নয়াদিল্লি: টুইটার নিয়ে নানা মহলের নানা ক্ষোভ। কেউ বলেন, এই অতি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তুমুল বৈষম্য করে, আবার কেউ বলেন, প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি না দিয়ে এটি নিরপরাধদের প্রতি কঠোর হয়। ভারতেও এ নিয়ে নানা সময় অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে, বহুবার দাবি করা হয়েছে, ভারত সরকার নিজস্ব কোনও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম চালু করুক, ১৩০ কোটি এই দেশ মুখ ফেরালে টুইটারের রমরমা বিরাট ধাক্কা খাবে।
এবার সেই দাবি মেটাতে চলে এল নয়া সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কু। আচারে বিচারে খাঁটি ভারতীয়, জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তিনিও অবশ্য টুইট করেই লোকজনকে কু-এ যোগ দিতে বলেছেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে টুইটারের কৃষক আন্দোলন সংক্রান্ত সেন্সরশিপ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তুমুল ঝঞ্ঝাট চলছে। নির্দিষ্ট কিছু নথি ও অ্যাকাউন্ট না সরালে টুইটারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে কেন্দ্র। সরকারের বক্তব্য, হাজারের বেশি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে মিথ্যে তথ্য প্রচার করা চলছে। এছাড়াও বিজেপি সমর্থকরা একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, নিয়ম লঙ্ঘন করার বাহানায় টুইটারে তাঁদের বক্তব্য চেপে দেওয়া হচ্ছে অথচ প্রতিদ্বন্দ্বীদের অনেক বেশি আপত্তিকর টুইটও মুছতে ভুলে যাচ্ছে টুইটার। গত বছর মার্চেই বাজারে আসে টুইটারের মতই মাইক্রোব্লগিং সাইট কু, এতে ইংরেজি ছাড়াও হিন্দি, কন্নড়, মরাঠি, তামিল ও তেলুগুর মত ভারতীয় ভাষায় টুইট করা যায়। পাওয়া যায় অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএসে, লেখা যায় ৪০০ ক্যারেক্টার, তারই নাম কু। কেন্দ্রীয় সরকারের আত্মনির্ভর ভারত অ্যাপ চ্যালেঞ্জও জিতে নেয় এটি। টুইটারের মত কু-ও ইউজারদের ফলো, আনফলো করার সুবিধে দেয়। টেক্সটে মেসেজ লেখার পাশাপাশি রেকর্ড করা, শেয়ার করা যায় অডিও বা ভিডিও ফরম্যাটে।
টুইটারের সঙ্গে ঝামেলার জেরেই সম্ভবত কু-কে তুলে ধরতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় রেল ও বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল টুইট করে বলেছেন, আমি এখন কু-তে। রিয়্যাল টাইম, এক্সাইটিং আর এক্সক্লুসিভ আপডেটের জন্য এই ভারতীয় মাইক্রো ব্লগিং প্ল্যাটফর্মে এসে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আসুন কু-তে এসে আমাদের চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা বিনিময় করি।
গোয়েল ছাড়াও কু-তে রয়েছেন তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। এছাড়া ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস, ইন্ডিয়া পোস্ট, মাইগভইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার সহ নানা কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ও দফতরের অ্যাকাউন্ট রয়েছে এতে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর মন কি বাত রেডিও অনুষ্ঠানেও কু অ্যাপের কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রীর বহু ফলোয়ার অল্পদিন আগে যোগ দিয়েছেন কু-তে। কু ছাড়াও টুইটারের আর একটি ভারতীয় বিকল্প হল টুটার নামে একটি অ্যাপ, গত বছর এটি বেশ নজর কাড়ে। কিন্তু জনপ্রিয়তার মানদণ্ডে এখনও পর্যন্ত এরা টুইটারের তেমন প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেনি।