নিউইয়র্ক: নেট-গ্রহ আপাতত তোলপাড় হোয়াটসঅ্যাপের (Whatsapp) নতুন প্রাইভেসি পলিসিতে। জনপ্রিয় মেসেজিং সংস্থার থেকে সব তথ্য পাবে তাদের অধিগ্রহণ করে নেওয়া ফেসবুক (Facebook), এই খবর সামনে আসার পর থেকেই ব্যক্তি-তথ্য সুরক্ষিত থাকা নিয়ে আশঙ্কা সব মহলে। আর এই সময়েই বিকল্প হিসেবে সবার উপরে উঠে এসেছে সিগন্যাল (Signal) মেসেজিং অ্যাপ। টেসলা প্রধান এলন মাস্ক সহ প্রযুক্তিজগতের একাধিক ব্যক্তিত্বও সওয়াল করেছেন যে মেসেজিং অ্যাপ নিয়ে। জানেন কি, আপাতত যে সিগন্যাল মেনে চলার বার্তা প্রযুক্তিমহলে সেই অ্যাপ তৈরি করেছেন যিনি, তাঁর হাত ধরেই একদিন আত্মপ্রকাশ করেছিল হোয়াটসঅ্যাপ!


২০১৮ সালে মস্কি মার্লিনস্পাইককে নিয়ে সিগন্যাল তৈরি করেছেন ব্রায়ান অ্যাকটন (Brain Acton)। এই ব্রায়ানই ২০০৯ সালে জাঁ কমের সঙ্গে তৈরি করেছিলেন হোয়াটসঅ্যাপ। জাঁ-ব্রায়ানের তৈরি করা হোয়াটসঅ্যাপ জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছনোর পর ২০১৪ সালে যা অধিগ্রহণ করে নিয়েছিল ফেসবুক। যে অধিগ্রহণের ঠিক তিন বছর বাদে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন ব্রায়ান। কারণ, মার্ক জুকেরবার্গের সংস্থার হোয়াটসঅ্যাপকে বাণিজ্যিক কারণে ব্যবহারের ভাবনা। যার ধোরতর বিরোধী ছিলেন ব্রায়ান অ্যাকটন।

মার্কিন মুলুকের মিশিগানে জন্মানো ব্রায়ান অ্যাকটন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সের স্নাতক। ১৯৯২ সালে রকওয়েল ইন্টারন্যাশনাল বলে সংস্থায় সিস্টেম অ্যাডমিনিস্টেটর হিসেবে কর্মজীবন শুরু। তারপর অ্যাপেল ও অ্যাডব সংস্থায় প্রোডাক্ট টেস্টার হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৬ সালে ইয়াহুতে যোগ দেন। যেখানে কাজ করার মাঝে কমের সঙ্গে বন্ধুত্ব। চমকপ্রদ বিষয় হল, ব্রায়ান ও বন্ধু জাঁ দুজনেই ফেসবুকে কাজ করার জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু বাতিল হয়েছিল দুজনেরই আবেদন। তারপর দুজনে হোয়াটসঅ্যাপ শুরুর পর ফের একসঙ্গে কাজ শুরু করেন। ফেসবুক বিপুল অর্থে তাদের অধিগ্রহণ করার পরও দারুণভাবে চলছিল কাজ। কিন্তু ব্যক্তি-তথ্য পরিসর নিয়ে পদক্ষেপের জেরে ব্রায়ান ছেড়ে দেন কাজ।

পদত্যাগের পরের বছরই নতুন মেসেজিং অ্যাপ তৈরি। আপাতত যে অ্যাপের জনপ্রিয়তার কাছেই হাবুডুবু খাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। সিগন্যাল অ্যাপের এই জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ, তাদের প্ল্যাটফর্মে যারা রয়েছেন তাদের তথ্য কোনওভাবে নেয় না সংস্থা। দেখায় না কোনও বিজ্ঞাপনও। তবে জনপ্রিয়তার শিখরে ওঠার তাদের আসল কারণ, এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন বজায় রাখা। অর্থাৎ, দুই ব্যক্তির মধ্যে আদান-প্রদান হওয়া যাবতীয় তথ্য তাদের মধ্যেই রাখা। যে কারণেই প্লে-স্টোরে ফ্রি-অ্যাপের ক্যাটেগরিতে আপাতত সবার উপরে পৌঁছে গিয়েছে সিগন্যাল। অপর মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামও (Telegram) যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়ে গিয়েছে তথ্য-সুরক্ষিত রাখার সুবাদে। ফ্রি-অ্যাপ ক্যাটেগরিতে তারা আপাতত রয়েছে দুই নম্বরে।