেন্দ্রীয় টেলিকমিউনিকেশন মন্ত্রক (Department Of Telecommunications) ও রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন দফতর (Department Of Information Technology and Electronis) আয়োজিত ওয়ার্কশপে যা বিশদে বুঝিয়ে দিলেন বিশেষজ্ঞরা।
সুগম সঞ্চার ও কল বিফোর ইউ ডিগ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে, মাটির নীচে কোথায় কী ওয়্যার রয়েছে। জলের লাইন হোক বা গ্যাস, বিদ্যুতের কেবল হোক বা ফোনের, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তা ধরা পড়বে অ্যাপে। সবচেয়ে বড় কথা, এলোপাথাড়ি খোঁড়াখুঁড়ি করার আগে, আগে থেকে দেখে নেওয়া যাবে কোথায় রয়েছে অপ্টিক্যাল ফাইবার, যার সঙ্গে সংযোগ করা যাবে ৫জি কেবলের। সেই মতো অঙ্ক কষে খননের কাজ করা সম্ভব হবে। তবে সংশ্লিষ্ট সমস্ত সংস্থাকে তাদের খননকার্যের বিবরণ জানাতে হবে অ্য়াপে।
পাশাপাশি পোর্টালে ও অ্যাপে থাকবে আরও অনেক তথ্য। যেমন কোন খুঁটি কাদের মালিকানাধীন। কোনটা বিদ্যুৎ দফতরের, কোনটা কর্পোরেশনের। পাশাপাশি, ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে টাওয়ার বসাতে এখন থেকে আর স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতিপত্র নিতে হবে না। পোর্টালে আবেদন করলেই হবে। টেলিকম সংস্থা ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিকের সহমতের ভিত্তিতে বসানো যাবে টাওয়ার।
কেন্দ্রের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজ্যের নীতি নির্ধারিত হবে। সূত্রের খবর, ১ মাসের মধ্যে রাজ্যের নীতি তৈরি হয়ে যেতে পারে। এ নিয়ে ওয়ার্কিং কমিটি তৈরির সুপারিশ করছেন কেন্দ্রীয় কর্তারা। জানানো হয়েছে, ১৪ রাজ্যে ইতিমধ্যেই ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়েছে। রাজ্যে ৫জির খরচ কীরকম হবে?
সূত্রের খবর, গোটা বাংলায় একই খরচ রাখার ব্যাপারে সচেষ্ট রাজ্য সরকার। টেলিকর্তারা জানিয়েছেন, ৪জির তুলনায় দশগুণ দ্রুত গতিতে ইন্টারনেট সার্ফ, ডাউনলোড ও আপলোড করা যাবে ৫জিতে। স্বাস্থ্যব্যবস্থা থেকে শুরু করে কৃষি, শিক্ষা থেকে শিল্প, সবেতেই রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়ে দেবে ৫জি পরিষেবা, দাবি বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন: নেই পর্যাপ্ত টাওয়ার, রাজ্যে ৫জি পরিষেবা চালু করার পথে অগ্নিপরীক্ষা