নয়াদিল্লি: আজ থেকে প্রায় ৭০-৮০ হাজার বছর আগে সূর্যের (Pilgrim of Sun) উদ্দেশে তীর্থে বেরিয়েছিল। এত দিনে পৃথিবীর কাছাকাছি পৌঁছল উজ্জ্বলতম ধূমকেতু লেনার্ড (Comet Leonard)। প্রতি সেকেন্ডে ৭১ কিলোমিটার গতিতে ছুটছে সেটি। রবিবার রাতে পৃথিবীর সবথেকে কাছাকাছি ছিল ধূমকেতু লেনার্ড, প্রায় ৩ কোটি ৫০ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। অর্থাৎ পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যেকার দূরত্ব থেকেও প্রায় ৩ হাজার ৭০০ গুন বেশি দূরে। মহাশূন্য থেকে সূর্যকে এক বার প্রদক্ষিণ করে ফিরে যেতে তার সময় লাগে প্রায় ৮০ হাজার বছর।


চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সি/২০২১ এএল ধূমকেতুটি প্রথম আবিষ্কার করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী জর্জ জে লেনার্ড। তাঁর নামানুসারেই ধূমকেতুটির নামকরণ হয়েছে লেনার্ড। তবে এই শেষ বার সৌরমণ্ডল দেখা যাচ্ছে তাকে। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার পর সেটি সৌরমণ্ডল (Solar System) থেকে মহাশূন্যে ছিটকে যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাই তার আর ফিরে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই।


বর্তমানে সৌরমণ্ডলে ৩ হাজার ৭০০ ধূমকেতু রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্রথম বার যখন ধূমকেতু লেনার্ডের দেখা মেলে, সেই সময় এনজিসি ৪৬৩১ ছায়াপথের মাঝামাঝি জায়গায় দেখা গিয়েছিল সেটিকে। ২০২২-এর ৩ জানুয়ারি সেটি সূর্যের সব থেকে কাছে পৌঁছবে। তার আগে ডিসেম্বর মাস জুড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেখা যেতে পারে ধূমকেতু লেনার্ডকে। পূর্ব আকাশে সেটির দেখা মিলবে। সূর্যোদয়ের আগে সেটিকে দেখা যেতে পারে। ১৪ ডিসেম্বরের পর সূর্যাস্তের পরও দেখা পাওয়া যেতে পারে ধূমকেতু লেনার্ডের। তবে ১৭ ডিসেম্বর সব থেকে ভাল ভাবে দেখা যেতে পারে ধূমকেতু লেনার্ডকে।



তবে দেখা মিললেও, কয়েক কোটি কিলোমিটার দূরত্বের জেরে চোখের সামনে দিয়ে হুশ করে ধূমকেতুকে বেরিয়ে যেতে দেখা যাবে না ধূমকেতু লেনার্ডকে। বরং টেলিস্কোপে দীর্ঘ ক্ষণ চোখ রাখলে একটু একটু করে এগোতে দেখা যাবে সেটিকে।


ধূমকেতু লেনার্ডকে কেন উজ্জ্বলতম বলা হচ্ছে, তার পিছনেও যুক্তি দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ৭০ হাজার বছর আগেও ধূমকেতু লেনার্ড এক বার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে থাকতে পারে। তার পর এত দিন সূর্যরশ্মির থেকে দূরে থাকায় তার উপর কার্বন ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন এবং কার্বন মনোক্সাইড ঠান্ডা হয়ে জমে গিয়েছিল। এখন ফের সূর্যরশ্মির আওতায় চলে আসায় সেগুলি ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হচ্ছে। তার জেরেই আরও উজ্জ্বল হয়ে ধরা দিচ্ছে ধূমকেতু লেনার্ড। তবে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) জানিয়েছে, ধীরে ধীরে ধূমকেতু লেনার্ডের উজ্জ্বলতা কমছে।