স্পাইওয়্যার এই একটা শব্দই রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু সত্যি বলতে কী, পেগাসাসের মতো খরচসাপেক্ষ স্পাইওয়্যার দিয়ে সাধারণ লোকের ফোন হ্যাক করার সম্ভবনা কমই, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে অন্যের সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে, কিংবা হোয়াটসঅ্যাপেপ মেসেজ পড়ে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটতেই পারে, ঘটছেও প্রায়ই। স্মার্ট ফোনের যুগে আমাদের সকলের মুঠো ফোনেই থাকে যাবতীয় তথ্য। ই-মেল থেকে অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স সংক্রান্ত তথ্য, ডেবিট কার্ডের পিনও সেভ করে রাখার অভ্যেস অনেকের। তাই ফোন বেহাত হয়ে গেলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার পরিস্থিতি হয়। তাছাড়া ব্যক্তিগত চ্যাট লিক হয়ে গিয়ে নিজস্ব ছবি-ভিডিও-ও জমসমক্ষে চলে আসার আশঙ্কাও এখন উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে চললেন এড়িয়ে চলতে পারেন হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা। এই সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেন সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত (Founder / Director : Indian School of Anti hacking)। 





  • স্পাইওয়্যার নিয়ে সাধারণ মানুষের ভয়ের কারণ আছে কি?

    আপনি কি যে কারও পাঠানো লিঙ্কে ক্লিক করেন ?  কোনও অচেনা নম্বর থেকে আসা লিঙ্ক, ছবি বা পিডিএফ ডাউনলোড করেন, যাচাই না করেই ? তবে আপনার ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে কিন্তু। কারণ নানা লোক গুড মর্নিং, ডুড নাইট মেসেজ বা লোভনীয় অফারের কোনও লিঙ্ক পাঠিয়ে তার মারফতই ফোনে ঢুকিয়ে দেয় স্পাইওয়্যার। তাই লোভে পড়ে কোনও লিঙ্কে ক্লিক করবেন না। অ্যাপ নামাবেন না। 


 



  •      কীভাবে হ্যাক হতে পারে ফোন ? 

    নানা উপায়েই আপনার ফোনে নজর রাখতে পারে অন্য কেউ। ধরুন, আপনি একটা অ্যাপ ইনস্টল করলেন, যা আপনার কনট্যাক্ট, অ্যালবাম, মাইক্রোফোন, ক্যামেরা, ইত্যাদি ব্যবহারের অনুমতি চাইল। সেই অনুমতি অনেকেই দিয়ে দেন চোখ-কান বুজেই। কিন্তু এতে করে আপনার মোবাইনের প্রতিটি ফোল্ডারেই নজর রাখার লাইলেন্স আপনি নিজের হাতেই দিয়ে দিলেন কোনও অ্যাপকে। আপনি দেখে নিন, সত্যিই কি ওই অ্যাপকে এতটা অ্যাকসেস দেওয়ার প্রয়োজন আছে ? 
     আপনি অকারণে টিম ভিউয়ার বা এনি ডেস্কের মতো অ্যাপ মোবাইলে নামাবেন না। এতে করে অন্য কেউ আপনার সেটে ঢুকে দেখে নিতে পারে সব কিছু। তবে, সেক্ষেত্রে রিমোট সিস্টেমটিকে আপনাকেই অনুমতি দিতে হবে। প্রযুক্তিতে অপটু হলে, অনেকেই ভুলবশত অনুমতি দিয়ে ফেলেন। 


 



  • কোন কোন তথ্য মেসেজ, হোয়াটস অ্যাপে শেয়ার করব না?

    এমন অনেক খবর, আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পেয়ে থাকি যা সত্যি কি না জানি না। কিন্তু না-বুঝেই শেয়ার করে ফেলি। নিজেরা ক্লিক করে দেখি, আবার অন্যদেরও ফরওয়ার্ড করি। কিংবা এই লিঙ্কে ক্লিক করুন, আপনার ভাগ্য খুলে যাবে - এই জাতীয় মেসেজে ক্লিক করে ফেলি। যা ভয়ানক হতে পারে। কোনও খবর বা মেসেজ ফরওয়ার্ড করার আগে আপনি দেখে নিতে পারেন, তথ্যগতভাবে তা ঠিক কিনা। ব্যবহার করতে পারেন, গুগল ফ্যাক্ট চেকার https://toolbox.google.com/factcheck/explorer


 



  • এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন কি সত‍্যিই ব‍্যক্তিগত তথ‍্য ব‍্যক্তিগত রাখে?

    এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশনের অর্থ, আপনার মেসেজ বা চ্যাট তৃতীয় কেউ পড়তে পারবেন না। কিন্তু যা গুগল বা অ্যাপল ক্লাউডে সেভ হয়ে রইল, তা তো যে কোনও সময়ই পাওয়া সম্ভব। মনে রাখতে হবে, ক্লাউডে সেভ করা তথ্য কিন্তু এনক্রিপ্টেড নয়। 


 



  • হোয়াটস অ্যাপ বা ফেসবুকের ডিলিট করা মেসেজ কি হ‍্যাকাররা পেতে পারে?

    অবশ্যই হ্যাকারদের পক্ষে তা পাওয়া সম্ভব, যদি তা ক্লাউডে সেভ করা থাকে।


 



  • আমরা অনেক সময়ই অচেনা অ্যাপ ডাউনলোড করি, কখনও ফটো এডিটিং বা ই-শপিং অ্যাপ। বিপজ্জনক কি?

    অজানা, অচেনা, কম পরিচিত অ্যাপ ডাউনলোড করা সত্যিই বিপজ্জনক। কারণ, বেশিরভাগ অ্যাপই আপনার ক্যামেরা, ফটো গ্যালারি, কনট্যাক্ট লিস্টের অ্যাকসেস চায়। সবসময় প্লে-স্টোর থেকেই অ্যাপ নামানো ভাল। আর ডাউনলোডের আগে ভাল করে রিভিউ পড়ে নেওয়া উচিত। এসএমএস বা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো অ্যাপলিঙ্ক ক্লিক করবেন না।